আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কি, বাংলাদেশে কবে গঠিত হয় এবং বর্তমান পরিস্থিতি ইত্যাদি বিষয় জানা যাবে এই আর্টিকেলে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ (International Crimes):
যে অপরাধসমূহ আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে গুরুতর অপরাধ এবং যেগুলো আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা এবং মানবতার প্রতি হুমকি স্বরূপ।
আন্তর্জাতিক অপরাধসমূহ-
আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী নিম্নলিখিত ৪ ধরণের অপরাধ আন্তর্জাতিক অপরাধ হিসাবে গন্য-
(১) গণহত্যা (Genocide)-
জাতিগত, ধর্মীয় কিংবা জাতীয় গোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস করার জন্য যে অপরাধ সংঘটিত হয় তাকে গণহত্যা বলা হয়।
উদাহরণ: ১৯৯৪ সালে সংঘটিত রুয়ান্ডার গণহত্যা (১৯৯৪), নাৎসি জার্মানির ইহুদি নিধন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত গনহত্যা, ২০২৪ সালে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে সংঘটিত গনহত্যা।
(২) যুদ্ধাপরাধ (War Crimes)-
যুদ্ধের সময় আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে সংঘটিত অপরাধসমূহ যুদ্ধাপরাধ হিসাবে গন্য। যথা- বন্দিদের উপর নির্যাতন, বেসামরিক লোকদের হত্যা করা, হাসপাতাল কিংবা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ ইত্যাদি।
(৩) মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ (Crimes Against Humanity):
বিশৃংখলভাবে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে আক্রমণ, যথা খুন, ধর্ষণ, নির্যাতন, দাসত্ব, জোরপূর্বক স্থানান্তর ইত্যাদি।
(৪) আগ্রাসনের অপরাধ (Crime of Aggression)-
এক দেশ কর্তৃক অন্য দেশের সার্বভৌমত্ব কিংবা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে সামরিক হামলা।
বিচারের আদালতসমূহ-
আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার করার জন্য যোগ্য আদালত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (International Criminal Court / ICC) এবং এই অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনালসমূহ।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-
যে দেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ সংঘটিত হয় সেই দেশে উক্ত অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। উক্ত দেশে ইতিপূর্বে আইন না থাকলে নতুন আইন প্রণয়ন করে সেই আইনের অধীনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়।
প্রথম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-
নুরেমবার্গের আন্তর্জাতিক সামরিক ট্রাইব্যুনাল ছিল আন্তর্জাতিক অপরাধের আইন প্রয়োগকারী প্রথম আদালত।
বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-
বাংলাদেশে সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচারের জন্য “আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনাল) আইন ১৯৭৩” The International Crimes (Tribunals) Act, 1973 ( ACT NO. XIX OF 1973) প্রণয়ন করা হয়। অতঃপর উক্ত আইনের অধীন বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকার্য পুরাতন হাইকোর্ট ভবনে অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা-
“আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনাল) আইন ১৯৭৩” এর ৬ ধারার বিধান মোতাবেক তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়।
ট্রাইব্যুনাল-১-
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১, ২৫/০৩/২০১০ ইং তারিখে প্রতিষ্ঠা করা হয় যা এখনও সক্রিয় রয়েছে। ইহার অবস্থান পুরোনো হাইকোর্ট ভবন, ঢাকা।
ট্রাইব্যুনাল-২-
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ , ২২/০৩/২০১২ ইং তারিখে প্রতিষ্ঠা করা হয় যা এখন সক্রিয় নাই। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে ট্রাইব্যুনাল-২ নিষ্ক্রিয় করা হয়।
ট্রাইব্যুনাল গঠনের উদ্দেশ্য-
ট্রাইব্যুনাল গঠনের উদ্দেশ্য হচ্ছে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধসমূহের বিচার করা। এর আওতায় অপরাধসমূহ হলো যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও শান্তির বিরুদ্ধে অপরাধ। পরবর্তীতে সংশোধন করে যুগপযোগী করা হয়।
বাংলাদেশে বিচার শুরু-
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৩৯ বছর পর ২৫/০৩/২০১০ ইং তারিখে প্রথম যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের জন্য ট্রাইবুনাল, আইনজীবী প্যানেল এবং তদন্ত সংস্থা গঠন করা হয়।
বর্তমানে বিচার-
২০২৪ সালে গণঅভ্যুথ্যানে সংঘটিত গনহত্যার বিচার বর্তমানে এই ট্রাইবুনালে চলমান রয়েছে।
আইনগত পরামর্শ ও সহায়তার জন্য যোগাযোগ করুন।
যোগাযোগ-
আইনবিদ লিগ্যাল সলিউশন
অন স্টপ লিগ্যাল সলিউশন সার্ভিস
সার্বিক পরিচালনায়- এডভোকেট মুহাম্মদ মহীউদ্দীন (শিশির)
১৬, কোইলাশঘোষ লেন, ঢাকা জজ কোর্ট, কোতোয়ালী, ঢাকা
অথবা
রোড-৫, ব্লক-এ, বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা।
মোবাইল- 01711068609 / 01540105088
ওয়েবসাইট- www.ainbid.com