চেক ডিসঅনার মামলার নিয়ম ও দরখাস্ত
ব্যবসায়িক, লোন বা যেকোন উদ্দেশ্যে আপনি কাউকে টাকা দিলে এবং সেই টাকার বিপরীতে সে আপনাকে ব্যাংক চেক দিলে সেই চেক যদি যথা সময়ে ক্যাশ করতে না পারেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আপনি নেগোসিয়েবল ইন্সট্রমেন্ট আইন, ১৮৮১ এর ১৩৮ ধারায় মামলা করতে পারবেন। এই মামলার আসামীর চেকে উল্লেখিত টাকার তিনগুন পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
চেক ডিসঅনার মামলার নিয়ম:
চেক ডিসঅনার মামলা দায়ের করার আগে অবশ্যই নিচের নিয়মগুলো অনুসরণ করতে হবে। তাছাড়া এই মামলা করা যাবে না।
(১) চেকে উল্লেখিত তারিখ হতে ০৬ (ছয়) মাসের মধ্যে চেকটি ব্যাংকে উপস্থাপন করে ডিসঅনার করাতে হবে।
(২) চেকটী ডিসঅনার হওয়ার তারিখ হতে ০১ (এক) মাসের মধ্যে লিগ্যাল নোটিশ দিতে হবে।
(৩) লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার তারিখ হতে ০১ (এক) মাসের মধ্যে মামলা করতে হবে।
চেক ডিসঅনার মামলার দরখাস্ত: (ব্যক্তির দায়েরকৃত মামলা)।
মোকাম: বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর আদালত, ঢাকা।
সি.আর. মামলা নং- ১৩৩/২০২৪
ধারা- এন, আই, এ্যাক্ট-এর সংশোধীত (১৯৯৪ সালের) ১৩৮ ধারা।
আলমাস শিকদার,
পিতা-জলিমুদ্দিন শিকদার,
সাং-গ্রাম-ইসলামপুর, পোঃ জয়পাড়া, থানা-দোহার, জেলা-ঢাকা।
—————বাদী।
-বনাম-
মোঃ মজিবুর রহমান,
পিতা-মৃত আঃ কাদির,
সাং-গ্রাম-দক্ষিণ শিমুলিয়া, পোঃ মেঘুলা, থানা-দোহার, জেলা-ঢাকা।
——————বিবাদী।
ঘটনার তারিখ: ০৬/০৬/২০২৪ ইং।
চেক প্রদানের তারিখঃ ০৬/০৫/২০২৪ ইং।
চেক ডিজঅনার এর তারিখঃ ০৬/০৬/২০২৪ ইং।
সর্বশেষ চেক জিসঅনার এর তারিখ: ১৭/০৬/২০২৪ ইং
লিগ্যাল নোটিশ প্রদানের তারিখঃ ১৭/০৭/২০২৪ইং
সর্বশেষ নিগ্যাল নোটিশ প্রদানের তারিখ: ১৭/০৮/২০১২ ইং
ঘটনার-স্থান:
ন্যাশনাল ব্যাংক লিঃ মেঘুলা শাখা, দোহার, ঢাকা।
স্বাক্ষীগণ:
১। বাদী নিজে।
২। ব্যাবস্থাপক, ন্যাশনাল ব্যাংক লিঃ
মেঘুলা শাখা, দোহার, ঢাকা।
আরও অনেকে।
বাদীপক্ষের বিনীত নিবেদন এই যে,
১। অত্র মামলার বাদী একজন সৎ ও শিক্ষিত চাকুরীজীবি, আইনমান্যকারী নাগরিক অপর পক্ষে বিবাদী/আসামী ঠক, প্রতারক, আদম ব্যবসায়ী, পরধন লোভী ও অর্থ আত্মসাৎ করিয়া বটে।
২। বিবাদী বাদীর পূর্ব পরিচিত হওয়ার কারণে বিবাদী তাহার ব্যবসা সম্প্রসারনের জন্য বাদীর নিকট হইতে ১৪,০০,০০০/- (চৌদ্দ লক্ষ) টাকা ঋণ চাহিলে বাদী উক্ত টাকা বিবাদীকে নগদ প্রদান করেন। উক্ত টাকার বিপরীতে বিবাদী বাদীর বরাবরে বিগত ০৬/০২/২০১২ ইং তারিখে ন্যাশনাল ব্যাংক লিঃ মেঘুলা শাখা, দোহার, ঢাকা এর ১৪,০০,০০০/= (চৌদ্দ লক্ষ) টাকার একটি চেক প্রদান করেন। যাহার হিসাব নং- ০১০৪৩৪০০৬৫৬২ এবং টেক নং- ৬৩৩৭৯৫০, তাং- ০৬/০২/২০১২ইং।
৩। বাদী বিবাদীর প্রদত্ত ১৪,০০,০০০/= (চৌদ্দ লক্ষ) টাকার চেকটি বিগত ০৭/০২/২০১২ ইং তারিখে স্ট্যান্ডার চাটার্ড ব্যাংক লিঃ নবাবগঞ্জ শাখা, ঢাকা এর অনুকূলে নগদায়নের জন্য জমা প্রদান করিলে তাহা গত ০৮/০২/১২ ইং তারিখে “অপর্যাপ্ত তহবিল” মর্মে চেকটি ডিজঅনার হয় এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষ চেক সহ চেক ফেরৎ স্মারক প্রদান করেন। পরবর্তীতে বাদী বিবাদীর দেওয়া প্রদত্ত চেকটি পুনরায় ১৭/০৭/২০১২ ইং তারিখ ব্যাংকে উপস্থাপন করিলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অপর্যাপ্ত তহবিল মর্মে ফেরত প্রদান করেন এবং ২২/০৭/১২ ইং তারিখ পুনরায় লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করিলে বিবাদী তাহা ১৪/০৮/১২ ইং তারিখে গ্রহণ করার পরও বিবাদী বাদীর টাকা পরিশোধে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেন নাই এমনকি কোন টাকা পরিশোধ করেন নাই।
৪। বাদী বিবাদীকে চেক ডিজঅনারের বিষয়ে অবগত কেিল বিবাদী সমুদয় টাকা নগদে পরিশোধ করিয়া দিবেন মর্মে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। কিন্তু বিবাদী অধ্যবধি কোন টাকা পরিশোধ করেন নাই। বিবাদী বাদীর উল্লেখিত টাকা আত্মসাৎ করার জন্য নানা ধরনের টালবাহানা করিতেছেন। বিবাদী বার বার প্রতিশ্রুতি প্রদান করিয়াও তাহা রক্ষা করিতেছেন না। বাদী স্পষ্টভাবে উপলব্ধি করিতে পারিয়াছেন যে, বিবাদী বাদীর উক্ত দেয় টাকা বাংকে পর্যাপ্ত টাকা না রাখিয়া বাদীর বরাবরে চেক প্রদান করিয়াছেন।
৫। বাদী বিগত ০৬/০৩/২০১২ ইং এবং ২২/০৭/১২ইং তারিখে বিবাদী/আসামীর বরাবরে এন, আই, এ্যাক্ট এর ১৩৮ ধারার বিধান মোতাবেক এ/ডি সহ রেজিঃ ডাকে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন। বিবাদী বিগত ১২/০৩/২০১২ এবং ১৪/০৮/১২ইং তারিখে লিগ্যাল নোটিশ প্রাপ্ত হয়। লিগ্যাল নোটিশ প্রাপ্ত হওয়া সত্বেও অদ্যবধি কোন টাকা পরিশোধ করে নাই ও লিগ্যাল নোটিশের জবাব প্রদান করে নাই।
৬। বাদী বিবাদীকে চেক ডিসঅনারের কথা জানালে চতুর বিবাদী বাদীর টাকা পরিশোধ করে দিব দিচ্ছি বলে পরিশোধ না করে বাদীর টাকা আত্মসাৎ করার টাল বাহানা করিতেছে। বিবাদী/আসামী বাদীর পাওনা টাকা আত্মসাৎ করার লক্ষ্যেই পরিকল্পিত ভাবে ব্যাংকে পর্যাপ্ত টাকা জমা না রাখিয়া বাদীকে উক্ত চেক প্রদান করে এন, আই, এ্যাক্টের ১৩৮ ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধ করিয়াছেন। বাদী এন, আই, এ্যাক্টের বিধান মোতাবেক প্রতিকার পাওয়ার হকদার বিধায় বাদী অত্র মামলা দায়ের করিতেছেন।
অতএব, বিজ্ঞ আদালতে বাদীর বিনীত প্রার্থনা বিজ্ঞ আদালত ন্যায় বিচারের স্বার্থে বিবাদী/আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ারা ইস্যু করিয়া আসামীকে গ্রেফতার করতঃ সাক্ষ্য গ্রহণ করতঃ ন্যায় বিচার করিয়া বিবাদী/আসামীকে এন, আই, এ্যাক্টিএর ১৩৮ ধারার বিধান মোতাবেক ক্ষতিপূরণ সহ বাদীর টাকা আদায় করতঃ বিবাদী/ আসামীকে শাস্তি প্রদান করিতে মর্জি হয়।
সংযুক্তি:
১। চেকের ফটোকপি।
২। ডিসঅনার ফটোকপি।
৩। ডাক রশিদ ফটোকপি।
৪। লিগ্যাল নোটিশের ফটোকপি।
৫। প্রাপ্তি স্বীকার পত্রের ফটোকপি।