বায়না দলিল সংক্রান্ত আইন

Spread the love

বায়না দলিল মোতাবেক বিক্রেতা দলিল রেজিস্ট্রি না দিলে কিংবা ক্রেতা টাকা পরিশোধ না করলে করণীয়-

 

বায়না দলিল-

স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয়ের জন্য বিক্রয় দলিল বা সাফ কবলা দলিল সম্পাদনের পূর্বে যে বিক্রয় চুক্তি সম্পাদন করা হয় তাকেই বায়না দলিল বলা হয়।

 

সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ-

(১) The Registration Act, 1908 এর ১৭ক ধারা

(২) The Specific Relief Act, 1877 এর ২১ক ধারা,

(৩) The Transfer of Property Act, 1908 এর ৫৪ক ধারা,

(৪) The Limitation Act, 1908 এর ১১৩ অনুচ্ছেদ

 

“The Registration Act, 1908 এর ১৭ক ধারায় বায়না দলিল সম্মন্ধে আলোচনা করা হয়েছে।

 

ধারা ১৭ক: স্থাবর সম্পত্তির বিক্রয় চুক্তি বা বায়না দলিল অবশ্যই লিখিত ও নিবন্ধিত হতে হবে।

 

বিক্রয় চুক্তি বা বায়না দলিল সম্পাদন হওয়ার তারিখ হতে ৩০ দিনের মধ্যে চুক্তিটি নিবন্ধনের জন্য উপস্থাপন করতে হবে।“

 

সুতরাং ৩০ দিনের মধ্যে বায়না দলিল রেজিস্ট্রি না করা হলে সেটি আর রেজিস্ট্রেশন করা যাবে না। রেজিস্ট্রি করতে হলে আবার নতুন করে দলিল সম্পাদন করে রেজিস্ট্রির জন্য উপস্থাপন করতে হবে।

 

সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন, ১৮৭৭ এর ২১ক ধারায় এ সম্পর্কে বলা হয়েছে-

ধারা ২১ক: অলিখিত বিক্রয় চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে বলবতযোগ্য নহে।

কোনো স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয়ের চুক্তি সুনির্দিষ্টভাবে কার্যকর করতে হলে অবশ্যই নিম্নের ২টি শর্ত পূরণ করতে হবে-

(ক) চুক্তিটি, নিবন্ধন আইন ১৯০৮ মোতাবেক লিখিত ও রেজিস্ট্রিকৃত হতে হবে।

(খ) চুক্তির অবশিষ্ট টাকা আদালতে জমা দিতে হবে।

[অত্র ধারাটি The Specific Relief (Amendment) Act, 2004 (২০০৪ সালের ২৭ নং আইন) দ্বারা সন্নিবেশিত এবং ১ জুলাই ২০০৫ হতে কার্যকর হয়]”

 

সুতরাং The Registration Act, 1908 এর ১৭ক ধারা এবং The Specific Relief (Amendment) Act, 2004 এর ২১ক ধারা মোতাবেক বায়না দলিল রেজিস্ট্রি না করা হলে সেটি আর আদালতের মাধ্যমে কার্যকর করা যায় না।

 

বায়না দলিল মোতাবেক দলিল রেজিস্ট্রি না দিলে করণীয়-

চুক্তি প্রবল বা চুক্তিটি কার্যকর করার মামলা।

 

বিক্রয় চুক্তি বা বায়না দলিল রেজিস্ট্রি করার পর চুক্তি মোতাবেক জমির মালিক সাফ কবলা দলিল রেজিস্ট্রি করে না দিলে কিংবা ক্রেতা চুক্তি মোতাবেক যথাসময়ে ক্রয় মূল্যের টাকা পরিশোধ না করলে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন, ১৮৭৭ এর ১২ ধারা অনুযায়ী ক্রেতা/বিক্রেতা উভয়ই চুক্তি প্রবল বা চুক্তিটি কার্যকর করার জন্য আদালতে মামলা দায়ের করা যায়।

 

তামাদি মেয়াদ-

The Limitation Act, 1908 এর ১১৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বায়না দলিলে উল্লেখিত সময়সীমা উত্তীর্ণের পর কিংবা সময়সীমা উল্লেখ না থাকলে সম্পত্তি হস্তান্তর আইন, ১৯০৮ এর ৫৪এ ধারা মোতাবেক ৬ (ছয়) মাস পর ১ (এক) বছরের মধ্যে চুক্তি প্রবল মামলা দায়ের করতে হবে।

 

 

বিক্রয় দলিল বা সাফ কবলা দলিল কত দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রি করতে হবে-

বায়নানামা দলিলে কোন মেয়াদ উল্লেখ করা থাকলে উল্লেখিত সেই মেয়াদের মধ্যে সাফ কবলা দলিল রেজিস্ট্রি করতে হবে। কিন্তু বায়নানামা দলিলে কোন মেয়াদ উল্লেখ না থাকলে সম্পত্তি হস্তান্তর আইন, ১৯০৮ এর ৫৪এ ধারা অনুযায়ী বায়নাপত্র রেজিস্ট্রেশন এর তারিখ থেকে ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে সাফ কবলা দলিল রেজিস্ট্রি করতে হবে।

 

সুতরাং বায়নানামা দলিলে উল্লেখিত সময়সীমা কিংবা ৬ মাসের মধ্যে সাফ কবলা দলিল রেজিস্ট্রি না করা হলে উক্ত সময় অতিবাহিত হওয়ার পর বায়না দলিল বতিল হয়ে যাবে।

 

“সম্পত্তি হস্তান্তর আইন, ১৯০৮ এর ৫৪এ ধারা-

কোন স্থাবর সম্পত্তির বায়নাপত্রে, বিক্রয় দলিল সম্পাদন ও রেজিস্ট্রেশন বিষয়ে একটি সময় উল্লেখ করিতে হইবে, যা বায়নাপত্র রেজিস্ট্রেশন এর তারিখ থেকে কার্যকর হবে, তবে যদি কোন সময়সীমা উল্লেখ করা না হয়, তাহলে সময়সীমা ৬ (ছয়) মাস বলিয়া গন্য হইবে।”

 

বিক্রয় চুক্তি বা বায়নানামা দলিলে মেয়াদ সম্পর্কে কোন বাধ্যবাধকতা আইনে উল্লেখ না থাকলেও বিক্রয় চুক্তি বা বায়নানামা দলিলে মূল বিক্রয় দলিল বা সাফ কবলা দলিল রেজিস্ট্রির সময়সীমা বা মেয়াদ উল্লেখ করা সমীচীন। এর মেয়াদের বিষয়টি মূলত: উভয় পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়ে থাকে। তবে, তামাদি আইনের ১১৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সময়সীমা উত্তীর্ণের পর ১ (এক) বছরের মধ্যে প্রতিকার প্রার্থনা করে আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে।

লেখক-

এডভোকেট মুহাম্মদ মহীউদ্দীন

এলএল.বি, এলএল.এম, এমবিএ

 

যেকোন আইনি জটিলতায় আইনগত মতামত ও সহায়তার জন্য যোগাযোগ করুন-

যোগাযোগ

আইনবিদ ল’ প্যালেস

অন-স্টপ লিগ্যাল সলিউশন

সার্বিক পরিচালনায়- এডভোকেট মুহাম্মদ মহীউদ্দীন (শিশির)

এলএল.বি, এলএল.এম, এমবিএ

চীফ লিগ্যাল এডভাইজার

কোর্ট চেম্বার- ১৬, কৈলাশঘোষ লেন, ঢাকা জজ কোর্ট, কোতোয়ালী, ঢাকা।

অথবা

ইভিনিং চেম্বার- রোড-৫, ব্লক-এ, বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা

ফোন- 01711068609 / 01540105088

ওয়েবসাইট- www.ainbid.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *