ফৌজদারী কার্যবিধির সহজ নোট (ধারা ৫৮-১৬৪)

ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮

The Code of Criminal Procedure, 1898

 

ধারা ৫৮: ভিন্ন অধিক্ষেত্রে অপরাধী অনুসরণ

বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতারকৃত অপরাধীকে সমগ্র বাংলাদেশের যেকোনো স্থানে অনুসরণ করা যাবে।

 

ধারা ৫৯: বেসরকারী ব্যক্তি কর্তৃক গ্রেফতার এবং পরবর্তী কার্য পদ্ধতি

আমলযোগ্য, জামিনেরঅযোগ্য বা ঘোষিত অপরাধীকে যেকোনো বেসরকারী লোক বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারবে।

 

ধারা ৬০: গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে ম্যাজিস্ট্রেট বা ওসির নিকট অর্পণ করতে হবে 

যেকোনো পুলিশ অফিসার কতৃক বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার কৃত ব্যক্তিকে ম্যাজিস্ট্রেট বা সংশ্লিষ্ট থানার ওসির নিকট সমর্পণ করবেন।

 

ধারা ৬১: গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে ২৪ ঘন্টার বেশি আটক রাখা যাবেনা

[সংবিধানের সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ ৩৩]

বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে গ্রেফতারের স্থান হতে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পৌছাতে যে সময় ব্যয় হয় সেই সময় বাদ দিয়া ২৪ ঘন্টার বেশি আটক রাখা যাবেনা।

 

সংবিধানেরঅনুচ্ছেদ ৩৩-

(ক) গ্রেফতারের কারণ জানার অধিকার।

(খ) আইনজীবির সাথে পরামর্শের অধিকার।

(গ) ২৪ ঘন্টার বেশি আটক রাখা যাবে না।

 

ধারা ৬২: গ্রেফতার সম্পর্কে পুলিশ রিপোর্ট দিবে

প্রতিটি থানার ওসি বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি সম্পর্কে মহানগরে CMM (Chief Metropolitan Magistrate) কে রিপোর্ট দিবেন মহানগরের বাহিরে DM (District Magistrate) কে রিপোর্ট দিবেন।

 

ধারা ৬৩: গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে অব্যাহতি

বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে মুচলেকা, জামিন বা ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ নির্দেশ ছাড়া অব্যাহতি দেওয়া যাবে না।

 

ধারা ৬৬: পলায়ন করলে অপরাধীকে অনুসরণ  পুনরায় গ্রেফতারের ক্ষমতা।

পুলিশের নিকট থেকে কোনো আসামী পলায়ন করলে কিংবা আসামীকে ছিনিয়ে নেয়া হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসার আসামীকে অনুসরণ করতে পারবেন ও পুনরায় গ্রেফতার করতে পারবেন।

 

অধ্যায় – ৬

হাজির হইতে বাধ্য করার ব্যবস্থা

ধারা ৬৮ – ৯৩গ

ক. সমন (ধারা ৬৮-৭৪)

 

ধারা ৬৮: সমনের ধরণ।

সমন অবশ্যই লিখিত, ২ কপি, আদালতের বিচারক অথবা এই উদ্দেশ্যে নিয়োজিত কর্মকর্তা কর্তৃক স্বাক্ষরিত ও আদালতের সীলমোহরযুক্ত হবে।

 

কে সমন জারি করিবে-

(১) পুলিশ

(২) আদালতের অফিসার অথবা

(৩) অন্য সরকারি কর্মচারী দ্বারা

 

ধারা ৬৯: সমন কিভাবে জারি হইবে-

১। সমন ব্যক্তিগতভাবে জারি করিতে হইবে।

২। জারিকারক অফিসার দাবি করিলে প্রত্যেকে দ্বিতীয় কপি সমনের অপর পৃষ্ঠায় স্বাক্ষর করিয়া প্রাপ্তি স্বীকার করিবেন।

৩। সমতিবদ্ধ কোম্পানীর ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের প্রধান অফিসারের নিকট ব্যক্তিগতভাবে বা রেজিস্ট্রিকৃত পত্র দ্বারা জারি করা যাইবে।

 

ধারা ৭০:  সমনে তলবী ব্যক্তিকে পাওয়া না গেলে সমন জারির পদ্ধতি।

সমনে তলবী ব্যক্তিকে পাওয়া না গেলে তার পরিবারের একজন সাবালক পুরুষ সদস্যের কাছে প্রদান করবেন এবং সমন জারিকারী কর্মকর্তা দাবী করলে প্রাপক দ্বি-নকলের অপর পৃষ্ঠায় স্বাক্ষর করে প্রাপ্তি স্বীকার করবেন।

 

ধারা ৭১:   ধারা ৬৯ ও ৭০ মোতাবেক সমন জারি সম্ভব না হলে পদ্ধতি।

ধারা ৬৯ ও ৭০ মোতাবেক সমন জারি সম্ভব না হলে তলবী ব্যক্তির বাসস্থানের একটি প্রকাশ্য স্থানে সমনের দ্বি-নকলের একটি কপি ঝুলিয়ে দিবেন।

 

ধারা ৭২: প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীর উপর সমন জারি।

সরকারী কোনো কর্মচারীর উপর সমন জারি করতে হলে উক্ত ব্যক্তি যে অফিসে কর্মরত আছেন উহার প্রধান অফিসারের নিকট প্রেরণ করবেন।

 

খ. গ্রেফতারী পরোয়ানা (ধারা ৭৫ – ৮৬)

ধারা ৭৫: গ্রেফতারী পরোয়ানার ধরণ।

গ্রেফতারী পরোয়ানা অবশ্যই লিখিত, এক কপি, প্রিজাইডিং অফিসার কর্তৃক বা ম্যাজিস্ট্রেট বেঞ্চ এর ক্ষেত্রে যেকোনো একজন সদস্য কর্তৃক স্বাক্ষরিত ও আদালতের সীল মোহর যুক্ত হবে।

গ্রেফতারী পরোয়ানা একবার ইস্যু হলে ইস্যুকারী আদালত কর্তৃক বাতিল না করা পর্যন্ত কিংবা গ্রেফতার কার্যকর না করা পর্যন্ত বলবত থাকবে।

 

ধারা ৭৭: পরোয়ানা যার প্রতি নির্দেশিত হবে।

পরোয়ানা কার্যকর করার জন্য এক একাধিক পুলিশ অফিসার নির্দেশিত হবেন। পুলিশ অফিসার পাওয়া না গেলে এক একাধিক ব্যক্তিও নির্দেশিত হবেন।

 

ধারা ৮০: পরোয়ানার সারমর্ম প্রজ্ঞাপন বা অবহিতকরণ।

পরোয়ানা জারিকারক পুলিশ অফিসার বা অন্য কোনো ব্যক্তি কোনো আসামীকে পরোয়ানার সারমর্ম অবহিত করবেন। কিন্তু কোনো কপি দিতে পারবেন না। তবে আসামী পরোয়ানা দেখতে চাইলে আসামীকে দেখাবেন।

 

ধারা ৮১: গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে অবিলম্বে আদালতে হাজির করতে হবে।

পরোয়ানার দ্বারা গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে অনাবশ্যক বিলম্ব না করে এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতে অবিলম্বে হাজির করতে হবে।

 

ধারা ৮২: পরোয়ানা যেখানে কার্যকর করা যাবে।

পরোয়ানা সমগ্র বাংলাদেশের যেকোনো স্থানে কার্যকর করা যাবে।

 

ধারা ৮৩: অধিক্ষেত্রের বাহিরে কার্যকর করার জন্য প্রেরিত পরোয়ানা।

অধিক্ষেত্রের বাহিরে পরোয়ানা কার্যকর করার জন্য কোনো পুলিশ অফিসারকে নির্দেশ না দিয়া পরোয়ানাটি প্রেরিত হবে-

(ক) মহানগরের বাহিরে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা জেলা পুলিশ সুপার (SP) এর নিকট।

(খ) মহানগরের ভতিরে, মহানগর পুলিশ কমিশনার (MPC) এর নিকট।

 

গ. হুলিয়া ও ক্রোক (ধারা ৮৭ – ৮৯)

ধারা ৮৭: পলাতক ব্যক্তির জন্য হুলিয়া (Proclamation)

আসামী পলাতক হলে কিংবা আত্মগোপন করলে আসামীকে নির্দিষ্ট তারিখে নির্দিষ্ট আদালতে হাজির হওয়ার জন্য কমপক্ষে ৩০ দিন সময় দিয়া হুলিয়া বা ঘোষণা জারি করবেন।

 

হুলিয়া জারি করার পদ্ধতি ৩টি-

(ক) আসামীর বাসস্থান এলাকার প্রকাশ্য স্থানে হুলিয়াটি পাঠ করতে হবে।

(খ) আসামীর বাসস্থান এলাকার প্রকাশ্য স্থানে হুলিয়ার একটি কপি ঝুলিয়ে দিতে হবে।

(গ) আদালতের নোটিশ বোর্ডে হুলিয়ার একটি কপি ঝুলিয়ে দিতে হবে।

 

ধারা ৮৮: পলাতক ব্যক্তির সম্পত্তি ক্রোক (Attachment)

৮৭ ধারা মোতাবেক হুলিয়া জারির পরপরই আদালত আসামীর স্থাবর বা অস্থাবর সমস্ত সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দিবেন।

ক্রোককৃত সম্পত্তিতে তৃতীয় কোনো ব্যক্তির আপত্তি থাকলে ক্রোকের তারিখ হতে ৬ মাসের মধ্যে ক্রোককারী আদালতে আপত্তি দিতে হবে।

এই ধরণের আপত্তি পাওয়ার পর আদালত অনুসন্ধান করবেন। আপত্তি সম্পূর্ণ বা আংশিক প্রত্যাখ্যান করতে পারবেন।

আদালত তৃতীয় ব্যক্তির আপত্তি অগ্রাহ্য করলে উক্ত ব্যক্তি পরবর্তী ১ বছরের মধ্যে ক্রোককৃত সম্পত্তিতে নিজের মালিকানা প্রতিষ্ঠার জন্য নিয়মিত দেওয়ানী মামলা দায়ের করতে পারবে।

হুলিয়ায় উল্লাখিত সময়ের মধ্যে আসামী আদালতে হাজির হলে আদালত ক্রোক আদেশ প্রত্যাহার করবেন।

হুলিয়ায় উল্লাখিত সময়ের মধ্যে আসামী আদালতে হাজির না হলে আদালত ক্রোককৃত সম্পত্তি সরকারের নিকট অর্পণ করবেন।

ধারা ৮৯: ক্রোকী সম্পত্তি পুনরুদ্ধার।

৮৮ ধারা মোতাবেক সরকারের নিকট ক্রোককৃত সম্পত্তি অর্পণ এর তারিখ হতে ২ বছরের মধ্যে আসামী যদি আদালতে হাজির হয় এবং ইতিপূর্বে হাজির না হওয়ার সঙ্গত কারণ দর্শায় ও দাবী করে কোনো প্রকার পরোয়ানা সে পায় নাই সেইক্ষেত্রে আদালত তার সম্পত্তি ফেরত দেওয়ার আদেশ দিবেন।

সম্পত্তি ফেরতের আদেশ না দিলে ক্ষুব্ধ ব্যক্তি ৪০৫ ধারা মোতাবেক আপীল দায়ের করতে পারেন।

 

ঘ. পরোয়ানা বিষয়ক অপরাপর বিধি (ধারা ৯০ – ৯৩)

ধারা ৯০: সমনের পরিবর্তে পরোয়ানা জারি।

যে আদালত সমন ইস্যু করতে পারে সেই আদালত নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে পরোয়ানা ইস্যু করতে পারেন।

(ক) সমন জারির পূর্বে বা পরে, কিন্তু আসামী হাজির হওয়ার নির্ধারিত তারিখের পূর্বে যদি আদালত মনে করেন আসামী পলাতক বা সমন মান্য করবে না।

(খ) সমন যথারীতি জারি হওয়ার পরও সমন অনুসারে হাজির না হলে।

 

অধ্যায়  ৭  

দলিলাদি, অপরাপর অস্থাবর সম্পত্তি ও বে-আইনীভাবে আটক ব্যক্তিকে খোজার জন্য পরোয়ানা

ধারা ৯৪ – ১০৫

 

ধারা ৯৪: দলিল বা অন্যান্য জিনিস হাজির করার সমন।

আদালত বা থানার ওসি তদন্ত, অনুসন্ধান, বিচার বা অন্য কোনো প্রসিডিং এর জন্য সমন বা লিখিত আদেশ দ্বারা কোনো ব্যক্তিকে তার দখলে রক্ষিত দলিল বা জিনিস সমন বা আদেশে উল্লেখিত সময় ও স্থানে হাজির করার নির্দেশ দিতে পারেন।

ব্যাংক হেফাজতে রক্ষিত দলিল বা জিনিস হাজির করার নির্দেশ দিতে পারেন-

(ক) দায়রা আদালত, দন্ডবিধির ৪০৩, ৪০৬, ৪০৮, ৪০৯, ৪২১-৪২৪, ৪৬৫-৪৭৭ক ধারার আওতায় অপরাধের তদন্তের ক্ষেত্রে।

(খ) হাইকোর্ট বিভাগ অন্যান্য ক্ষেত্রে।

নির্দেশিত ব্যক্তি নিজে ব্যক্তিগতভাবে হাজির না হয়ে দলিল বা জিনিস হাজির করার ব্যাবস্থা করলে নির্দেশ পালন করেছে বলে গণ্য হবে।

সাক্ষ্য আইনের ১২৩, ১২৪ ধারার ক্ষেত্রে (রাষ্ট্রীয় বা সরকারী বার্তার ক্ষেত্রে) এই ধারা প্রযোজ্য হবে না।

 

ধারা ৯৫: চিঠি বা টেলিগ্রাম বিষয়ক পদ্ধতি (Procedures as to letters and telegrams)

(১) DM/CJM/CMM/High Court/Session Court তদন্ত, অনুসন্ধান, বিচার বা অন্য কোনো প্রসিডিং এর উদ্দেশ্যে ডাক বা টেলিগ্রাম কর্তৃপক্ষকে কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির নিকট কোনো দলিল, পার্সেল বা কোনো বস্তু অর্পণ করার নির্দেশ দিতে পারেন।

(২) EM/JM/Police Commissioner/District SP এর নিকট কোনো দলিল, পার্সেল বা কোনো বস্তু আটক করা প্রয়োজন হইলে তিনি DM/CJM/CMM/Other Court এর নির্দেশ সাপেক্ষে ডাক বা তার বিভাগে তল্লাশী পরিচালনা ও উক্ত দলিল, পার্সেল বা বস্তু আটক করতে পারেন।

 

ধারা ৯৬: তল্লাশি পরোয়ানা (Search Warrant) যখন জারি করা যাবে

(১) যখন কোনো ব্যক্তি ৯৪ ধারায় প্রদত্ত সমন বা আদেশ কিংবা ৯৫(১) ধারায় প্রদত্ত অনুরোধ (Requisition) অনুযায়ী দলিল বা বস্তু দাখিল করবেনা অথবা মামলার স্বার্থে তল্লাশী বা পরিদর্শন প্রয়োজন বলে আদালত বিশ্বাস করেন।

(২) ডাক বা তার কর্তৃপক্ষের হেফাজতে রক্ষিত দলিল বা বস্তু তল্লাশীর জন্য পরোয়ানা মঞ্জুর করবেন DM/CJM/CMM

 

তল্লাশি পরোয়ানার বিরুদ্ধে ক্ষুদ্ধ ব্যক্তির প্রতিকার রিভিশন।

 

ধারা ৯৭: পরোয়ানা (Warrant) নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা

আদালত উপযুক্ত মনে করলে কোনো নির্দিষ্ট স্থান বা উহার অংশ বিশেষ তল্লাশির জন্য সুষ্পষ্টভাবে উল্লেখ করে দিতে পারেন।

 

ধারা ৯৮: চোরাই মাল বা জাল দলিল উদ্ধারের জন্য বাড়ী তল্লাশি।

DM বা সরকার কর্তৃক বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা মহাকুমা ম্যাজিস্ট্রেট বা MM প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অবশ্যকীয় অনুসন্ধানের পর যদি বিশ্বাস করেন যে, কোনো স্থানে চোরাই মাল, অশ্লীল বস্তু, জাল দলিল, নকল সীল, জাল স্ট্যাম্প, মুদ্রা, জাল বা নকল করার যন্ত্রপাতি আছে তাহলে তিনি পরোয়ানা প্রদান করে কচষ্টেবল পদের উপরে কোনো পুলিশ কর্মকর্তাকে নিম্নলিখিত ক্ষমতা দিতে পারেন-

(ক) এইরূপ স্থানে প্রবেশ।

(খ) তল্লাশী।

(গ) দখল গ্রহণ।

(ঘ) হস্তান্তর।

(ঙ) গ্রেফতার।

 

ধারা ১০০: বেআইনিভাবে আটক ব্যক্তি উদ্ধারের জন্য তল্লাশি

বে-আইনিভাবে আটক ব্যক্তি উদ্ধারের জন্য নির্বাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তল্লাশি পরোয়ানা (Search Warrant) দিতে পারবেন।

 

ধারা ১০৩: সাক্ষীর উপস্থিতিতে তল্লাশি করতে হবে

তল্লাশি কার্যক্রম উক্ত স্থানের ২ বা ততোধিক সাক্ষীর উপস্থিতিতে করতে হবে।

 

চতুর্থ ভাগ (Part- IV)

 অপরাধ দমন (Prevention of Offences)

অধ্যায়  ৮ (Chapter -VIII)

শান্তিরক্ষা ও সদাচরণের মুচলেকা

ধারা ১০৬ – ১২৬ক

 

ধারা ১০৬: দণ্ডিত হইবার পর শান্তিরক্ষার জন্য মুচলেকা (Security for keeping the peach on conviction)

কোন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দন্ড দানের সময় বিচারিক আদালত (হাইকোর্ট, দায়রা আদালত, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা ১ম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট) প্রয়োজন মনে করিলে উক্ত দন্ডিত ব্যক্তির নিকট হইতে অনধিক ৩ বছরের জন্য জামিনদার সহ বা ব্যতীত (With or without sureties) শান্তিরক্ষার  মুচলেকা (Bond) নিতে পারিবেন।

 

ধারা ১০৭: অন্যান্য ক্ষেত্রে শান্তিরক্ষা  সদাচরণের জন্য মুচলেকা (Security for keeping the peace in other cases)

কোন ব্যক্তির দ্বারা শান্তি ভঙ্গ হইতে পারে অথবা জনসাধারণের প্রশান্তি বিনষ্ট হইতে পারে এইরূপ সম্ভাবনা থাকিলে উক্ত ব্যক্তিকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (District Magistrate) বা অন্য কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (Executive Magistrate) অনধিক ১ বছরের জন্য শান্তিরক্ষার জন্য জামিনদার সহ বা ব্যতীত মুচলেকা (Bond) সম্পাদনের আদেশ দিতে পারিবেন।

 

ধারা ১০৮: রাষ্ট্রদ্রোহমূলক বিষয় প্রচারকের নিকট হইতে সদাচরণের মুচলেকা

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (District Magistrate) বা অন্য কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (Executive Magistrate) রাষ্ট্রদ্রোহমূলক বিষয় প্রচারকের নিকট হইতে অনধিক ১ বছরের জন্য শান্তিরক্ষার জন্য জামিনদার সহ বা ব্যতীত (With or without sureties) মুচলেকা (Bond) সম্পাদনের আদেশ দিতে পারিবেন।

 

ধারা ১০৯: ভবঘুরে  সন্দেহজনক ব্যক্তির সদাচরণের মুচলেকা

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (District Magistrate) বা অন্য কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (Executive Magistrate) ভবঘুরে ও সন্দেহজনক ব্যক্তির নিকট হইতে অনধিক ১ বছরের জন্য শান্তিরক্ষার জন্য জামিনদার সহ (With sureties) মুচলেকা (Bond) সম্পাদনের আদেশ দিতে পারিবেন।

 

ধারা ১১০: অভ্যাসগত অপরাধীদের নিকট হইতে সদাচরণের জন্য মুচলেকা

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (District Magistrate) বা অন্য কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (Executive Magistrate) অভ্যাসগত অপরাধীদের নিকট হইতে অনধিক ৩ বছরের জন্য শান্তিরক্ষার  মুচলেকা নিবেন।

 

ধারা ১১৪: আদালতে অনুপস্থিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে সমন (Summon) বা পরোয়ানা (Warrant)

এইরূপ ব্যক্তি আদালতে হাজির না থাকিলে ম্যাজিস্ট্রেট তাহাকে আদালতে হাজির করার জন্য সমন (Summon) বা পরোয়ানা (Warrant) দিবেন।

 

অধ্যায়  ৯

বে-আইনী সমাবেশ  

ধারা ১২৭ – ১৩২

 

ধারা ২৭: ম্যাজিস্ট্রেট অথবা পুলিশ কর্মকর্তার আদেশে সমাবেশ ছত্রভঙ্গ হবে।

কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (Executive Magistrate) অথবা কোনো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (Officer in Charge/ OC) কোনো বেও-আইনী সমাবেশ অথবা সর্ব সাধারণের শান্তি বিনষ্ট ঘটাইতে পারে এইরূপ পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত কোনো সমাবেশের প্রতি ছত্রভঙ্গ হবার আদেশ দিতে পারিবেন।

 

ধারা ২৮: সমাবেশের জন্য অসামরিক শক্তি প্রয়োগ (Use of civil force to disperse)

সমাবেশ ছত্রভঙ্গ হবার আদেশ প্রাপ্তির পর ছত্রভঙ্গ না হইলে কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (Executive Magistrate) অথবা কোনো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (Officer in Charge/ OC) বলুপূর্বক উক্ত সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য অগ্রসর হইতে পারিবেন।

 

ধারা ২৯: সামরিক শক্তি প্রয়োগ (Use of military force)

এইরূপ কোনো সমাবেশ যদি অপর কোনো উপায়ে ছত্রভঙ্গ করা না যায় এবং জন নিরাপত্তার জন্য উহা ছত্রভঙ্গ করা আবশ্যক বলে গণ্য হয়, তাহলে উপস্থিত সর্বোচ্চ পদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (Executive Magistrate) অথবা মহানগরী এলাকার পুলিশ কমিশনার সামরিক শক্তি দ্বারা উহা ছত্রভঙ্গ করার ব্যবস্থা করিতে পারিবেন।

ধারা ৩০: জন সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক আহুত বাহিনীর অধিনায়কের কর্তব্য।

কোনো সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ করা হইলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কমিশন বা নন-কমিশন কর্মকর্তা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (Executive Magistrate) পুলিশ কমিশনারের নির্দেশ অনুযায়ী সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের গ্রেফতার করিতে পারিবেন।

 

ধারা ৩২: এই অধ্যায়ের আওতায় কৃতকার্যের জন্য ফৌজদারীতে সোপর্দকরণের বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ।

সরকারের মঞ্জুর ছাড়া কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই অধ্যায়ের অধীনকৃত বলিয়া গণ্য কোনো কার্যের জন্য কোনো ফৌজদারী আদালতে মামলা করা যাইবে না।

 

অধ্যায়  ১০

জনসাধারণের উৎপাত (Public Nuisance)  

ধারা ১৩২ক  – ১৪৩

 

ধারা ৩২ক: এই অধ্যায়ের বিধানসমূহ মহানগরী এলাকায় প্রযোজ্য হইবে না।

 

ধারা ৩৩: উৎপাত অপসারণের জন্য শর্তসাপেক্ষ আদেশ (Conditional order to remove nuisance)

কোনো জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (District Magistrate) বা অন্য কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (Executive Magistrate) পুলিশ রিপোর্ট বা অন্য কোনো সংবাদ পাইয়া আবশ্যক মনে করলে নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য শর্ত সাপেক্ষ আদেশ দিতে পারিবেন।

(ক) পথ, নদী, খাল বা কোনো প্রকাশ্য স্থান হইতে অবৈধ বাধা অপসারণ;

(খ) ব্যবসা, পেশা বা পণ্য দ্রব্যের সংরক্ষণ পার্শ্ববর্তী বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য বা শারিরীক আরাম আয়েসের পক্ষে ক্ষতিকর হইলে;

(গ) গৃহ, তাবু, কাঠামো বা কোনো বৃক্ষ ঝুকিপূর্ণ হইলে;

(ঘ) পুকুর, কূপ বা খন্দকের চারিদিকে ঘেরা দেওয়া আবশ্যক হইলে;

 

অধ্যায়  ১১

উৎপাত বা আসন্ন বিপদের জরুরী ক্ষেত্রে অস্থায়ী আদেশ (Order absolute at once in urgent)

ধারা ১৪৪

 

ধারা ১৪৪: উৎপাত বা আশংকিত বিপদের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ আদেশ জারির ক্ষমতা।

জনগণের স্বাস্থ্য, স্বার্থ, নিরাপত্তার ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা থাকলে কিংবা সরকারী কাজে রত কোনো ব্যক্তির প্রতি বাধা সৃস্টির আশংকা থাকলে ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য সম্পূর্ণ আদেশ জারি করতে পারবেন।

 

এই ধারা অনুযায়ী আদেশ জারি করবেন-

  • জেলা ম্যাজিস্ট্রেট(District Magistrate / DM) নিজে বা
  • জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট(Executive Magistrate) কিংবা
  • সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট(Executive Magistrate)।

 

জমি ইত্যাদি ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য এই ধারায় অস্থায়ী আদেশ প্রদান করা হয়।

এই আদেশ জারির পর সরকারী কোনো গেজেট নোটিফিকেশন ছাড়া আদেশটি ২ মাসের বেশি বলবত থাকবে না।

মহানগরে এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না। মহানগরে ১৪৪ ধারার অনুরুপ বিধান প্রয়োগ করবেন মহানগর পুলিশ কমিশনার PRP মোতাবেক।

 

অধ্যায়  ১২

স্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কিত বিরোধ (Dispute concerning immovable property)  

ধারা ১৪৫ – ১৪৮

 

ধারা ১৪৫: জমি ইত্যাদি ক্ষেত্রে বা স্থাবর সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধের নিষ্পত্তির জন্য আদেশ জারি।

জমি ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে কোনো বিরোধের সম্ভাবনা থাকলে ম্যাজিস্ট্রেট আদেশ জারি করবেন।

 

জমি ইত্যাদি বলতে বুঝায় বাড়ি, ঘর, হাট, বাজার, জমিতে উৎপাদিত ফসল, মৎসক্ষেত্র ইত্যাদি।

 

এই ধারা অনুযায়ী আদেশ জারি করবেন-

  • জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিজে কিংবা
  • সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

সম্পত্তি থেকে বেদখল হওয়ার দিন থেকে ২ মাসের মধ্যে এই আদেশে আবেদন করতে হবে।

এই ধারার আদেশ এখতিয়ার সম্পন্ন আদালত কর্তৃক সিদ্ধান্ত নে দেওয়া পর্যন্ত বলবত থাকবে।

এই আদেশ মহানগরের ভিতরে এবং বাহিরে সব জায়গায়ই প্রযোজ্য।

 

ধারা ১৪৪ ও ধারা ১৪৫ এর পার্থক্যঃ

ক্রঃ ধারা ১৪৪ ক্রঃ ধারা ১৪৫
১। DM নিজে অথবা DM/ সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এই ধারায় আদেশ দিতে পারেন। ১। DM নিজে অথবা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এই ধারায় আদেশ দিতে পারেন।
২। মহানগরের বাহিরে এই ধারা প্রযোজ্য হবে। মহানগরের ভিতরে PRP মোতাবেক আদেশ হবে। ২। মহানগরের ভিতরে এবং বাহিরে এই ধারা প্রযোজ্য হবে।
৩। অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ৩। স্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
৪। গেজেট নোটিফিকেশন ছাড়া ২ মাসের বেশি বলবত থাকবে না। ৪। এখতিয়ার সম্পন্ন আদালত কর্তৃক সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত বলবত থাকবে।
৫। জমি ইত্যাদি ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে শান্তি ভঙ্গের আশঙ্কা থাকলে। ৫। জমি ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে শান্তি ভঙ্গের আশঙ্কা থাকলে।
৬। সম্পত্তি ক্রোক বা রিসিভার নিয়োগের বিধান নাই। ৬। সম্পত্তি ক্রোক বা রিসিভার নিয়োগের বিধান আছে।
৭। কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। ৭। সম্পত্তি ক্রোক বা রিসিভার নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়।
৮। সন্তুষ্ট হলে ম্যাজিস্ট্রেট নিজে ব্যাবস্থা নিতে পারেন। ৮। পুলিশ না অন্য কোন উপায়ে সংবাদ পেলে ম্যাজিস্ট্রেট ব্যাবস্থা গ্রহণ করেন।

 

ধারা ১৪৬: বিরোধীয় সম্পত্তি ক্রোক করার ক্ষমতা

ম্যাজিস্ট্রেট কোনো সম্পত্তি ক্রোক (Attachment) করলে তাহা দেখাশুনার জন্য তত্তাবধায়ক (Receiver) নিয়োগ করবেন।

 

ধারা ১৪৮: স্থানীয় অনুসন্ধান (Local Inquiry).

জনগণের স্বাস্থ্য, স্বার্থ, নিরাপত্তার ব্যাঘাত বা জমি ইত্যাদি বিরোধের ক্ষেত্রে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট  তার অধীনস্ত অন্য কোনো ম্যাজিস্ট্রেটকে স্থানীয় অনুসন্ধানের জন্য প্রেরণ করেতে পারবেন।

 

অধ্যায়  ১৩

পুলিশের নিবারণমূলক ব্যবস্থা (Preventive measures of police)  

ধারা ১৪৯  – ১৫৩

 

ধারা ১৫১: আমলযোগ্য অপরাধ নিবারণকল্পে গ্রেফতার।

গ্রেফতার ছাড়া আমলযোগ্য অপরাধ নিবারণ সম্ভব না হলে পুলিশ বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারবে।

 

ধারা ১৫২: সরকারী সম্পত্তির ক্ষতি নিরোধ।

সরকারী কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষতি নিরোধ করার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি প্রয়োগ করতে পারবে।

 

ধারা ১৫৩: ওজন ও পরিমাপের সরঞ্জাম পরীক্ষা।

থানার OC মিথ্যা ওজন ও পরিমাপের সরঞ্জামের সংবাদ পেলে তল্লাশী পরোয়ানা ছাড়াই উক্ত স্থানে গমন করতে পারবেন এবং উক্ত যন্ত্রপাতি আটক করতে পারবেন।

 

অধ্যায়  ১৪

পুলিশের তদন্তের ক্ষমতা (Investigating power of police)  

ধারা ১৫৪ – ১৭৬

 

ধারা ১৫৪: আমলযোগ্য মামলার সংবাদ/এজাহার/ FIR/ GR Case/ Cognizable Offence.

আমলযোগ্য কোনো অপরাধের সংবাদ থানার ওসিকে মৌখিকভাবে দেওয়া হলে তিনি উহা লিখে নিবেন, পড়ে শুনাবেন এবং সংবাদদাতার স্বাক্ষর নিবেন। অত:পর ওসি সরকারের নির্ধারিত ফরমে উহার সারমর্ম লিপিবদ্ধ করবেন।

 

[এজাহার: আমলযোগ্য কোনো অপরাধের সংবাদ থানার ওসিকে যেকোনো ব্যক্তি লিখিত অথবা মৌখিকভাবে দিতে পারবেন। লিখিত হলে স্বাক্ষরসহ দিতে হবে। মৌখিক হলে ওসি তাহা লিপিবদ্ধ করবেন এবং সেখানে সংবাদদাতার স্বাক্ষর নিবেন। থানার ওসিকে প্রদত্ত আমলযোগ্য অপরাধের সংবাদের এই লিখিত রুপটিকেই বলা হয় এজাহার।

FIR: এজাহার পাবার পর ওসি সরকারের নির্ধারিত ফরমে উক্ত এজাহারের সারমর্ম, সংশ্লিষ্ট আইন এবং ধারাসহ লিপিবদ্ধ করবেন এবং নিজে স্বাক্ষর করবেন। ইহাকে বলা হয় FIR. ]

 

[এজাহার যেকোনো ব্যক্তি দায়ের করতে পারবেন। এজাহার দায়েরের কোনো তামাদি সময় নাই। এজাহারের সাক্ষ্যগত কোনো মূল্য নাই। টেলিফোনের সংবাদ এজাহার নয়। ]

 

ধারা ১৫৫: আমলের অযোগ্য মামলার সংবাদ বা তদন্ত/ Non FIR Case/ Non GR Case/ Non Cognizable Offence।

১। আমলের অযোগ্য অপরাধের সংবাদ থানার ওসিকে দেওয়া হলে ওসি থানায় রক্ষিত নির্ধারিত বহিতে লিপিবদ্ধ করবেন এবং সংবাদদাতাকে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট প্রেরণ করবেন।

২। ১ম বা ২য় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ ছাড়া কোনো পুলিশ কর্মকর্তা আমলের অযোগ্য অপরাধের তদন্ত করবেন না।

৩। এই রুপে আদেশ প্রাপ্ত যেকোনো পুলিশ কর্মকর্তা ওসির সমান ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন (বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার ব্যতীত)

 

ধারা ১৫৬: আমলযোগ্য মামলার তদন্ত

আমলযোগ্য কোনো অপরাধের সংবাদ পেলে থানার ওসি বা অন্য কোনো পুলিশ অফিসার ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ ছাড়াই তদন্ত করতে পারবেন এবং আসামীকে গ্রেফতার করতে পারবেন।

 

ধারা ১৫৭: আমলযোগ্য অপরাধ সম্পর্কে সন্দেহ হলে পদ্ধতি।

আমলযোগ্য অপরাধ সম্পর্কে সন্দেহ হলে পুলিশ অফিসার ম্যাজিস্ট্রেটকে অবহিত করবেন এবং ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশের অপেক্ষা না করে ঘটনাস্থলে যাবেন এবং আসামীকে আসামীকে গ্রেফতার করতে পারবেন।

 

ধারা ১৫৯: ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক অনুসন্ধানের ক্ষমতা।

 

ধারা ১৬০: পুলিশ অফিসার কর্তৃক থানায় সাক্ষী তলবের ক্ষমতা।

সংঘটিত কোনো অপরাধ সম্পর্কে কোনো ব্যক্তি অবগত আছেন বলে পুলিশ অফিসার মনে করলে উক্ত ব্যক্তিকে সাক্ষী হিসাবে তলব করতে পারবেন। যাকে তলব করা হবে তিনি সংগত কারণ ছাড়া হাজির হতে বাধ্য থাকবেন।

 

ধারা ১৬১: পুলিশ কর্তৃক সাক্ষীদের পরীক্ষা/ জবানবন্দী

পুলিশ অফিসার কর্তৃক জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তরে সাক্ষীর নিজের জড়ানোর সম্ভাবনা না থাকলে সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য থাকবেন।

এই ধারা মোতাবেক গৃহীত বিবৃতি আদালতে অপ্রাসঙ্গিক।

 

ধারা ১৬২: পুলিশের নিকট প্রদত্ত জবানবন্দীতে সাক্ষীর স্বাক্ষর অপ্রয়োজনীয়

পুলিশের নিকট প্রদত্ত বিবৃতিতে বিবৃতিদানকারী স্বাক্ষর করবেন না বা তাকে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করা যাবে না।

 

ধারা ১৬৩: সাক্ষীকে জবানবন্দী প্রদানের জন্য প্রলোভন, ভীতি বা প্রতিশ্রুতির প্রস্তাব দেয়া যাবে না

১৬১ ধারা মোতাবেক পরীক্ষার সময় কোনো প্রলোভন, ভীতি প্রদর্শন বা প্রতিশ্রুতির প্রস্তাব দেয়া যাবে না।

 

ধারা ১৬৪: বিবৃতি এবং দোষ স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধকরণের ক্ষমতা 

সাক্ষীর বিবৃতি (Statements) এবং আসামীর দোষ স্বীকারোক্তি (Confessions) লিপিবদ্ধ করবেন-

  • মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট
  • ১ম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট বা
  • সরকার দ্বারা বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত ২য় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট।

 

বিবৃতি ও স্বীকারোক্তিতে স্বাক্ষর করবেন-

  • বিবৃতিদানকারী বা স্বীকারোক্তিদানকারী এবং
  • ম্যাজিস্ট্রেট।

এই ধারায় প্রদত্ত বিবৃতি ও স্বীকারোক্তি আদালতে প্রাসঙ্গিক।

[ CMM, ACMM, MM, CJM, ACJM প্রত্যেকে ১ম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট ]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *