শ্রম আদালতে মজুরি মামলার জবাবের নমুনা

শ্রম আদালতে দাখিলযোগ্য জবাবের নমুনা

 

মোকাম: বিজ্ঞ ২য় শ্রম আদালত, ঢাকা।

বি.এল. এ (মজুরী) মামলা নং- ২০৫/২০২৪

খোকন মিয়া-

——————-১ম পক্ষ

 

-বনাম-

 

রোজ সোয়েটার লিঃ ,

পক্ষে, ব্যবস্থাপনা পরিচালক

——————–২য় পক্ষ

 

২য় পক্ষের বিনীত নিবেদন এই যে,

১। যেহেতু ১ম পক্ষ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বর্ণনায় অত্র মোকদ্দমা দায়ের করিয়াছে বিধায় উহা খারিজ হইবে। দরখাস্তকারী ইতোপূর্বেও শ্রম আইন (মজুরী) মোকদ্দমা নং- ১১৬৯/২০১২ দায়ের করিয়াছিল। ঐ মোকদ্দমার ১ম পক্ষ একই বিষয় বর্ণনা করিয়াছিল বিধায় অত্র মোকদ্দমাটি গ্রহণযোগ্য নয়। ১ম পক্ষের অত্র মোকদ্দমায় ঐ মোকদ্দমাটি কি আদেশ হইয়াছে তাহার কোন কিছুই অত্র মোকদ্দমায় উল্লেখ নাই। ১ম পক্ষের অত্র মোকদ্দমার ১-২ নম্বর দফার বর্ণনা উক্তি যেমন সে ২৪/০৪/২০১১ ইং তারিখে জুনিয়ার নিটিং অপারেটর পদে যোগদান করে বা তাহার সর্ব শেষ মজুরী ৩,৫০০/- টাকা বা তাহাকে চাকুরির সময় কোন নিয়োগ পত্র দেওয়া হয় নাই, ইত্যাদি বক্তব্য সত্য নয় বিধায় অত্র জবাবদানকারী উহা অস্বীকার করে।

 

২। যেহেতু ১ম পক্ষের অত্র মোকদ্দমার ৩-৭ নম্বর দফার বর্ণনা উক্তি যেমন- চাকুরি জীবনে তাহার রেকর্ড অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর ছিল বা ২৪/১১/২০১১ ইং তারিখে তাহাকে কারখানা হইতে টার্মিনেট করা হয় বা তিনি ১১৬৯/১২ নম্বর মোকদ্দমার ২য় পক্ষের জবাব হইতে তিনি বরখাস্ত হইয়াছে বলিয়া জানিতে পারেন বা বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের নিমিত্তে তিনি ডাক যোগে ২৫/০৩/২০১৪ ইং তারিখে অনুরোধ পত্র প্রেরণ করেন বা বরখাস্তের আদেশে ক্ষুব্ধ হইয়া অত্র মোকদ্দমা আনয়ন করিয়াছেন, ইত্যাদি বক্তব্য সত্য নয়, বিধায় অত্র জবাব দানকারী ২য় পক্ষ উহা অস্বীকার করেন।

 

৩। যেহেতু ১ম পক্ষের অত্র মোকদ্দমার হেতুবাদ সমূহের “ক” হইতে “ও” নম্বরে বর্ণিত উক্তি সমূহ, যেমন বরখাস্তের আদেশ অবৈধ, তঞ্চকতাপূর্ণ বা আইনের অনুসরণ ব্যতিরেকে উহা করা হইয়াছে বা অসৎ আচরণ তাহাদের জানা নাই বা বরখাস্তের দলিল দাখিল করা হয় নাই বিধায় দরখাস্তকারীকে বরখাস্ত করা হইয়াছে মর্মে জানা নাই বা আইনগত ভাবে কোন কাগজ পত্র দাখিল করে নাই, ইত্যাদি বক্তব্য সত্য নয় বিধায় অত্র জবাবদানকারী উহা অস্বীকার করে।

 

৪। যেহেতু ১ম পক্ষের আরজির “চ-ঞ” নং দফার বর্ণনা বিবৃতি যেমন- বরখাস্তের পূর্বে কোন বিধি অনুসরণ করা হয় নাই বা প্রকৃত অর্থে কোন তদন্ত পরিচালনা হয় নাই বা তদন্ত কার্যক্রমের যোগাযোগ সংক্রান্ত কোন পত্র বা জেরা করার সুযোগ দেওয়া হয় নাই বা আত্মপক্ষ সমর্থনের কোন সুযোগ দেওয়া হয় নাই, ইত্যাদি বক্তব্য সত্য নয় বিধায় অত্র জবাবদানকারী উহা অস্বীকার করে।

 

৫। প্রকৃত বৃত্তান্ত এই যে,

 

ক) দরখাস্তকারী বিগত ২৫/০৪/২০১১ ইং তারিখে হইতে অত্র কারখানায় শিক্ষানবীশ হিসাবে কাজে যোগদান করে। যোগদানের পর হইতে তাহার কাজের প্রতি অনিহা, কর্মস্থলে বিলম্ব হাজির হওয়া এবং কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই কাজে অনুপস্থিত থাকা তাহার অভ্যাসে পরিণত হয়। তথাপি কর্তৃপক্ষ তাহার প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন।

 

খ) যেহেতু ১ম পক্ষ তাহার পূর্বের স্বভাব সূলভ ভাবে বিগত ২০/০৯/২০১১ ইং তারিখ হইতে কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে তাহার কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকে। তাহার এই অনুপস্থিতির মেয়াদ ১০ দিন এর অধিক হইলে কর্তৃপক্ষ বিগত ২/১০/২০১১ ইং তারিখে তাহাকে রেজিস্ট্রি ডাক যোগে ২টি নোটিশ এর মাধ্যমে তাহার অনুপস্থিতির কারণ ব্যাখ্যাসহ কাজে যোগদানের জন্য অনুরোধ করে।

 

গ) যেহেতু ১ম পক্ষ উক্ত নোটিশ এর প্রতি কোন প্রকার গুরুত্ব আরোপ না করায় এবং কোন প্রকার সম্মান প্রদর্শন না করায় বিগত ১৩/১০/২০১১ ইং তারিখে তাহার চাকুরি কালীন সরবরাহকৃত ঠিকানায় রেজিস্ট্রি ডাক যোগে ২টি নোটিশ এর মাধ্যমে তাহাকে পূনরায় জবাব দিতে বলা হয়। কিন্তু তিনি ইচ্ছাকৃত ভাবে উক্ত নোটিশের কোন উত্তর কর্তৃপক্ষকে দেন নাই এবং কাজেও যোগদান করেন নাই।

 

ঘ) যেহেতু কর্তৃপক্ষ ১ম পক্ষের এহেন আচরণে তাহার অনুপস্থিতি বিষয়ে এক তদন্ত কমিটি গঠন করে। উক্ত তদন্ত কমিটির সম্মুখে ১১/১১/২০১১ইং তারিখ সকাল ১০ ঘটিকার সময় হাজির হওয়ার জন্য ও যদি তাহার কোন আত্মপক্ষ সমর্থনের সাক্ষ্য প্রমাণ থাকে তাহা হইলে উহা সহ তদন্ত কমিটিকে সহযোগীতা করার জন্য উপস্থিত থাকার চিঠি তাহার ঠিকানায় ২৩/১০/১১ ইং তারিখেকর্তৃপক্ষ প্রেরণ করেন।

 

ঙ) যেহেতু ১ম পক্ষ তদন্ত কমিটির সম্মুখে হাজির হন নাই। ফলে তদন্ত কমিটি তাহার অনুপস্থিতির বিষয়টি এক তরফা ভাবে তদন্ত পূর্বক এক পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে তাহার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ তাহাকে চাকুরি হইতে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন এবং বরখাস্তের চিঠি তাহার সরবরাহকৃত ঠিকানায় যথা সময়ে প্রেরণ করা হয় এবং চিঠিতে ইহাও বলা তাহার কোন পাওনা থাকিলে হিসাব বিভাগ হইতে উহা গ্রহণ করিতে বলা হয়।

 

চ) যেহেতু তাহার দীর্ঘ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি শ্রম আইনের বিধান অনুসারে অসদাচরণের সামিল বিধায় তাহাকে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে চাকুরি হইতে বরখাস্ত করা হইয়াছে। কাজেই তাহার অত্র মোকদ্দমায় বর্ণিত বরখাস্তের আদেশ তিনি ২৩/০৩/২০১৪ ইং তারিখে জ্ঞাত হইয়াছেন বিষয়টি সঠিক নয় এবং তাহার দীর্ঘদিন পরে অত্র মোকদ্দমা দায়ের করার এবং প্রার্থিত মতে প্রতিকার পাওয়ারও কোন হকদার নয়।

 

অতএব, হুজুর দয়া প্রকাশে অত্র লিখিত জবাব গ্রহণ করতঃ ১ম পক্ষের মিথ্যা মোকদ্দমাটি খারিজ করিয়া সুবিচার করিতে আজ্ঞা হয়।

 

সত্যপাঠ

 

উপরোক্ত জবাবের যাবতীয় বর্ণনা আমার জ্ঞান ও জানা মতে সত্য  জানিয়া অত্র সত্যপাঠে নিজ নাম স্বাক্ষর করিলাম। ইতি, তাং

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *