নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ১১(গ)/৩০ ধারায় দরখাস্ত।
মোকামঃ নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল- ২, ঢাকা।
নারী শিশু পিটিশন মামলা নং- ১৩৮/২০২৪
ধারাঃ নারী শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ ও সংশোধনী ২০০৩ এর ১১(গ)/৩০।
মোসাঃ আমেনা বেগম (২৩),
স্বামী-মোঃ স্বপন
বর্তমান সাং-হাজীনগর, থানা-ডেমরা, জেলা-ঢাকা।
স্থায়ী-ইব্রাহিমপুর, জেলা-চাঁদপুর।
—————-বাদিনী।
-বনাম-
১। মোঃ স্বপন (২৭),
পিতা-মৃত মোঃ আব্দুস সোবাহান
বর্তমান-ষ্টাফ কোয়ার্টার, হাজীনগর,
থানা-ডেমরা, জেলা-ঢাকা।
২। মনির হোসেন (৩০),
পিতা-মৃত মোঃ আব্দুস সোবাহান
৩। স্বপ্না বেগম (৫০)
স্বামী-মৃত আব্দুস সোবাহান
৪। সনি আক্তার (১৯)
৫। কালাম (৩৫)
উভয় পিতা- মজিবর
৬। মফিজ (৪২) পিতা-খান
সর্ব সাং-ষ্টাফ কোয়ার্টার, হাজীনগর, থানা-ডেমরা, জেলা-ঢাকা।
স্থায়ী ঠিকানা-উত্তর আলীপুর, কড়া মিয়ার হাট, থানা-দাগনভূঞা, জেলা-ফেনী।
—————-আসামীগণ।
স্বাক্ষীগণের নাম ও ঠিকানাঃ
১। রূপা, পিতা-আব্দুল হক বরকন্দাজ
২। আব্দুর রশিদ (২২), পিতা-আবদুল হক বরকন্দাজ
৩। মোঃ দুলাল, পিতা- আঃ মোমেন
সর্ব সাং- হাজীনগর, থানা- ডেমরা, ঢাকা।
ঘটনার স্থানঃ ষ্টাফ কোয়ার্টার, হাজী নগর, থানা- ডেমরা,
জেলা-ঢাকা, আসামীগণের বাসা।
ঘটনার তারিখঃ ১৯/০৭/২০১২ ইং।
ঘটনার সময়ঃ রাত্র ৮.০০ ঘটিকা।
বাদিনী পক্ষে নিবেদন এই যে,
১। বাদীনী সঃ, সহজ-সরল, শান্তিপ্রিয় ও স্বামী ভক্ত, আইনের প্রতি পূর্ণরূপে শ্রদ্ধাশীল, মুসলিম নারী হইতেছেন বটে। অপরপক্ষে আসামীগণ পরবৃত্ত লোভী, হারমদ, মায়ামমতাহীন, যৌতুক দাবীকারী, নির্যাতনকারী এবং আইনের প্রতি কোনরূপে শ্রদ্ধাশীল নন।
২। বিগত ১৬/১০/২০০৭ইং তারিখ ৭০,০০০/- (সত্তুর হাজার) টাকা দেনমোহন ধার্য্যে রেজিষ্ট্রি কাবিন নামা মূলে ১নং আসামী মোঃ স্বপন, পিতা-মৃত আব্দুস সোবাহান, সাং- উত্তর আলীপুর, কড়ামিয়ার হাট, থানা-দাগনভূঞা, জেলা-ফেনী এর সহিত মুসলিম আইন ও শরাশরিয়ত মোতাবেক বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিবাহ সম্পন্নের পর বাদী ও ১নং আসামী বাদিনীর পিতার গৃহে দাম্পত্য জীবন শুরু করে। ১নং আসামী বাদিনীকে নিজের বাসায় তুলিয়া নিবে নিচ্ছে করিয়া বিবাহের ৬ মাস পর একদিন ১নং আসামী বাদিনীকে তাহাদের বাসায় ডাকিয়া নেয়। বাদিনী আসামীগণের বাসায় গেলে ১-৬ নং আসামী বাদিনীর কাছে ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা যৌতুক দাবী করে এবং ১নং আসামীকে ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা যৌতুক না দিলে বাদিনীকে আসামীদের সংসারে তুলে নিবেনা বলে সাফ জানাইয়া দিলে বাদিনীর পিতা ১নং আসামীকে কোন টাকা পয়সা দিতে পারিবে না বাদিনী বলিলে ১নং আসামী ও ৩নং আসামী বাদিনীকে এলোপাতারী মারধর করে। বিষয়টি এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বার অবগত হইয়া তাহারা স্ব-উদ্যোগে বিচার সালিশ করেন। উক্ত বিচার সালিশে আসামীগণ বাদিনীকে সংসারে স্থান দিবেন এবং আর যৌতুক দাবী করিবেন না ও নির্যাতন করিবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তারপর ও ১নং আসামী বাদিনীকে সংসারে তুলে নেন নাই। ইতিমধ্যে ইমরান নামের একটি পুত্র সন্তান জন্ম লাভ করে, তাহার বয়স এখন দেড় বৎসর। এই সন্তানটি গর্ভে আসার পরও ৩নং আসামী অর্থাৎ বাদিনীর শ্বাশুড়ী সন্তান নষ্ট করার জন্য বাদিনীকে অনেক নির্যাতন করে। দুই বৎসর পর ১নং আসামী বাদিনীকে সংসারে তুলে নেয়ার পর হইতে পেটপুরে কোন দিন খাবার পর্যন্ত দেই নি, এমনকি শিশু বাচ্চারও সঠিকভাবে খোরপোষ দেয় নাই।
৩। ঘটনার তারিখ ১৯/০৭/১২ইং রাত্র ৮.০০ ঘটিকার সময় সকল আসামীর উপস্থিতিতে ১নং আসামী বাদিনীর নিকট ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা যৌতুক দাবী করে এবং দুই দিনের মধ্যে তাহার পিতার নিকট হইতে উক্ত ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা আনিয়া না দিলে বাদিনীকে জীবনে শেষ করিয়া ফেলার হুমকি দিলে বাদিনী তাহার পিতার নিকট হইতে যৌতুকের টাকা আনিয়া দিতে পারিবেনা বলা মাত্র ১নং আসামী বাদিনীর পেটে লাথি মেরে ঘরের মেঝেতে ফেলে দিয়ে বুকের উপর চেপে বসে গলা টিপিয়া ধরে, ২নং আসামী বাদিনীর পেটে অনবরত লাথি মারিতে থাকে এবং ৩নং আসামী ছাতার বাট দ্বারা বাদিনীর পায়ে পিটাতে থাকে, ৪নং আসামী স্যান্ডেল দ্বারা মাথায় আঘাত করে, এতে বাদিনী গুরুতর আহত হইয়া কাতরাইতে থাকিলে ৫ ও ৬ নং আসামী বাদিনীকে টানতে- টানতে হেচড়াইতে-হেচড়াইতে রাস্তার উপরে ফেলে দিলে বাদিনীর বোন ১নং স্বাক্ষী রূপা ও ভাই ২নং স্বাক্ষী রশিদ লোক মারফত বাদিনীর নির্যাতনের খবর পাইয়া বাদিনীকে রাস্তার উপর হইতে উদ্ধার করে পিতার বাসায় লইয়া আসে এবং ডাক্তার খানায় লইয়া গিয়া চিকিৎসা করান।
৪। ঘটনার বিষয়ে ডেমরা থানায় মামলা করিতে গেলে থানা পুলিশ বিষয়টি স্বামী-স্ত্রীর বিধায় মামলা লইতে অস্বীকার করে এবং আপোষ মিমাংসা করে ফেলার পরামর্শ দিলে অত্র বিজ্ঞ আদালতে অত্র মামলা দায়েরের কারণ উদ্ভব হয়।
৫। মামলার বিষয়টি এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ মিমাংসা করিয়া দিতে চেষ্টা করিয়া ব্যর্থ হয়, মিমাংসার অপেক্ষায় অত্র মামলা দায়ের করিতে বিলম্ব হইল।
অতএব, বিনীত প্রার্থনা এই যে, বর্ণিত অবস্থা ও পরিস্থিতির আলোকে বাদীর মামলা আমলে লইয়া আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করিয়া ধৃত করতঃ জেল হাজতে আটক রাখিয়া সাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হুজুরের মর্জি হয়। এবং হুজুরাদালতের মহানুভবতার জন্য বাদী পক্ষ চিরকৃতজ্ঞ থাকিবে।
ইতি তাং
সত্যপাঠ
অত্র দরখাস্তের যাবতীয় বর্ণনা আমার জ্ঞান ও বিশ্বাস মতে সত্য স্বীকারে আইনজীবীর সেরেস্তায় বসিয়া নিজ নাম সহি সম্পাদন করিলাম।
———————–
সত্যপাঠকারীর স্বাক্ষর