পাওয়ার অব এটর্নি (Power of Attorney) বা আম-মোক্তারনামা কি, ইহা কত প্রকার ও এই দলিল দ্বারা কি কি কাজ করা যায় বিস্তারিত জানার জন্য মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি কি-
পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি (Power of Attorney) এর বাংলা অর্থ হলো আমমোক্তারনামা। “পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি” এর অর্থ হচ্ছে কোন ব্যক্তিকে কোন কাজ করার ক্ষমতা প্রদান করা। সুতরাং কোন ব্যক্তিকে অপর কোন ব্যক্তির পক্ষে কোন কাজ করার ক্ষমতা লিখিতভাবে বা আইনগতভাবে দেওয়াকেই বলা হয় পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি।
“পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি আইন, ২০১২” এর ধারা ২(১) এ প্রদত্ত সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, “পাওয়ার অব অ্যাটর্নি অর্থ এমন কোন দলিল যাহার মাধ্যমে কোন ব্যক্তি তাহার পক্ষে উক্ত দলিলে বর্ণিত কার্য-সম্পাদনের জন্য আইনানুগভাবে অন্য কোন ব্যক্তির নিকট ক্ষমতা অর্পণ করেন”।
পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দলিল কি-
কোন কাজ করার ক্ষমতা লিখিতভাবে যে দলিলের মাধ্যমে দেওয়া তাকে বলা হয় পাওয়ার অব এটর্নি দলিল।
পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি কেন নিয়োগ দেওয়া হয়-
বিভিন্ন প্রয়োজনে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। তবে সাধারণত নিম্নলিখিত কারণে বাংলাদেশে পাওয়ার অব এটর্নি নিয়োগ করতে দেখা যায়-
(১) দেখাশোনা করার জন্য। সাধারণত প্রবাসীগণ এটা করে থাকে।
(২) বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে। সাধারণত ভূমি ব্যবসায়ীগন এটা করে থাকে।
(৩) ঋণ গ্রহণের উদ্দেশ্যে বন্ধক দেওয়ার জন্য। সাধারণত ব্যাংক এটা করে থাকে।
(৪) ভূমি উন্নয়ণের জন্য পাওয়ার অফ এটর্নি নিয়োগ। সাধারণত ডেভেলপার কোম্পানী এটা করে থাকে।
পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেওয়ার বৈধতা-
পাওয়ার অব এটর্নি দলিলের মাধ্যমে জমি বিক্রি বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হলে এই বিষয় সম্পর্কিত কি আইন দেশে প্রচলিত আছে সেই বিষয়ে। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রচলিত আছে “পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি আইন, ২০১২” এবং “পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি বিধিমালা, ২০১৫”। এই আইন এবং বিধিমালা অনুযায়ী পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি নিয়োগ সম্পূর্ণ বৈধ। তবে তা অবশ্যই আইন নির্ধারিত মূল্যের স্ট্যাম্পে করতে হবে এবং প্রয়োজন হলে নিবন্ধন করে নিতে হবে।
পাওয়ার অফ অ্যাটর্নির প্রকার-
“পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি আইন, ২০১২” এর ধারা ২(৪) ও ২(৭) এবং “পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি বিধিমালা, ২০১৫” এর বিধি ২(৭) ও ৬ বিশ্লেষণ করে বলা যায় যে, পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি মোট তিন প্রকার। যথা-
(১) অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি [ধারা ২(৪)]
(২) সাধারণ পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি [ধারা ২(৭)]
(৩) বিশেষ পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি [বিধি ২(৭) ও ৬]
পাওয়ার অফ অ্যাটর্নির মাধ্যমে কি কি কাজ করা যায়-
উপরে বর্ণিত তিন ধরণের পাওয়ার অফ অ্যাটর্নির কাজ ও ক্ষমতা ভিন্ন ভিন্ন। নিম্নে প্রত্যেকটির কাজ আলোচনা করা হলো:
(১) অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি:
অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দলিল অবশ্যই নির্ধারিত মূল্যের স্ট্যাম্পে সম্পাদন করতে হবে এবং অবশ্যই নিবন্ধন করে নিতে হবে। এই দলিলের মাধ্যমে পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দলিল গ্রহিতা মূল মালিকের পক্ষে নিম্নলিখিত কাজগুলো করতে পারবেন-
(ক) স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয়,
(খ) স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয় চুক্তি সম্পাদন,
(গ) ঋণ গ্রহণের বিপরীতে স্থাবর সম্পত্তি বন্ধক রাখা,
(ঘ) স্থাবর সম্পত্তির বিপরীতে পণ মূল্য গ্রহণের বিনিময়ে ভূমি উন্নয়ণ ইত্যাদি।
(২) সাধারণ পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি:
সাধারণ পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দলিল নির্ধারিত মূল্যের স্ট্যাম্পে সম্পাদন করতে হবে এবং এটি নিবন্ধন করার বাধ্যবাধকতা নাই। এই দলিলের মাধ্যমে নিম্নলিখিত কাজগুলো করার ক্ষমতা পাওয়া যায়-
(ক) জমি দেখাশুনা
(খ) মামলা পরিচালনা ইত্যাদি।
(৩) বিশেষ পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি:
“পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি বিধিমালা, ২০১৫” এর বিধি ৬ এবং রেজিস্ট্রেশন আইনের ৩৩ ধারা অনুযায়ী শুধুমাত্র সাব-রেজিস্ট্রার বা রেজিস্ট্রারের নিকট কোন দলিল রেজিস্ট্রেশনের জন্য উপযুক্ত প্রমাণীকরণের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দলিল নিবন্ধন বাধ্যতামূলক কিনা:
“পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি আইন, ২০১২” এর ৬(১) ধারা অনুযায়ী “অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি” এর নিবন্ধন বাধ্যতামূলক।
প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন-
আইনবিদ লিগ্যাল সলিউশন,
সার্বিক পরিচালনা: এডভোকেট মুহাম্মদ মহীউদ্দীন
ঢাকা জজ কোর্ট, কোতয়ালী, ঢাকা।
অথবা
রোড-৫, ব্লক-এ, বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা
01711068609 / 01540105088
ইমেইল: mohiuddin@ainbid.com
ওয়েবসাইট: www.ainbid.com