ফৌজদারী কার্যবিধির সহজ নোট (ধারা ৩৭৪-৫৬১ক)

ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮

The Code of Criminal Procedure, 1898

 

অধ্যায়  ২৭

দন্ড অনুমোদনের জন্য পেশ

ধারা ৩৭৪ – ৩৭৯

 

ধারা ৩৭৪: দায়রা আদালতের মৃত্যুদণ্ডাদেশ হাইকোর্টে পেশ

৩৬৮ ধারা মোতাবেক দায়রা আদালত মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিলে তাহা অনুমোদনের জন্য হাইকোর্ট বিভাগে পেশ করবেন। হাইকোর্ট বিভাগের অনুমতি ছাড়া সাজা বলবত করা যাবে না।

(Death Reference)

 

ধারা ৩৭৫: অতিরিক্ত অনুসন্ধান বা অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণের ক্ষমতা।

৩৭৪ ধারা মোতাবেক হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য পাঠানো হলে হাইকোর্ট অতিরিক্ত অনুসন্ধান বা অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণ করতে পারবেন।

 

ধারা ৩৭৬: হাইকোর্ট কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন

হাইকোর্ট বিভাগ দণ্ডাদেশ মঞ্জুর বা বাতিল করতে পারবেন।

 

অধ্যায়  ২৮

দন্ড কার্যকরীকরণ    

ধারা ৩৮১ – ৪০০

 

ধারা ৩৮১: ৩৭৬ ধারায় প্রদত্ত আদেশ কার্যকরণ।

হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন পাবার পর দায়রা আদালত মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করতে পারবেন।

 

ধারা ৩৮২: গর্ভবতী স্ত্রীলোকের মৃত্যুদণ্ড স্থগিতকরণ।

আসামী গর্ভবতী হলে হাইকোর্ট স্ত্রীলোকটির মৃত্যুদন্ড স্থগিত রাখতে পারেন বা যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিতে পারেন।

 

ধারা ৩৮৫: পরোয়ানা কার কাছে দিতে হবে।

আসামী বন্দী হলে পরোয়ানা কারারক্ষকের নিকট পাঠাতে হবে।

 

ধারা ৩৮৬: অর্থ আদায়ের ক্ষেত্রে পরোয়ানা কালেক্টরের নিকট পাঠাতে হবে।

 

ধারা ৩৯২: বেত্রদন্ড দিবার পদ্ধতি।

বেত্রাঘাতের সংখ্যা ৩০ এর অধিক হবে না। আসামীর বয়স ১৬ বছরের নিচে হলে ১৫ এর অধিক হবে না।

 

ধারা ৩৯৩: কিস্তিতে কার্যকর করা যাবে।

বেত্রদন্ড কিস্তিতে কার্যকর করা যাবে না। নিম্নলিখিত ব্যক্তিগণ বেত্রদন্ড হিতে রেহাই পাবে –

  • স্ত্রীলোক
  • মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা ৫ বছরের অধিক কারাদন্ড প্রাপ্ত পুরুষ ব্যক্তি।
  • আদালতের দৃষ্টিতে যাহার বয়স ৪৫ বছরের অধিক।

 

ধারা ৩৯৯: তরুণ অপরাধীকে সংশোধনাগারে আটক রাখা

দন্ডপ্রাপ্ত আসামী ১৫ বছরের কম বয়স্ক হলে আদালত আসামীকে সাধারণ কারাগারে প্রেরণ না করে সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো সংশোধনাগারে প্রেরণ করবেন। যেখানে উপযুক্ত শিক্ষা ও শৃংখলার শিক্ষা বিদ্যমান আছে।

 

ধারা ৪০০: দন্ড কার্যকর করার পর ফেরত।

৩৮১ ধারা কিংবা অন্য কোনো ধারা মোতাবেক পরোয়ানা পাওয়ার পর দায়িত্বশীল কর্মকর্তা দন্ড কার্যকর করার পদ্ধতি উল্লেখপূর্বক প্রত্যয়ন করে পরোয়ানাটি ইস্যুকারী আদালতে ফেরত পাঠাবেন।

 

অধ্যায়  ২৯

সাজা স্থগিত, মওকুফ ও রদবদল    

ধারা ৪০১ – ৪০২ক

ধারা ৪০১: দন্ড স্থগিত বা মওকুফ করার ক্ষমতা।

(১) সরকার বিনা শর্তে বা আসামী যেই শর্তে সম্মত সেই শর্তে দন্ড স্থগিত বা সম্পূর্ণ বা আংশিক মওকুফ করতে পারেন।

(২) শর্তাধীনে দন্ড স্থগিত বা মওকুফ করা হলে শর্ত লংঘন করলে সরকার দন্ড স্থগিত বা মওকুফ আদেশ প্রত্যাহার করতে পারবেন।

(৩) সরকার দন্ড স্থগিত বা মওকুফ আদেশ প্রত্যাহার করলে যেকোনো পুলিশ অফিসার আসামীকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারবেন।

 

ধারা ৪০২: দন্ড রদ বদলের ক্ষমতা।

সরকার দন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির সম্মতি ছাড়া নিম্নলিখিত পরবর্তী দন্ড প্রদান করেত পারবেন –

মৃত্যুদন্ড, যাবজ্জীবন কারাদন্ড, সশ্রম কারাদন্ড, বিনাশ্রম কারাদন্ড, অর্থদন্ড।

 

ধারা ৪০২ক: মৃত্যুদন্ড।

৪০১ ও ৪০২ ধারায় সরকারকে প্রদত্ত ক্ষমতা মৃত্যুদন্ডের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতিও প্রয়োগ করতে পারবেন।

 

অধ্যায়  ৩০

পূর্ববর্তী খালাস বা দন্ডাদেশ    

ধারা ৪০৩

 

ধারা ৪০৩: একবার দন্ড বা খালাস প্রাপ্ত ব্যক্তির একই অপরাধের জন্য পুনরায় বিচার করা যাবে না

একটি অপরাধের জন্য কোনো ব্যক্তিকে দন্ড বা খালাস দেওয়া হলে একই অপরাধের জন্য পুনরায় তাহার বিচার করা যাবে না।

ব্যতিক্রম:

(ক) একটি অপরাধ হতে পরবর্তীতে আরেকটি অপরাধের সৃষ্টি হলে পরবর্তী অপরাধের পুনরায় বিচার করা যাবে।

[ যেমন গুরুতর আঘাতের ফলে শাস্তি দেওয়ার পর আঘাত প্রাপ্ত ব্যক্তি মারা গেলে আবার খুনের মামলা করা যাবে।]

(খ) একাধিক অপরাধের একটির বিচার করা হলে পরবর্তীতে অন্য গুলির বিচার করা যাবে।

[ খুনসহ ডাকাতির ক্ষেত্রে খুনের মামলা করা হলে পরবর্তীতে ডাকাতির মামলা করা যাবে।]

 

[Same as in CPC Sec 11, Evidence Sec 40, Constitution Art 35]

[Doctrine of Double Jeopardy]

 

অধ্যায়  ৩১

আপীল    

ধারা ৪০৪ – ৪৩১

 

ধারা ৪০৪: অপর কোনো ভাবে বিধান না থাকলে আপীল চলবে না

এই আইন বা বর্তমানে কার্যকর অন্য কোনো আইনে আপীলের বিধান না থাকলে ফৌজদারী আদালতের কোনো রায় বা আদেশের বিরুদ্ধে আপীল করা যাবে না।

 

ধারা ৪০৫: ক্রোককৃত সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের আবেদন অগ্রাহ্য হলে আপীল

ক্রোককৃত সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের জন্য ৮৯ ধারায় কৃত আবেদন আদালত নাকচ (Reject) করলে আপীলযোগ্য আদালতে আপীল করা যাবে।

 

ধারা ৪০৬: শান্তিরক্ষা বা সদাচরণের মুচলেকার বিরুদ্ধে আপীল

কোনো ম্যাজিস্ট্রেট শান্তিরক্ষা বা সদাচরণের জন্য জামানত প্রদানের আদেশ দিলে উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে আপীল আপীল দায়রা আদালতে।

 

ধারা ৪০৬ক: জামানত গ্রহণ করতে অস্বীকার/ নাকচ করার আদেশের বিরুদ্ধে আপীল

১২২ ধারায় জামানত অস্বীকার/ নাকচ আদেশের বিরুদ্ধে আপীল পারবেন –

(ক) CMM/CJM/DM এর বিরুদ্ধে আপীল দায়রা আদালতে।

(খ) MM এর বিরুদ্ধে আপীল CMM আদালতে।

(গ) জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে আপীল CJM আদালতে।

(ঘ) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে আপীল DM আদালতে।

 

ধারা ৪০৭: ২য় বা ৩য় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট প্রদত্ত দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপীল

২য় বা ৩য় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট প্রদত্ত দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপীল CJM আদালতে।

 

ধারা ৪০৮: যুগ্ম দায়রা জজ  প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপীল

  • যুগ্মদায়রা জজ প্রদত্ত ৫ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড এবং ১ম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপীল দায়রা আদালতে।
  • যুগ্মদায়রা জজের ৫ বছরের অধিক কারাদন্ডের বিরুদ্ধে আপীল হাইকোর্ট বিভাগে।
  • ১ম শ্রেণীরম্যাজিস্ট্রেটের রাষ্ট্রদ্রোহিতার (PC Sec-124A) দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপীল হাইকোর্ট বিভাগে।

 

ধারা ৪০৯: যেভাবে দায়রা আদালতে আপীল শুনানী হয়।

দায়রা আদালতে আপীল শুনানী করবেন দায়রা জজ কিংবা দায়রা জজ কর্তৃক প্রেরিত হলে অতিরিক্ত দায়রা জজ।

 

ধারা ৪১০: দায়রা আদালত প্রদত্ত দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপীল

দায়রা আদালত বা অতিরিক্ত দায়রা আদালত প্রদত্ত দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপীল হাইকোর্টে ।

 

ধারা ৪১২: আসামী দোষ স্বীকার করলে আপীল চলবে না।

আসামীর দোষ স্বীকারের ভিত্তিতে দায়রা আদালত/ CJM/ MM/ ১ম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট দণ্ডাদেশ দিলে দন্ডের বৈধতা বা পরিমাণ ব্যতীত আপীল চলবে না।

 

ধারা ৪১৩: তুচ্ছ মামলায় (Petty Case) আপীল নাই।

তুচ্ছ মামলায় প্রদত্ত দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপীল করা যাবে না।

ব্যাখ্যা:

আদালত শুধুমাত্র জরিমানা দিলে এবং উক্ত জরিমানা প্রদানে ব্যর্থতার জন্য কারাদন্ড দিলে উক্ত দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপীল করা যাবে না।

 

ধারা ৪১৪: সংক্ষিপ্ত বিচারে (Summary Trial) কতিপয় দন্ডের বিরুদ্ধে আপীল নাই।

সংক্ষিপ্ত বিচারে ২৬০ ধারায় ক্ষমতাবান ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক অনধিক ২০০ টাকা জরিমানার বিরুদ্ধে আপীল করা যাবে না।

[এই ক্ষেত্রে প্রতিকার রিভিশন]

 

সংক্ষিপ্ত বিচারে আপীল করা যায় –

  • ২০০ টাকার অধিক জরিমানা হলে।
  • যেকোনো কারাদন্ড হলে।

 

ধারা ৪১৭: খালাসের ক্ষেত্রে আপীল

(১) GR মামলায় সরকার নির্দেশ দিলে PP মূল বা আপীলে খালাসের বিরুদ্ধে আপীল করতে পারবেন –

ক) দায়রা আদালত (দায়রা/অতিরিক্ত দায়রা/যুগ্ম দায়রা) এর খালাসের বিরুদ্ধে – হাইকোর্ট বিভাগে।

খ) ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল বা আপীলে খালাসের আদেশের বিরুদ্ধে আপীল – দায়রা আদালতে।

 

(২) CR মামলায় ফরিয়াদি মূল মামলায় খালাসের বিরুদ্ধে আপীল করতে পারবেন –

ক) দায়রা আদালত (দায়রা/অতিরিক্ত দায়রা/যুগ্ম দায়রা) এর খালাসের বিরুদ্ধে – হাইকোর্ট বিভাগে।

খ) ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের খালাসের বিরুদ্ধে আপীল – দায়রা আদালতে।

 

(৩) CR মামলায় হাইকোর্টে ফরিয়াদির আপীলের তামাদি সময় ৬০ দিন।

[ PP এর আপীলের তামাদি সময় ৬ মাস – তামাদি আইন অনুচ্ছেদ ১৫৭]

(৪) খালাশের আদেশের বিরুদ্ধে আপীল গৃহীত না হলে আপীল করা চলবে না।

 

ধারা ৪১৭(ক): অপর্যাপ্ত দন্ডের বিরুদ্ধে আপীল

ধারা ৪১৭(ক)(১): GR মামলায় PP অপর্যাপ্ত দন্ডের বিরুদ্ধে আপীল করবেন হাইকোর্ট বিভাগে।

ধারা ৪১৭(ক)(২): CR মামলায় ফরিয়াদি অপর্যাপ্ত দন্ডের বিরুদ্ধে আপীল করবেন আপীল এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতে। অপর্যাপ্ত দন্ডের বিরুদ্ধে ফরিয়াদির আপীলের তামাদি সময় ৬০ দিন।

[অপর্যাপ্ত দন্ডের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপীলের তামাদি সময় ৬০ দিন – তামাদি আইন অনু: ১৫৫]

 

ধারা ৪১৮: যেসকল বিষয়ে আপীল গ্রহণযোগ্য।

২ টি বিষয়ে আপীল গ্রহণযোগ্য হবে –

  • আইনগত (Matter of Law)বিষয়ে ও
  • তথ্যগত(Matter of Fact) বিষয়ে।

 

ধারা ৪১৯: আপীলের আবেদন।

ফৌজদারী আপীলের আবেদন করতে হবে লিখিত দরখাস্তের মাধ্যমে। দরখাস্তের সাথে সংশ্লিষ্ট রায় বা আদেশের কপি সংযোজন করতে হবে।

[দেওয়ানী আপীলের আবেদন করতে হবে মেমোরেন্ডামের মাধ্যম, CPC আদেশ ৪১(১) ]

 

ধারা ৪২০: আপীলকারী কারাগারে থাকলে পদ্ধতি।

আপীলকারী কারাগারে থাকলে আপীলের কাগজপত্র প্রস্তুত করে জেলারের নিকট অর্পণ করতে হবে। অত:পর জেলার আবেদনটি যথাযথ আদালতে প্রেরণ করেবেন।

[ আপীলের এই পদ্ধতিটিকে বলা হয় “জেল আপীল”]

 

ধারা ৪২১: আপীল সরাসরি খারিজ।

৪১৯ ও ৪২০ ধারা মোতাবেক আপীলের দরখাস্ত ও কাগজপত্র পাওয়ার পর আপীল আদালত হস্তক্ষেপ করার কারণ না থাকলে আপীল সরাসরি খারিজ করবেন।

 

ধারা ৪২২: আপীলের নোটিশ।

৪২১ ধারা মোতাবেক আপীল আদালত আপীল সরাসরি খারিজ না করলে পরবর্তী শুনানীর তারিখ নির্ধারণ করে আপীলকারী বা তাহার আইনজীবীকে নোটিশ দিবেন।

 

ধারা ৪২৩: আপীল নিষ্পত্তিতে আপীল আদালতের ক্ষমতা।

খালাসের বিরুদ্ধে ফরিয়াদি আপীল করলে আপীল আদালত –

  • আদেশ বহাল রাখতে পারেন
  • পুনর্বিচারের (Remand) জন্য প্রেরণ করতে পারেন
  • খালাস বাতিল করে দন্ডাদেশ দিতে পারেন

দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামী আপীল করলে আপীল আদালত –

  • আদেশ বহাল রাখতে পারেন
  • পুনর্বিচারের (Remand) জন্য প্রেরণ করতে পারেন
  • দন্ডাদেশ বাতিল করে খালাস  দিতে পারেন
  • দন্ড বৃদ্ধি করতে পারবেন না।

অপর্যাপ্ত দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে ফরিয়াদি বা আসামী আপীল করলে আপীল আদালত –

  • আদেশ বহাল রাখতে পারেন
  • পুনর্বিচারের (Remand) জন্য প্রেরণ করতে পারেন
  • দন্ডাদেশ বাতিল করে খালাস দিতে পারেন
  • দন্ড বৃদ্ধি করতে পারবেন।

 

ধারা ৪২৬: আপীল পেন্ডিং (চলমান) থাকলে দন্ড স্থগিত, আপীলকারীকে জামিনে মুক্তি।

(১)  নিম্ন আদালতের দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপীল করা হলে আপীল আদালত দন্ড স্থগিত রাখতে পারবেন এবং আসামীকে জামিনে বা নিজ মুচলেকায় মুক্তি দিতে পারেন।

(২) এই ধারার বিধান হাইকোর্ট বিভাগও প্রয়োগ করতে পারবেন।

(২ক) দন্ড প্রদানকারী আদালত আপীলযোগ্য মামলায় অনধিক ১ বছরের কারাদন্ড দিলে আসামীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আপীল করার জন্য নিজের দেওয়া দন্ড স্থগিত রেখে আসামীকে জামিনে মুক্তি দিতে পারবেন।

 

ধারা ৪২৮: আপীল আদালত অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণ করতে পারবেন বা গ্রহণের নির্দেশ দিতে পারবেন।

 

ধারা ৪২৯: আপীল আদালত সম সংখ্যায় বিভক্ত হলে একই আদালতের অন্য ১ জন বিচারকের নিকট পেশ করতে হবে এবং এই রায় বা আদেশ তার অভিমত অনুসারে প্রদত্ত হবে।

[ CPC Section 98]

 

ধারা ৪৩১: আপীল পন্ড/অচল (Abatement of Appeal) হওয়া।

জরিমানার বিরুদ্ধে আপীল ব্যতীত অন্যান্য আপীল আসামীর মৃত্যুতে পন্ড হয়ে যাবে।

 

অধ্যায়  ৩২

রেফারেন্স ও রিভিশন    

ধারা ৪৩২ – ৪৪২

 

ধারা ৪৩৫: রিভিশন/ নিম্ন আদালতের নথি তলব করার ক্ষমতা (revision).

হাইকোর্ট বিভাগ বা দায়রা জজ তার অধস্তন ফৌজদারী আদালত কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্তের নির্ভিলতা বা বৈধতা পরীক্ষার জন্য নথি তলব করতে পারবেন। এই ক্ষমতাকেই বলা হয় রিভিশন।

এই ক্ষমতা প্রয়োগের সময় আদালত দন্ড স্থগিত রাখতে পারেন এবং আসামীকে জামিনে বা নিজ মুচলেকায় (Bond) মুক্তি দিতে পারেন।

 

ধারা ৪৩৫(১): এই ধারার উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন কল্পে নির্বাহী বা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ সকল ম্যাজিস্ট্রেট দায়রা জজের অধ:স্তন বলে গণ্য হবেন।

 

ধারা ৪৩৬: হাইকোর্ট বিভাগ বা দায়রা জজ নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে CMM/CJM কে নিজে বা তার অধ:স্তন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা অনুসন্ধানের নির্দেশ দিতে পারবেন –

  • ২০৩ বা ২০৪(৩) ধারায় নালিশ খারিজ হলে।
  • ২০২(২খ) ধারায় আসামীকে অব্যাহতি দিলে।

 

ধারা ৪৩৮: রেফারেন্স (Reference) এখতিয়ার ছিল হাইকোর্টের।

(এই ধারা ২০০৯ সালে বাতিল করা হয়েছে)

 

ধারা ৪৩৯: হাইকোর্টের রিভিশন (Revision) ক্ষমতা।

রিভিশন ক্ষমতা প্রয়োগকালে হাইকোর্ট বিভাগ নিম্নলিখিত ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন।

(১) আপীল আদালতকে প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে।

(২) সম সংখ্যায় বিভক্ত হলে ৪২৯ ধারার বিধান প্রযোজ্য হবে।

(৩) আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে।

(৪) MM/১ম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিশন হলে তাদের এখতিয়ারের বেশি শাস্তি দিতে পারবেন না।

(৫) খালাসকে দন্ডে পরিবর্তন করতে পারবেন না।

(৬) যেক্ষেত্রে আপীল চলে কিন্তু আপীল করা হয় নাই সেক্ষেত্রে রিভিশন করা যাবে না।

 

ধারা ৪৩৯(১): দায়রা জজের রিভিশন (Revision) ক্ষমতা।

রিভিশন ক্ষমতা প্রয়োগকালে দায়রা জজ নিম্নলিখিত ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন।

(১) হাইকোর্ট বিভাগের সকল ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন।

(২) দায়রা জজের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

(৩) অতিরিক্ত দায়রা জজের নিকট প্রেরিত হলে তিনি দায়রা জজের সকল  ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন।

 

ধারা ৪৪০: পক্ষগণের বক্তব্য শ্রবণ আদালতের ইচ্ছাধীন (Optional) ক্ষমতা।

রিভিশন ক্ষমতা প্রয়োগকালে পক্ষগণের বক্তব্য শ্রবণ আদালতের ইচ্ছাধীন ক্ষমতা।

 

অধ্যায়  ৩২ক

আপীল ও রিভিশন নিষ্পত্তির সময়    

ধারা ৪৪২ক

 

ধারা ৪৪২(ক): আপীল বা রিভিশন নিষ্পত্তির সময়।

(১) আপীল আদালত নোটিশ জারির তারিখ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করবেন।

(২) রিভিশন আদালত নোটিশ জারির তারিখ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করবেন।

 

অধ্যায় – ৩৩ – বিশেষ কার্যধারা – ধারা ৪৪৩ – ৪৬৩  – বাতিল

 

অধ্যায় – ৩৪ – উম্মাদ আসামীর ক্ষেত্রে পদ্ধতি – ধারা ৪৬৪ – ৪৭৫

 

অধ্যায়  ৩৫

বিচার পরিচালনা প্রভাবিতকরণ বিষয়ক অপরাধ    

ধারা ৪৭৬ – ৪৮৭

 

ধারা ৪৭৬:  ১৯৫ ধারায় উল্লেখিত ক্ষেত্রের পদ্ধতি।

দেওয়ানী/ রাজস্ব/ ফৌজদারী আদালতের কার্যক্রমে কোনো ব্যক্তি অপরাধ করলে আদালত আবেদনক্রমে বা নিজ উদ্যোগে লিখিত ও স্বাক্ষরিত অভিযোগ এখতিয়ার সম্পন্ন ১ম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করবেন।

 

ধারা ৪৭৬(খ): আপীল।

৪৭৬ ও ৪৭৬ক ধারা মোতাবেক কোনো দেওয়ানী/ রাজস্ব/ ফৌজদারী আদালত নালিশ করতে অস্বীকার করলে এখতিয়ার সম্পন্ন আপীল আদালতে আপীল করা যাবে।

 

ধারা ৪৮০: অবমাননার কতিপয় ক্ষেত্রে পদ্ধতি।

দেওয়ানী/ রাজস্ব/ ফৌজদারী আদালত কেউ অবমাননা করলে সংশ্লিষ্ট আদালত অনধিক ২০০ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিতে পারবেন।

 

ধারা ৪৮৫: জবাব দিতে বা দলিল দাখিল করতে অস্বীকার করলে পদ্ধতি।

জবাব দিতে বা দলিল দাখিল করতে অস্বীকার করলে সংশ্লিষ্ট আদালত অনধিক ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিতে পারবেন।

 

ধারা ৪৮৫ক: সময় অনুযায়ী সাক্ষী হাজির না হলে কিংবা হাজির হয়ে আদালতের অনুমতি ছাড়া চলে গেলে সংশ্লিষ্ট আদালত সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে বিচার করবেন এবং অনধিক ২৫০ টাকা জরিমানা করবেন।

 

ধারা ৪৮৬: আদালত অবমাননার মামলায় দন্ডের বিরুদ্ধে আপীল।

৪৮০, ৪৮৫ ও ৪৮৫ক ধারায় প্রদত্ত দন্ডের বিরুদ্ধে আপীল এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতে আপীল করা যাবে।

 

অধ্যায় – ৩৬ – স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণ-পোষণ – ধারা ৪৮৮ – ৪৯০ – বাতিল

 

অধ্যায়  ৩৭

হেবিয়াস কর্পাস প্রকৃতির নির্দেশ    

ধারা ৪৯১ – ৪৯১ক

 

ধারা ৪৯১: হেবিয়াস কর্পাস প্রকৃতির নির্দেশ দানের ক্ষমতা।

[Article 102 of Constitution/ (Writ) ]

কোনো বন্দীকে হাজির করার জন্য বা মুক্তি দেওয়ার জন্য হাইকোর্ট বিভাগ নির্দেশ দিতে পারেন।

এই বিধানটি নিবারন মূলক আইনে (বিশেষ ক্ষমতা আইন) আটক ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না।

 

অধ্যায়  ৩৮

পাবলিক প্রসিকিউটর     

ধারা ৪৯২ – ৪৯৫

 

ধারা ৪৯২: পাবলিক প্রসিকিউটর (PP) নিয়োগের ক্ষমতা।

সরকার বিশেষ বা সাধারণ শ্রেণীর মামলা পরিচালনার জন্য পাবলিক প্রসিকিউটর (PP) নিয়োগ করতে পারবেন।

PP অনুপস্থিত থাকলে কিংবা নিয়োগ না হলে DM কোনো পুলিশ অফিসার বা অন্য কোনো ব্যক্তিকে মামলা পরিচালনার জন্য অফিসার নিয়োগ করবেন।

 

ধারা ৪৯৩: PP সকল আদালতে তাহার দায়িত্বে ন্যাস্ত মামলা পরিচালনা করবেন।

বেসরকারী পক্ষ কোনো আইনজীবী নিয়োগ করলে তিনি PP এর নির্দেশ মোতাবেক কাজ করবেন।

 

ধারা ৪৯৪: মামলা প্রত্যাহারের ফল।

PP মামলার যেকোনো পর্যায়ে আদালতের অনুমতি নিয়ে মামলা প্রত্যাহার করতে পারবেন। তবে-

  • চার্জ গঠনের পূর্বে করলে আসামী অব্যাহতি পাবে।
  • চার্জ গঠনের পরে করলে আসামী খালাস পাবে।

 

অধ্যায়  ৩৯

জামিন     

ধারা ৪৯৬ – ৫০২

 

ধারা ৪৯৬: যেসকল ক্ষেত্রে জামিন মঞ্জুর করা যাবে।

জামিনযোগ্য মামলায় আদালত অবশ্যই জামিন মঞ্জুর করবেন –

(১) জামিনদারের শর্তে বা

(২) নিজ মুচলেকায়

 

ধারা ৪৯৭: জামিন অযোগ্য মামলায় জামিন মঞ্জুর করা যাবে।

জামিন অযোগ্য মামলায় আসামী আদালতে হাজির হলে বা হাজির করা হলে আদালত জামিন মঞ্জুর করতে পারেন।

মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন কারাদন্ড যোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে সাধারণত জামিন দিবেন না। তবে  নিম্নের ৩ টি ক্ষেত্রে জামিন দিতে পারবেন –

(১) ১৬ বছরের কম বয়স্ক হলে

(২) নারী হলে

(৩) অসুস্থ বা অক্ষম হলে।

 

ধারা ৪৯৮: জামিন মঞ্জুর করার এবং অর্থের পরিমাণ হ্রাস করার ক্ষমতা

[আগাম জামিন (Anticipatory Bail)/ জামিনে অর্থ হ্রাস/ CR Misc]

আগাম জামিন মঞ্জুর করতে পারেন হাইকোর্ট বা দায়রা আদালত।

জামিনামার অর্থ হ্রাস করতে পারেন হাইকোর্ট বা দায়রা আদালত।

 

ধারা ৪৯৯: আসামী ও জামিনদারের মুচলেকা।

জামিনদারের শর্তে জামিন হলে জামিননামায় স্বাক্ষর করবেন জামিনদার ও আসামী।

নিজ মুচলেকায়  জামিন হলে জামিননামায় স্বাক্ষর করবেন শুধু আসামী।

 

ধারা ৫০০: হেফাজত হতে মুক্তদান।

৪৯৯ ধারায় জামিন দেওয়া হলে উক্ত আদেশ জেলারের নিকট প্রেরণ করা হলে জেলার আসামীকে মুক্তি দিবেন।

 

ধারা ৫০২: জামিনদারের অব্যাহতি।

জামিনদার যেকোনো সময় যেকোনো ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট জামিন হতে অব্যাহতির আবেদন করতে পারবেন।

(১) এইরূপ আবেদন পেলে ম্যাজিস্ট্রেট গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করবেন।

(২) আসামী হাজির হলে মুচলেকাটি বাতিল করবেন এবং আসামীকে জামিন সংগ্রহ করতে বলবেন। ব্যর্থ হলে হাজতে পাঠাবেন।

 

অধ্যায়  ৪০ – সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণের জন্য কমিশন – ধারা ৫০৩ – ৫০৮ক

 

অধ্যায়  ৪১ – সাক্ষের বিশেষ বিধিমালা – ধারা ৫০৯ – ৫১২

 

অধ্যায়  ৪২

জামিননামা সংক্রান্ত বিধান     

ধারা ৫১৩ – ৫১৬

 

ধারা ৫১৪: জামিননামা বাজেয়াপ্তিতে পদ্ধতি (Forfeiture of bond).

জামিননামা বাজেয়াপ্ত হলে আদালত জামিনদারকে জামিনে উল্লেখিত অর্থ জমা দেওয়ার নির্দেশ দিবেন। ব্যর্থ হলে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিবেন।

অর্থ জমা না দিলে বা কারণ দর্শাতে না পারলে জামিনদারের অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও নিলামের আদেশ দিবেন।

ক্রোক ও নিলামের দ্বারা টাকা আদায় সম্ভব না হলে অনধিক ৬ মাসের দেওয়ানী কয়েদে আটকের আদেশ দিবেন।

আদালত জামিননামার অর্থ আংশিক মওকুফ করতে পারবেন।

জামিননামা বাজেয়াপ্ত হবার পূর্বে দায়ী ব্যক্তি মারা গেলে তার সম্পত্তি দায় মুক্ত হবে। বাজেয়াপ্ত হবার পর মারা গেলে তার সম্পত্তি দায় মুক্ত হবে না।

 

ধারা ৫১৫: ৫১৪ ধারার আদেশের বিরুদ্ধে আপীল ও রিভিশন।

আপীল:

(১) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদেশ দিলে আপীল হবে DM এর নিকট।

(২) জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদেশ দিলে আপীল হবে দায়ারা আদালতে।

(৩) MM আদেশ দিলে আপীল হবে মহানগর দায়ারা আদালতে।

 

রিভিশন:

উপরোক্ত ক্ষেত্রে আপীল করা না হলে রিভিশন করা যাবে।

(১) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদেশ দিলে রিভিশন হবে DM এর নিকট।

(২) জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদেশ দিলে আপীল হবে CJM এর নিকট।

(৩) MM আদেশ দিলে আপীল হবে CJM এর নিকট।

 

অধ্যায়  ৪৩

সম্পত্তির হস্তান্তর     

ধারা ৫১৬ক – ৫২৫

 

ধারা ৫২২: স্থাবর সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের ক্ষমতা।

অপরাধমূলক বল প্রয়োগ বা শক্তি প্রদর্শন বা ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে স্থাবর সম্পত্তি হতে দখলচ্যুত করা হলে আদালত দন্ডদানের তারিখ হতে ১ মাসের মধ্যে দখল প্রদানের নির্দেশ দিবেন।

 

অধ্যায়  ৪৪

ফৌজদারী মোকদ্দমা স্থানান্তর     

ধারা ৫২৫ক – ৫২৮

 

ধারা ৫২৫ক: আপীল বিভাগের মামলা বা আপীল স্থানান্তরের ক্ষমতা।

আপীল বিভাগ ন্যায়বিচার বা পক্ষগণের সাধারণ সুবিধার উদ্দেশ্যে মামলা বা আপীল স্থানান্তর করতে পারবে –

  • হাইকোর্টের এক স্থায়ী বেঞ্চ থেকে অন্য স্থায়ী বেঞ্চে।
  • এক ফৌজদারী আদালত হতে অন্য ফৌজদারী আদালত।

 

ধারা ৫২৬: হাইকোর্ট বিভাগের মামলা স্থানান্তরের ক্ষমতা।

হাইকোর্ট বিভাগ এক ফৌজদারী আদালত হতে অন্য ফৌজদারী আদালত মামলা স্থানান্তর করতে পারবেন।

স্থানান্তরের ভিত্তি:

(১) নিম্ন আদালতের রিপোর্ট

(২) পক্ষের আবেদন

(৩) নিজ উদ্যোগ।

 

ধারা ৫২৬খ: দায়রা আদালতের মামলা স্থানান্তরের ক্ষমতা।

দায়রা আদালতের তার দায়রা বিভাগে এক আদালত হতে অন্য আদালতে মামলা স্থানান্তর করতে পারবেন।

স্থানান্তরের ভিত্তি:

(১) নিম্ন আদালতের রিপোর্ট

(২) পক্ষের আবেদন

(৩) নিজ উদ্যোগ।

 

ধারা ৫২৮: দায়রা জজ যুগ্ম দায়রা জজের নিকট থেকে মামলা উঠিয়ে নিতে পারবেন।

(১) যুগ্ম দায়রা জজের নিকট থেকে মামলা প্রত্যাহার করতে পারবেন।

(১ক) অতিরিক্ত দায়রা জজের নিকট থেকে মামলা প্রত্যাহার করতে পারবেন।

(১খ) প্রত্যাহার করা মামলা নিজে নিষ্পত্তি করতে পারবেন বা অন্য আদালতে পাঠাতে পারবেন।

(২) DM, CMM, CJM তাদের অধ:স্তন ম্যাজিস্ট্রেট হতে মামলা প্রত্যাহার করে নিজে নিষ্পত্তি করতে পারবেন বা অন্য ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট পাঠাতে পারবেন।

 

অধ্যায়  ৪৫

অনিয়মতান্ত্রিক কার্যধারা      

ধারা ৫২৯ – ৫৩৮

 

ধারা ৫৩৩: ১৬৪ বা ৩৬৪ ধারার বিধান পালন না করা।

১৬৪ বা ৩৬৪ ধারায় গৃহিত স্বীকারোক্তি অন্য কোনো আদালতে সাক্ষ্য হিসাবে দাখিল করা হলে উক্ত আদালত যদি দেখেন ১৬৪ বা ৩৬৪ ধারার বিধান যথাযথ অনুসরণ করা হয় নাই তাহলে আসামীর আত্মপক্ষ সমর্থনে কোনো ক্ষতি না করলে তিনি তা গ্রহণ করবেন।

 

অধ্যায়  ৪৬

বিবিধ    

ধারা ৫৩৯ – ৫৬৫

 

ধারা ৫৪০: গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীর সমন করার বা উপস্থিত ব্যক্তির জবানবন্দী গ্রহণ করার ক্ষমতা/ সাক্ষীর Recall.

[CPC আদেশ ১৮ বিধি ১৭]

আদালত সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণের জন্য সমন দিতে পারবেন কিংবা উপস্থিত ব্যক্তির জবানবন্দী গ্রহণ করতে পারবেন। যাহার জবানবন্দী একবার গ্রহণ করা হয়েছে তাহাকে পুনরায় জবানবন্দী গ্রহণের জন্য সমন দিতে পারবেন।

 

ধারা ৫৪০ক: আসামীর অনুপস্থিতিতে অনুসন্ধান ও বিচার।

আসামীর কৌসুলী আদালতে উপস্থিত থাকেলে আদালত –

  • আসামীকে উপস্থিতি থেকে রেহাই দিতে পারবেন।
  • আসামীর অনুপস্থিতিতে অনুসন্ধান ও বিচার করতে পারবেন।
  • পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিতে পারবেন।

আসামীর কৌসুলী আদালতে উপস্থিত না থাকেলে আদালত –

  • অনুসন্ধান ও বিচার মূলতবী রাখতে পারবেন।
  • পৃথকভাবে বিচারের নির্দেশ দিতে পারবেন।

 

ধারা ৫৫১: উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের ক্ষমতা

থানার ওসি থানা এলাকায় যে ক্ষমতা প্রয়োগ করেন তাহার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ তাহাদের নিযুক্তীয় এলাকায় সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন।

 

ধারা ৫৫২: অপহৃত নারী প্রত্যর্পণে/ ফেরত দিতে বাধ্য করার ক্ষমতা

কোনো স্ত্রীলোক বা ১৬ বছরের কম বয়সী বালিকাকে বেআইনীভাবে আটক রাখা হলে MM/ ১ম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট/ DM তাকে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারবেন এবং ফেরত দিতে বাধ্য করার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি প্রয়োগ করতে পারবেন।

 

ধারা ৫৫৬: যেসকল মামলা জজ বা ম্যাজিস্ট্রেটের ব্যক্তিগত স্বার্থ থাকে।

কোনো মামলা জজ বা ম্যাজিস্ট্রেটের ব্যক্তিগত স্বার্থ থাকলে তিনি তার উর্ধ্বতন আপীল আদালতে অনুমতি ছাড়া মামলা পরিচালনা করবেন না। তার দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপীল শুনানী করবেন না।

 

ধারা ৫৫৮: আদালতের ভাষা নির্ধারণ।

আদালতের ভাষা নির্ধারণ করবেন সরকার।

 

ধারা ৫৬০: সম্পত্তি বিক্রয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট অফিসারগণ উহা ক্রয় বা নিলাম ডাকতে পারবেন না।

 

ধারা ৫৬১: স্বামী কর্তৃক ধর্ষণের অপরাধ সম্পর্কে বিশেষ বিধান।

স্বামী কর্তৃক ধর্ষণের অপরাধ CMM বা CJM ব্যতীত অন্য কোনো ম্যাজিস্ট্রেট আমলে নিতে পারবেন না।

CMM বা CJM তদন্তের জন্য Inspector এর নিচে কোনো পুলিশ অফিসারকে নির্দেশ দিতে পারবেন না।

 

ধারা ৫৬: আদালতের সহজাত ক্ষমতার (Inherent power) সংরক্ষণ

হাইকোর্ট বিভাগ ৩টি ক্ষেত্রে সহজাত ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন-

(ক) ন্যায়বিচারের স্বার্থে।

(খ) আদালতের কার্যপ্রণালীর অপব্যবহার রোধ করার জন্য।

(গ) এই বিধির আওতায় প্রদত্ত কোনো আদেশ বলবত করার জন্য।

[CPC Section 151]

 

তফসীল সমূহ

 

১ম তফসীল:   বতিল

২য় তফসীল:  ৮ টি কলামে বিভক্ত অপরাধের বিবরণ সম্বলিত চার্ট

১ম ২য় ৩য় ৪র্থ ৫ম ৬ষ্ট ৭ম ৮ম
দন্ডবিধির ধারা অপরাধের  নাম বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করা যাবে কিনা পরোয়ানা বা সমন জামিনযোগ্য কিনা মীমাংসাযোগ্য কিনা শাস্তি আদালত

 

৩য় তফসীল:  ম্যাজিস্ট্রেটদের সাধারণ ক্ষমতা

৪র্থ তফসীল:   ম্যাজিস্ট্রেটদের বিশেষ ক্ষমতা

৫ম তফসীল:  বিভিন্ন ধরণের ৫৩ টি ফরম

 

লেখক-

এডভোকেট মুহাম্মদ মহীউদ্দীন

01711-068609

 

বার কাউন্সিল ও বিজেএস পরীক্ষার কোর্সে ভর্তির জন্য যোগাযোগ-

শিশির ল’ একাডেমি

ঢাকা জজ কোর্ট, ঢাকা বা

বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা

01540-105088 / 01711-068609

Email: info@ainbid.com

Website: ainbid.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *