নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলার দরখাস্তের নমুনা

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলার দরখাস্তের নমুনা

 

মোকামঃ বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-২, ঢাকা ।

 পিটিশন মামলা নং- ১২৬/২০২৪

 ধারা: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ১১(গ) ধারা ।

 

শিরিন আক্তার, স্বামী- সালাউদ্দিন, বাসা নং-৪২,

ব্লক-এ, রোড নং- ৬, প্রিয়াংকা হাউজিং সোসাইটি, থানা- শাহআলী, ঢাকা

……………… অভিযোগকারীনি ।

 

বনাম

 

সালাহউদ্দিন, পিতা- মানিক মাঝি, জনতাহাউজিং,

রোড নং-৩, ব্লক-এ, মিরপুর-১, থানামিরপুর মডেল, ঢাকা ।

……………… আসামী ।

 

সাক্ষীদের নাম ও ঠিকানা

 

১। বাদীনি নিজে

২। রফিকা বিবি, স্বামী- মৃত মাহমুদ আলী

৩। নুরুল ইসলাম পাটোয়ারী, পিতা- মোহাম্মদ পাটোয়ারী,

৪। সূর্য বানু, স্বামী- ইউসুফ আলী, সর্ব সাং-বাসা নং- ৪২, রোড নং-৬,  ব্লক-এ, প্রিয়াঙ্কা হাউজিং, শাহ আলী, ঢাকা।

 

মামলার ঘটনার স্থান: বাসা নং-১৮, রোড নং-৩, ব্লক-এ, তুরাগ সিটি, শাহ আলী, ঢাকা।

(আসামীর ভাড়া বাসা)।

 

ঘটনার তারিখ ও সময়: ২৯/১২/২০১৫ খ্রি: তারিখ বিকাল আনুমানিক ৪:০০ ঘটিকা।

 

অভিযোগকারিনী পক্ষে বিনীত নিবেদন এই যে,

 

১। অভিযোগকারিনী একজন সহজ, সরল, ধর্মপ্রাণ, আইন মান্যকারী মহিলা বটে। অপর পক্ষে আসামী একজন যৌতুক লোভী, নারী নির্যাতনকারী, যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক ভাবে স্ত্রীকে নির্যাতন করিয়া যৌতুক আদায় করাইতাহার নেশা ও পেশা।

 

২। বিগত ২০/১১/২০০৩ খ্রি: সালে ইসলামিক শরা শরীয়ত মোতাবেক ১,০০,০০১/- (এক লক্ষ এক) টাকা দেন মোহর ধার্য্য করিয়া আসামী বাদীনিকে বিবাহ করিয়া তাহার বাসায় তুলিয়া নিয়া স্বামী-স্ত্রী হিসেবে জীবন যাপন করেন। তাহাদের দাম্পত্য জীবনের ফলস্বরূপ ০২টি সন্তান, যাহাদের নাম- সাদিয়া আক্তার (৮) ও ১টি পুত্র সন্তান জুবায়েদ (০৫) এর জন্ম হয়।

 

৩। আসামী প্রায়ই ব্যবসা করার জন্য বাদীনির নিকট ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা যৌতুক দাবি করিয়া আসিতেছিল। বাদীনি তাহাকে জানায় যে, তাহার পিতা অসুস্থ। তাহার পক্ষে তাহার পিতার বাড়ী হইতে ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা যৌতুক আনিয়া দেওয়া সম্ভব নয়। বাদিনীর এহেন কথায় আসামী প্রায়ই তাহাকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করিত। বাদীনি সন্তান সন্ততির মুখের দিকে তাকাইয়া ভবিষ্যৎ সুখের আশায় ও লোক লজ্জার ভয়ে আসামীর সকল অত্যাচার মুখ বুঝিয়া সহ্য করিয়া রহিয়াছে।

 

৪। বিগত ২৯/১২/২০১৫ খ্রি: তারিখে বিকাল অনুমান ৪:০০ ঘটিকার সময় আসামী পুনরায় বাদীনির নিকট ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা যৌতুক দাবী করেন। বাদিনী যৌতুক দিতে পারিবে না বলিয়া অস্বীকার করিলে আসামী বাদীনিকে চুলের মুঠি ধরিয়া বাসার ফ্লোরে টানা হেচড়া করে এবং কিল ঘুষি মারিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা ফুলা জখম করে এবং মেয়ে ও ছেলেকে রাখিয়া এক কাপড়ে বাসা হইতে বাহির করিয়া দেন। বাদীনি অজ্ঞান হইয়া রুমের বাহিরে পড়িয়া থাকিলে সাক্ষীগণ তাহার পিতা মাতাকে খবর দেন। তাহার পিতা ও খালু আসিয়া তাহাকে প্রথমে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান এবং বিগত ০২/০১/২০১৬ খ্রি: তারিখ সংশ্লিষ্ট শাহআলী থানায় মামলা করিতে যান। থানা কর্তৃপক্ষ মামলা না নিয়া একটি সাধারণ ডাইরী এন্ট্রি করেন যাহার নং-৬২, তাং ০২/০১/২০১৬ খ্রিঃ ।

 

৫। বাদীনির পিতা, মাতা ও আত্মীয়-স্বজন আসামী ও তাহার পিতা-মাতার সাথে আলাপ আলোচনা করিয়া বিষয়টি আপোষ মিমাংসা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু আসামী সাফ জানায় যে, তিনি উক্ত দাবীকৃত যৌতুকের টাকা ছাড়া কোন ক্রমেই বাদীনির সাথে সংসার করিবেন না।।

 

৬। আসামীর উপরোক্ত মারধর করার কারণে বাদীনি শারীরিক ভাবে পুনরায় অসুস্থ হইয়া পড়িলে বিগত ১০/০১/২০১৬ খ্রি: তারিখ কবির হেলথ কেয়ারে চিকিৎসা করান। শারীরিক ভাবে সুস্থ হওয়ার পরে বিজ্ঞ আদালতে আসিয়া মামলা দায়ের করিতে সামান্য বিলম্ব হইল ।

 

অতএব প্রার্থনা এই যে, মাননীয় আদালত দয়া প্রকাশে ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে আসামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ১১ (গ) ধারার অপরাধ আমলে নিয়া ন্যায়বিচার করিতে মহোদয়ের মর্জি হয়।

 

ইতি, তারিখ: ৩১/০৩/২০১৬ খ্রিঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *