হাই কমিশন এবং দূতাবাসের মধ্যে পার্থক্য 

হাই কমিশন এবং দূতাবাসের মধ্যে পার্থক্য (High commission versus Embassy)

 

হাইকমিশন কি:

হাই কমিশন (High Commission) হল একটি কূটনৈতিক মিশন যা মূলত ব্রিটিশ কমনওয়েলথের সদস্যদের দ্বারা নিযুক্ত করা হয়। এটি কমনওয়েলথ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কূটনৈতিক মিশন বর্ণনা করে যা একইভাবে অন্যান্য কমনওয়েলথ সদস্য রাষ্ট্রে অবস্থিত।

 

কমনওয়েলথ: একসময় যেই দেশগুলি যুক্তরাজ্যের উপনিবেশ (Colony) ছিল সেই দেশগুলি নিজেদের মধ্যে খেলাধুলা, কূটনীতি, সাধারণ প্রতিরক্ষা, অর্থনৈতিক ঐক্য এবং সামরিক সহযোগিতা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে এই কমনওয়েলথ সংস্থাটি তৈরী করা হয়েছিল।

 

দূতাবাস কি:

দূতাবাস হল একটি কূটনৈতিক মিশন যা ব্রিটিশ কমনওয়েলথের বাইরের দেশগুলোর মধ্যে অবস্থিত। এটি কমনওয়েলথের সদস্যের অন্তর্গত হতে পারে বা নাও হতে পারে। অনেক সময়, এটিকে কেবল একটি বিদেশী মিশন হিসাবে উল্লেখ করা হয়।

 

উদ্দেশ্য:

হাই কমিশন এবং এম্বাসি উভয়ের উদ্দেশ্যে একই-

(১) প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল এটি সেইসব দেশে থাকা নাগরিকদের যত্ন নেওয়া এবং

(২) তাদের দেশীয় পররাষ্ট্রনীতি অন্যের কাছে উপস্থাপন করা।

 

হাই কমিশন এবং দূতাবাসের মধ্যে পার্থক্য:

হাই কমিশন এবং দূতাবাস উভয়ের উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম মূলত একই রকম হলেও এদের মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। যথা:

 

হাই কমিশন (High Commission) ও দূতাবাস (Embassy) এর পার্থক্য:

(১) স্থানভেদে পার্থক্য-

(ক) হাই কমিশন কমনওয়েলথভূক্ত দেশগুলো মধ্যে স্থাপিত।

(খ) দূতাবাস কমনওয়েলথের বাইরের দেশগুলোর মধ্যে স্থাপিত।

 

(২) নামকরণের ক্ষেত্রে-

(ক) হাই কমিশনের প্রধানকে হাই কমিশনার বলা হয়।

(খ) দূতাবাসের প্রধানকে রাষ্ট্রদূত বলা হয়।

 

(৩) সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে-

(ক) হাই কমিশন তার নিজের দেশগুলি ছাড়াও অন্যান্য দেশের সদস্যদের সেবা দিতে পারে।

(খ) দূতাবাস শুধু তার দেশের নাগরিককে সেবা দিতে পারে।

 

(৪) অবস্থানভেদে-

(ক) হাই কমিশন শুধুমাত্র অন্য কমনওয়েলথভূক্ত দেশের রাজধানী শহরে থাকে।

(খ) দূতাবাস যেকোন দেশের রাজধানী শহরে থাকে।

 

(৫) সদস্য রাষ্ট্র-

(ক) কমনওয়েলথ সদস্য রাষ্ট্র রয়েছে প্রায় ৫৩ টি।

(খ) কমনওয়েলথ সদস্য নয় এমন রাষ্ট্র ২০০ টিরও বেশি।

 

(৬) কার্যপরিধি-

(ক) হাই কমিশন ব্যবসা, বাণিজ্যিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ছাড়াও অন্যান্য স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করে।

(খ) দূতাবাস তার নিজ দেশ ও আয়োজক দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে।

 

(৭) উদাহরণ-

(ক) কানাডায় কেনিয়ার কূটনৈতিক মিশনকে হাই কমিশন বলা হয় কারণ উভয়েই ব্রিটিশ কমনওয়েলথের সদস্য।

(খ) আমেরিকান কূটনৈতিক মিশনকে আমেরিকান দূতাবাস বলা হয়। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটিশ কমনওয়েলথের সদস্য নয় যদিও আয়োজক দেশ বাংলাদেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *