প্রজাতন্ত্র কি

প্রজাতন্ত্র কি এবং বাংলদেশ কোন ধরণের রাষ্ট্র ব্যবস্থা তা জানার জন্য লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

 

প্রজাতন্ত্র শব্দটি রাজতন্ত্রের বিপরীত। প্রজাতন্ত্র শব্দটি  ল্যাটিন শব্দগুচ্ছ Res public থেকে উদ্ভুত হয়েছে। প্রজাতন্ত্র হচ্ছে এমন একটি রাষ্ট্র যেখানে রাজনৈতিক ক্ষমতা থাকে জনগণের প্রতিনিধিদের নিকট। একটি প্রজাতন্ত্র একটি একক ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। তবে কিছু কিছু উপ-জাতীয় রাষ্ট্র সত্তাও রয়েছে যেগুলিকে প্রজাতন্ত্র হিসাবে গণ্য করা হয়।

 

বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্র কিনা:

বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১ অনুযায়ী বাংলাদেশ একটি, স্বাধীন ও সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র।

 

বাংলাদেশ সংবিধানে ১১টি ভাগ রয়েছে এবং অনুচ্ছেদ রয়েছে ১৫৩টি। এর মধ্যে প্রথম ভাগে প্রজাতন্ত্র সম্পর্কে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।

 

বাংলাদেশ সংবিধান

প্রথম ভাগ

প্রজাতন্ত্র

 

আনুচ্ছেদ ১:

বাংলাদেশ একটি একক, স্বাধীন ও সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র, যাহার নাম হবে “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ”।

 

আনুচ্ছেদ ২: প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানা।

২৬/০৩/১৯৭১ খ্রীষ্টাব্দ তারিখের অব্যবহিত পূর্বে যে সকল এলাকা নিয়ে পূর্ব পাকিস্তান গঠিত ছিল, যে সকল এলাকা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের সীমানাভুক্ত হতে পারে সেই সকল এলাকা বাংলাদেশের সীমানাভুক্ত হবে।

 

আনুচ্ছেদ ২ক: রাষ্ট্রধর্ম।

প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করবেন।

 

আনুচ্ছেদ ৩: রাষ্ট্রভাষা।

প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা৷

 

আনুচ্ছেদ ৪: প্রজাতন্ত্রের জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা ও প্রতীক।

(১) জাতীয় সঙ্গীত “আমার সোনার বাংলা” এর প্রথম দশ চরণ।

(২) জাতীয় পতাকা হচ্ছে সবুজ ক্ষেত্রের উপর স্থাপিত রক্তবর্ণের একটি ভরাট বৃত্ত।

(৩) জাতীয় প্রতীক হচ্ছে উভয় পার্শ্বে ধান্যশীর্ষবেষ্টিত, পানিতে ভাসমান জাতীয় ফুল শাপলা, তার শীর্ষদেশে পাটগাছের তিনটি পরস্পরসংযুক্ত পাতা, তার উভয় পার্শ্বে দুইটি করে তারকা।

 

আনুচ্ছেদ ৪ক: জাতির পিতার প্রতিকৃতি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি সকল সরকারী, আধা-সরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করতে হবে।

 

আনুচ্ছেদ ৫: রাজধানী।

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা।

 

আনুচ্ছেদ ৬: নাগরিকত্ব।

বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসাবে বাঙালী এবং নাগরিক হিসাবে বাংলাদেশী বলে পরিচিত হবেন।

 

আনুচ্ছেদ ৭: সংবিধানের প্রাধান্য।

(১) প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ।

(২) এই সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন।

 

আনুচ্ছেদ ৭ক: সংবিধান বাতিল, স্থগিতকরণ, ইত্যাদি অপরাধ।

(১) কোন ব্যক্তি শক্তি প্রদর্শন বা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বা অন্য কোন অসাংবিধানিক পন্থায় –

(ক) এই সংবিধান বা ইহার কোন অনুচ্ছেদ রদ, রহিত বা বাতিল বা স্থগিত করলে কিংবা উহা করবার উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করলে ঐ ব্যক্তি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে দোষী হবে।

 

আনুচ্ছেদ ৭খ: সংবিধানের নিম্নলিখিত অনুচ্ছেদসমুহ সংশোধন অযোগ্য।

  • প্রথমভাগের সকল অনুচ্ছেদ,
  • দ্বিতীয়ভাগের সকল অনুচ্ছেদ,
  • নবম-কভাগে বর্ণিত অনুচ্ছেদসমূহের বিধানাবলী সাপেক্ষে তৃতীয় ভাগের সকল অনুচ্ছেদ,
  • একাদশভাগের ১৫০ অনুচ্ছেদসমুহের বিধানাবলী সংযোজন, পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন, রহিতকরণ কিংবা অন্য কোন পন্থায় সংশোধনের অযোগ্য হবে।

 

লেখক-

এডভোকেট মুহাম্মদ মহীউদ্দীন

01711068609 / 01540105088

ainbid.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *