আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়ম

বর্তমানে প্রচলিত আইনের আলোকে আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়ম অত্যন্ত সহজ ভাষায় উপস্থাপন করা হলো।

 

আয়কর কি:

সাধারণত একজন ব্যক্তি এক বছরে ৩,৫০,০০০/- টাকার বেশি আয় করলে তার আয়ের সরকারকে কর দিতে হয়। এই করকেই বলা হয় আয়কর। যে ব্যক্তি কর দেয় তাকে বলা হয় করদাতা। প্রত্যেক করদাতার একটি ইউনিক নম্বর থাকে। এই নম্বরটিকে বলা হয় Tax Identification Number বা TIN Number.

 

আয়কর রিটার্ন কি:

করদাতা তার আয়কর নির্ধারণের জন্য সরকারের নির্ধারিত ফরমে তার আয়ের যে বিবরণ লিখে প্রস্তুত করেন সেটাকেই বলা হয় আয়কর রিটার্ণ। সুতরাং সহজ ভাষায় বলতে গেলে আয়ের বিবরণ সমৃদ্ধ ফরমই হলো আয়কর রিটার্ণ।

 

আয়কর রিটার্ন দাখিল:

আয়কর রিটার্ন প্রস্তুত করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্ধারিত স্থানীয় কর অফিসে জমা দেওয়াই হলো আয়কর রিটার্ন দাখিল।

 

আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়ম:

আয়কর রিটার্ন দাখিল এখন দুই ভাবে করা যায়-

(১) নির্ধারিত ট্যাক্স জোন অফিসে সরাসরি গিয়ে দাখিল।

(২) অনলাইনে দাখিল।

 

 আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়:

প্রতিবছর ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর এই সময়ের মধ্যে কোনো ধরণের জরিমানা ব্যতীত চলতি করবর্ষের নিয়মিত ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে। নির্ধারিত এই সময়ের শেষের মাস নভেম্বর মাস জুড়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আয়কর মেলার আয়োজন করে। তায় করদাতারা এই মাসে অতি সহজে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন। এই সময়ের শেষের দিন অর্থাৎ ৩০ নভেম্বরকে কর দিবস হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময়ের পরেও রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে। তবে এই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট এলাকার উপকর কমিশনারের অনুমতি নিয়ে জরিমানাসহ রিটার্ণ জমা দেওয়ার সুযোগ আছে।

 

কর অফিসের অবস্থান:

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা National Board of Revenue (NBR) হলো কর সংক্রান্ত প্রধান অফিস। ইহা ঢাকার সেগুনবাগিচায় অবস্থিত। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীনে সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে ৩১টি কর অঞ্চল এবং এই কর অঞ্চলের অধীন সর্বমোট ৬৪৯টি সার্কেল অফিস আছে।

 

করদাতার সংখ্যা:

বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৯০ লক্ষ এর অধিক TIN ধারী রয়েছে। ইহার মধ্যে প্রতিবছর প্রায় ৩০ লক্ষ লোক আয়কর রিটার্ন দাখিল করে।

 

আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:

আয়কর রিটার্ন ফরমটি প্রস্তুত করে ইহার সাথে নিম্নলিখিত কাগজপত্রসহ দাখিল করতে হবে-

(১) NID ফটোকপি -০১ কপি,

(২) পাসপোর্ট সাইজ ছবি – ০১ কপি,

(৩) TIN সার্টিফিকেট এর কপি – ০১ কপি,

(৪) আয়ের উৎস প্রমাণক ডকুমেন্ট – ০১ কপি,

(৫) ব্যাংক স্টেটমেন্ট – ০১ কপি,

(৬) সকল স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তির ডকুমেন্ট – ০১ সেট।

 

আয়কর রিটার্ন দাখিল করার প্রমাণ কি:

আয়কর রিটার্ন দাখিল করলে কর অফিস থেকে একটি প্রাপ্তি স্বীকার পত্র (Acknowledgement slip) দেওয়া হয়। ইহাই আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া করদাতা চাইলে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সার্টিফিকেটও নিতে পারেন। বর্তমান আইন অনুযায়ী সরকারি-বেসরকারি ৪৩টি সেবা পেতে হলে আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ দাখিল করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *