ইনডেমনিটি অ্যাক্ট কি

ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স ১৯৭৫ ও ইনডেমনিটি অ্যাক্ট ১৯৭৯

 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করেছিল কতিপয় বিপথগামী সেনা সদস্যরা।

 

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রক্ষায় আইন প্রণয়ন-

ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স, 1975 (Indemnity Ordinance, 1975) বাংলাদেশের একটি বিতর্কিত আইন। এই আইনটি প্রণয়ন করেছিলেন বাংলাদেশের তৎকালীন সামরিক সরকার ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭৫ সালে।

 

এই আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্যে-

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আইনি নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। এই আইন প্রণয়নের ফলে ঘাতকরা যে কোন আইনি পদক্ষেপ থেকে মুক্ত ছিল। শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের অন্যান্য জীবিত সদস্যরা এই আইনের কারণে ঘাতকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করতে পারেনি। ঘাতকরা তাদের কৃতকর্মের কোন শাস্তি পাওয়া ছাড়াই বাংলাদেশে স্বাধীনভাবে বসবাস করতে সক্ষম হয়েছে। কেউ কেউ বাংলাদেশ সরকারের কূটনীতিক হিসেবেও নিযুক্ত হন। কর্নেল খন্দকার আবদুর রশীদ এবং সৈয়দ ফারুক রহমান সহ দুই ঘাতক, টিভি সাক্ষাৎকারে শেখ মুজিবকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। আত্মস্বীকৃত খুনিরা নিয়মিত বিদেশ ভ্রমণ করত।

 

আইনে রূপান্তর

ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স, 1975 অধ্যাদেশটি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (BNP) ১৯৭৯ সালের ৯ জুলাই ইনডেমনিটি অ্যাক্ট, ১৯৭৯ (Indemnity Act, 1979) -এর মাধ্যমে সংসদের আইনে রূপান্তরিত করে। এই আইনকে “বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কালো আইন” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

 

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার শুরু-

১৯৯৬ সালে শেখ মুজিবের জীবিত কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ইনডেমনিটি (রিপিল) অ্যাক্ট, ১৯৯৬-এর মাধ্যমে উক্ত বিতর্কিত আইনটি বাতিল করা হয়।

 

১৯৭৫ সালে অধ্যাদেশটি জারি হওয়ার ২১ বছর পর, ইনডেমনিটি (রিপিল) অ্যাক্ট, ১৯৯৬ এর মাধ্যমে আইনটি বাতিল করা হয়েছিল যা ১২ নভেম্বর ১৯৯৬ সালে শাহাবুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে প্রথম মেয়াদে সংসদে পাস হয়েছিল। এই ১৯৯৬ সালের বাতিলকারী আইন শেখ মুজিবের হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের বাংলাদেশী আইনের অধীনে বিচারের দরজা খুলে দেয়।

 

লেখক-

এডভোকেট মুহাম্মদ মহীউদ্দীন

01711068609 / 01540105088

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *