স্বত্ব ঘোষণাসহ খাস দখলের মোকদ্দমার আর্জি

স্বত্ব ঘোষণাসহ খাস দখলের মোকদ্দমার আর্জি

 

স্বত্ব ঘোষণাসহ খাস দখলের মোকদ্দমার আর্জি

 

মোকাম: বিজ্ঞ সাব জজ ৪র্থ আদালত, ঢাকা।

দেওয়ানী মোকদ্দমা নং ১৪২/২০২৪

১। মোহাম্মদ হোসেন,

পিতা- মরহুম কাজী মোঃ সিদ্দিক,

সাকিন-কাপ্তান বাজার (মহাফেজ বাড়ী) থানা-কোতয়ালী, জিলা-কুমিল্লা।

 

২। আব্দুল লতিফ মিয়া,

পিতা- মরহুম মুন্সি তাইজদ্দিন,

সাকিন-ছোটতুলা থানা-লাকসাম, জিলা-কুমিল্লা।

 

উভয়ের পক্ষে নিযুক্তীয় আমমোক্তার

(ক) মোঃ আমির আলী, পিতা আব্দুল মালেক,

সাকিন-নড়াইবাগ, থানা-ডেমরা, জিলা-ঢাকা এবং

(খ) মোঃ আজিবুর রহমান, পিতা হাজী মোঃ জামির আলী,

সাকিন-নড়াইবাগ (মিরপাড়া), থানা-ডেমরা, জিলা-ঢাকা।

 

৩। মোঃ ইউসুফ আলী, পিতা মরহুম মোঃ ওয়াজদ্দিন মোল্লা,

সাকিন-মানিক কান্দি, থানা-দাউদকান্দি, জিলা-কুমিল্লা।

—————-বাদীগণ।

 

=বনাম=

 

১। আব্দুল লতিফ,

২। মোঃ আব্দুস সালাম,

৩। আব্দুল হালিম,

৪। নূর হোসেন,

৫। বিলকিস বেগম,

সর্বপিতা মরহুম-আব্দুল খালেক,

 

৬। আকতার বানু, পতি-মৃত আব্দুল খালেক,

৭। মোঃ শহিদুল্লা,

৮। আব্দুল বারেক,

উভয়ের পিতা মরহুম রহমতআলী

সর্ব সাকিন-রাজাখালী, থানা-ডেমরা, জিলা-ঢাকা।

 

৯। জহুরা বেগম, পতি-আব্দুলআউয়াল খান,

সাকিন-সারুলিয়া, থানা- ডেমরা, জিলা-ঢাকা।

—————–মূল-বিবাদীগণ।

 

১০। মোঃ বিল্লাল হোসেন,

১১। মোঃ নূরুল ইসলাম,

উভয়ের পিতা-মরহুম আব্দুল করিম,

উভয়ের সাকিন-রাজাখালী, থানা- ডেমরা, জিলা-ঢাকা।

——————মোকাবেলা-বিবাদীগণ।

 

স্বত্ব ঘোষণাসহ খাস দখলের মোকদ্দমা।

মোকদ্দমার তায়দাদ =১,২৫,০০০/ (এক লক্ষ পঁচিশ হাজার) টাকা।

 

বাদীগণ নিম্নলিখিত মর্মে নালিশ দায়ের করিলেনঃ-

১।  নিম্ন তফসিল বর্ণিত সম্পত্তি যাহা জিলা ঢাকার, থানা-ডেমরাধীন শূন্যা মৌজাস্থিত সি.এস. জে.এল.নং ৩১৪ সি.এস. খতিয়ান নং ১৫৮ সি.এস.  দাগ নং ৫২৮ জমির পরিমাণ ৫০ শতাংশ উহার কাতে ৩৮ শতাংশ এবং উক্ত ৩৮ শতাংশ হইতে পশ্চিমাংশের ১৫ শতাংশ সম্পত্তি যাহা অতঃপর অত্র আরজীতে নালিশী সম্পত্তি বলিয়া উল্লেখ হইবে। উল্লেখ্য যে, তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তিসহ নালিশী সি.এস.দাগ ও খতিয়ানের অপরাপর সম্পত্তির সি.এস. রেকর্ডীয় মালিক দখলকার ছিলেন যথাক্রমে (ক) রাজ চন্দ্র মাদবর এবং (খ) ডেঙ্গুরী মাদবর উভয়ের পিতা মৃত রামজয় মাদবর এবং তাহাদের নামে সমান ৮ (আট) আনা অংশ উল্লেখে সি.এস. ১৫৮ খতিয়ানটি সঠিক ও শুদ্ধরূপে প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়।

 

২।  উল্লেখ্য যে, বর্ণিত রাজ চন্দ্র মাদবর নালিশী সম্পত্তি সহ নালিশী সি.এস. দাগ ও খতিয়ানের অপরাপর সম্পত্তিতে তদিয় ভ্রাতা ডেঙ্গুরী মাদবরের সহিত এজমালিতে ভোগ-দখলে থাকাবস্থায় যথাক্রমে (ক) শ্রী চন্দ্র মোহন রায়, (খ) শ্রী রাধিকা মোহন রায় এবং (গ) শ্রী গোপাল চন্দ্র রায়-কে ৩ (তিন) পুত্র তদিয় ত্যাজ্য বিত্তভোগী একমাত্র ওয়ারিশ বিদ্যমান রাখিয়া পরলোক গমন করেন এবং অপরদিকে বর্ণিত ডেঙ্গুরী মাদবর নালিশী সি.এস. দাগ ও খতিয়ানে তাহার অংশে তাহার অপর সহ-শরীকের সহিত এজমালিতে ভোগ-দখলে থাকাবস্থায় যথাক্রমে (ক) শ্রী জগবন্ধু রায়, (খ) শ্রী মনবন্ধু রায়, (গ) শ্রী মদন মোহন রায় এবং (ঘ) শ্রী গোপী মোহন রায়-কে ৪ (চার) পুত্র তদিয় ত্যাজ্য বিত্তভোগী একমাত্র ওয়ারিশ বিদ্যমান রাখিয়া পরলোক গমন করিলে বর্ণিত শ্রী জগবন্ধু রায় গং ভ্রাতা চতুষ্টয় তাহাদের পিতৃত্যাজ্য সম্পত্তিতে পৈত্রিক ওয়ারিশ সূত্রে এজমালিতে ভোগদখলে থাকাবস্থায় বর্ণিত শ্রী মদন মোহন রায় শ্রী কালী প্রসন্ন রায়-কে ১ পুত্র তাহার ত্যাজ্য বিত্তভোগী একমাত্র ওয়ারিশ বিদ্যমান রাখিয়া পরলোক গমন করেন এবং বর্ণিত শ্রী গোপী মোহন রায় শ্রী চিন্তাহরণ রায়-কে ১ পুত্র তথা তাহার ত্যাজ্য বিত্তভোগী একমাত্র ওয়ারিশ বিদ্যমান রাখিয়া পরলোক গমন করিলে বর্ণিত রাজচন্দ্র মাদবরের ৩ (তিন) পুত্র শ্রী চন্দ্র মোহন রায় গং এবং ডেঙ্গুরী মাদবরের ২ (দুই) পুত্র যথাক্রমে (ক) শ্রী জগবন্ধু রায় এবং (খ) শ্রী মনবন্ধু রায় ও ২ (দুই) পৌত্র শ্রী কালী প্রসন্ন রায় ও শ্রী চিন্তাহরণ রায় নালিশী সম্পত্তি সহ নালিশী সি.এস.দাগ ও খতিয়ানের অপরাপর সম্পত্তি তাহাদের স্ব-স্ব হিস্যা অনুযায়ী একে অপর সহ-শরীকের সহিত এজমালিতে ভোগ-দখল করিতে থাকেন।

 

৩।  উল্লেখ্য যে, বর্ণিত শ্রী চন্দ্র মোহন রায় গং উপরোক্তভাবে নালিশী সি.এস. দাগের সমুদয় সম্পত্তিতে এজমালিতে দ্বাদশ বর্ষের উর্দ্ধকাল যাবৎ তাহাদের নিজ স্বত্ব প্রচারে এবং অন্যের স্বত্ব অস্বীকারে তাবৎ দুনিয়ার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধ দখল জনিত স্বত্বে অন্যের নিরাপত্যে নির্বিবাদে নিরবিচ্ছিন্ন ও শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোগ-দখলে থাকাবস্থায় নালিশী সম্পত্তিসহ নালিশী সি.এস. দাগের ৫০ শতাংশের কাতে পশ্চিমাংশের ৩৮ শতাংশ সম্পত্তি সাধারণ রায়তি জোতে বে-মেয়াদী পত্তন দেওয়ার অভিপ্রায় প্রকাশ করিলে রাজাখালী নিবাসী শেখ আলমের পুত্র শ্রী শেখ ধনু হাজী নালিশী সম্পত্তি সহ নালিশী সি.এস.দাগের উক্ত ৩৮ শতাংশ সম্পত্তি উপযুক্ত সালামী প্রদান পূর্বক ও নির্ধারিত খাজনার বিনিময়ে পত্তন লইবার আগ্রহ প্রকাশ করিলে বর্ণিত শ্রী চন্দ্র মোহন রায় গং বর্ণিত শ্রী শেখ ধনু হাজীর বরাবরে উক্ত ৩৮ শতাংশ সম্পত্তি পত্তন দেওয়ার জন্য সম্মত হইলে বর্ণিত শেখ ধনু হাজী কর্তৃক বিগত ৫/১/১৯২৯ইং মোতাবেক ২১শে পৌষ ১৩৩৫ বঙ্গাব্দে সম্পাদিত এবং ঢাকার ২য় জয়েন্ট সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে রেজিষ্ট্রিকৃত ১নং বহির ২১নং ভলিউমের ১৯৬ হইতে ১৯৭ পৃষ্ঠায় লিখিত ১৯২৯ ইং সনের ২২১৪ নং বে-মেয়াদী কবুলিয়ত দলিল মূলে নালিশী সি.এস. দাগের ৩৮ শতাংশ সম্পত্তি বার্ষিক ১ (এক টাকা পাঁচ আনা বার গন্ডা) খাজনা ধার্য্যে বর্ণিত শ্রী শেখ ধনু হাজী নালিশী সম্পত্তির মালিক-দখলকার নিয়ত হন ও থাকেন।

 

৪।  উল্লেখ্য যে, বর্ণিত শ্রী শেখ ধনু হাজী উপরোক্তভাবে তাহার সম্পাদিত ও রেজিষ্ট্রিকৃত বে-মেয়াদী কবুলিয়ত দলিল মূলে নালিশী সম্পত্তি সহ নালিশী সি.এস.দাগের ৩৮ শতাংশ সম্পত্তিতে মালিক- দখলকার নিয়ত হইয়া দ্বাদশ বর্ষের উর্দ্ধকাল যাবৎ ভোগ-দখলে থাকাবস্থায় বিগত ৩/৮/১৯৪৪ ইং তারিখে তাহার সম্পাদিত এবং ঢাকার ২য় জয়েন্ট সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে রেজিষ্ট্রিকৃত ১নং বহির ৪১ নং ভলিউমের ৭৮ হইতে ৮৩ পৃষ্ঠায় লিখিত ১৯৪৪ ইং সনের ৩২১৬ নং হেবা বেল এওয়াজ দলিল মূলে নালিশী সম্পত্তি সহ নালিশী সি.এস. দাগের তাহার স্বত্ব-দখলীয় ৩৮ শতাংশ সম্পত্তি এবং আরও কতিপয় সম্পত্তি যথাক্রমে আব্দুল মালেক, পিতা মৃত- সোনা মিয়া এবং আব্দুল খালেক ও আব্দুল হাকিম উভয়ের পিতা মৃত-আলী আজগর অর্থাৎ তাহার ৩ (তিন) পৌত্রের বরাবরে হস্তান্তরক্রমে হস্তান্তরিত সম্পত্তির খাস দখল তাহাদের বরাবরে বুঝাইয়া দিয়া চিরতরে নিঃস্বত্ববান হন।

 

৫। উল্লেখ্য যে, বর্ণিত আব্দুল মালেকগং জেঠাত ও চাচাত ৩ ভাই অন্যান্য সম্পত্তি সহ নালিশী সি.এস. ৫ দাগের ৩৮ শতাংশ সম্পত্তিতে উপরোক্তভাবে মালিক-দখলকার নিয়ত হইয়া এজমালিতে ভোগ দখলে থাকাবস্থায় বর্ণিত আব্দুল হাকিম অবিবাহিত অবস্থায় তাহার মাতা বানেছা বিবি এবং সহোদর ভ্রাতা আব্দুল খালেককে তাহার ত্যাজ্য বিত্তভোগী একমাত্র ওয়ারিশ বিদ্যমান রাখিয়া পরলোক গমন করেন। অপরদিকে বর্ণিত আব্দুল মালেক নালিশী সম্পত্তিসহ নালিশী সি.এস. দাগের উক্ত সমুদয় ৩৮ শতাংশ সম্পত্তিতে তাহার অপর সহ-শরীকদের সহিত এজমালিতে ভোগ-দখলে থাকাকালীন অবিবাহিত অবস্থায় তাহার মাতা জমিদন নেছা এবং চাচাত ভাই আব্দুল খালেককে তাহার ত্যাজ্য বিত্তভোগী একমাত্র ওয়ারিশ বিদ্যমান রাখিয়া পরলোক গমন করিলে বর্ণিত জমিদন নেছা তাহার পুত্রের ওয়ারিশ হিসাবে নালিশী সম্পত্তিসহ তাহার পুত্র ত্যাজ্য সকল সম্পত্তিতে তাহার অপর সহ-শরীকদের সহিত এজমালিতে ভোগ দখলে থাকাবস্থায় তাহাদের নিজ নিজ ভোগ দখলের সুবিধার্থে তাহাদের সমুদয় এজমালি সম্পত্তি ঘরোয়া আপোষ বন্টনে মৌখিক ভাবে বন্টন করিয়া লইলে বর্ণিত জমিদন নেছা নালিশী সি.এস. দাগ হইতে তফসিল বর্ণিত নালিশী ১৫ শতাংশ সম্পত্তি তাহার ছাহামে প্রাপ্ত হন।

 

৬।  উল্লেখ্য যে, বর্ণিত জমিদন নেছা উপরোক্তভাবে তাহার অপর সহ-শরীকের সহিত ঘরোয়া আপোষ-বণ্টন অনুযায়ী তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তি তাহার ছাহামে প্রাপ্ত হইয়া তাহার নিজ স্বত্ব প্রচারে এবং অন্যের স্বত্ব অস্বীকারে তাবৎ দুনিয়ার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধ দখল জনিত স্বত্বে দ্বাদশ বর্ষের বহু উর্দ্ধকাল যাবৎ তাহার নিরঙ্কুশ ও একক মালিকানায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ-দখলে থাকাবস্থায় তাহার নগদ টাকার বিশেষ প্রয়োজনে তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তি সাফ বিক্রয়ের নিমিত্তে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিলে নড়াইবাগ নিবাসী জনৈক ছাবেদ আলী, পিতা মৃত জাফর আলী উপযুক্ত মূল্যে তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তি খরিদ করিতে ইচ্ছা প্রকাশ করিলে বর্ণিত জমিদন নেছা ছাবেদ আলীর নিকট তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তি সাফ বিক্রয়ের নিমিত্তে সম্মত ও রাজী হইয়া বর্ণিত জমিদন নেছা কর্তৃক বিগত ০৫/০৭/১৯৫৬ ইং তারিখে সম্পাদিত এবং ঢাকা সদর সাব- রেজিষ্ট্রি অফিসে রেজিষ্ট্রিকৃত ১নং বহির ৫৯ নং ভলিউমের ২৮৪ পৃষ্ঠা হইতে ২৮৫ পৃষ্ঠায় লিখিত ১৯৫৬ ইং সনের ৭০৬১ নং রেজিষ্ট্রিকৃত সাফ কবালা দলিল মূলে তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তি সাফ বিক্রয় করতঃ বিক্রিত সম্পত্তির খাস দখল তাহাকে বুঝাইয়া দিয়া চিরতরে নিঃস্বত্ববতী হন। প্রসঙ্গতঃ বলা আবশ্যক যে, উপরোক্ত ৭০৬১ নং সাফ কবালা দলিলের মাধ্যমে নালিশী সম্পত্তি যে বর্ণিত জমিদন নেছার সাফ বিক্রয় করিবার অধিকার ছিল এবং উক্ত বিক্রিত সম্পত্তিতে কিম্বা উহার কোন অংশে তাহার অপর সহ-শরীক বর্ণিত আব্দুল খালেক কিম্বা তাহার মাতা ব্যাক্তির নিকট সাফ বিক্রয় করিতে পারেন এবং তাহার বিক্রয়ের বিরুদ্ধে যে, তাহাদের কোন দাবী তথা আপত্তি নাই তজ্জন্য বর্ণিত আব্দুল খালেক সাক্ষী হিসাবে উক্ত ৭০৬১ নং দলিলে স্বাক্ষর করে। এই প্রসঙ্গে বলা আবশ্যক যে, উপরোক্ত ঘরোয়া আপোষ-বন্টন অনুযায়ী বর্ণিত আব্দুল খালেক কায়েত পাড়া মৌজাস্থিত যথাক্রমে ৪৮০ দাগের ২৮ শতাংশ, ৪৮২ দাগের ১২ শতাংশ, ৪৮৩ দ্যুগের ৭০ শতাংশ ও ৪৮৫ দাগের ৪১ শতাংশ একুনে ১.৫১ একর এবং নড়াইবাগ মৌজাস্থিত ২৩ দাগের ৪৯ শতাংশ, ১০৮ দাগের ১.০৪ একর ৪৬ দাগের ১৪ শতাংশ সম্পত্তি বিভিন্ন ব্যাক্তির নিকট রেজিষ্ট্রিকৃত সাফ কবালা দলিল মূলে সাফ বিক্রয় করেন। আরও উল্লেখ্য যে, বর্ণিত আব্দুল খালেক নড়াইবাগ মৌজার ১৮৬ দাগের ৪২ শতাংশ সম্পত্তি বিগত ১১/০৩/১৯৫৭ ইং তারিখে সম্পাদিত ও রেজিষ্ট্রিকৃত ৩২৮৯ নং সাফ কবালা দলিল মূলে জনৈক আব্দুল মজিদের নিকট সাফ বিক্রয় করেন। তাহাছাড়া তিনি উক্ত একই মৌজার ১৯০ দাগের ৬৭ শতাংশ সম্পত্তি এবং শূন্যা মৌজার নালিশী ৫২৮ দাগের অবশিষ্ট অর্থাৎ আব্দুল খালেকের সাহামপ্রাপ্ত ২৩ শতাংশ সম্পত্তি বিগত ০৭/১০/১৯৫৯ ইং তারিখে সম্পাদিত ও রেজিস্ট্রিকৃত ১০৩৭৫ নং সাফ কবালা দলিল মূলে জনৈক আকিমুদ্দিনের নিকট বিক্রয় করেন এবং উক্ত দলিলের চৌহদ্দিতে পশ্চিমে ছাবেদ আলী অর্থাৎ নালিশী সম্পত্তি তাহার উল্লেখ আছে। তাহাছাড়া উক্ত একই খতিয়ানের ৫২৭ দাগের ৩১ শতাংশ সম্পত্তিও বর্ণিত আব্দুল খালেক একাই বিক্রয় করেন। প্রসঙ্গতঃ বলা আবশ্যক যে, নালিশী সম্পত্তির দক্ষিণ পার্শ্বের পাইটি মৌজার ৮৫ দাগের ২৩ শতাংশ সম্পত্তির মালিক-দখলকার ছিলেন জনৈক হাফিজদ্দিন। তিনি বিগত ২৫/০৩/১৯৬৩ ইং তারিখে তাহার সম্পাদিত ও রেজিস্ট্রিকৃত ৪২৬১ নং সাফ কবালা দলিল মূলে উক্ত সম্পত্তি জনৈক মোহম্মাদ আলীগংদের নিকট সাফ বিক্রয় করেন। বলা আবশ্যক যে, উক্ত দলিলে উত্তরে ছাবেদ আলী অর্থাৎ নালিশী সম্পত্তি তাহা বলা আছে। তাহাছাড়া বর্ণিত বানেছা বিবি অর্থাৎ আব্দুল খালেকের মাতা তাহার ২ য় স্বামীর ঔরষজাত পুত্র কন্যাদের বরাবরে বিগত ১৫/০৮/১৯৮৩ ইং তারিখে সম্পাদিত ৫৬৬৪ নং হেবা-বেল এওয়াজ দলিল মূলে তাহার পুত্রের ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত সমুদয় সম্পত্তি দান করিয়া দেন। বলা আবশ্যক, উক্ত দলিলে নালিশী দাগের কোন উল্লেখ নাই এবং পরবর্তীতে মূল-বিবাদীগণ বিগত ২৮/০৭/১৯৯২ ইং তারিখে তাহাদের সম্পাদিত এবং রেজিস্ট্রিকৃত ৫০৯১ নং বন্টন নামা দলিল মূলে তাহাদের স্বত্ব-দখলীয় সমুদয় সম্পত্তি বণ্টন করিয়া লন। বলা আবশ্যক যে, উক্ত বণ্টননামা দলিলেও নালিশী সম্পত্তির কোন উল্লেখ নাই। কেননা নালিশী সম্পত্তিতে তাহাদের কোন স্বত্ব এবং দখল থাকিলে অবশ্যই উক্ত দলিল ২ টিতে উহার উল্লেখ থাকিত।

 

৭।  উল্লেখ্য যে, উপরোক্ত ভাবে বর্ণিত ছাবেদ আলী নালিশী সম্পত্তিতে খরিদ সূত্রে মালিক-দখলকার নিয়ত হইয়া ও থাকিয়া তাহার নিজ স্বত্ব প্রচারে এবং অন্যের স্বত্ব অস্বীকারে তাবৎ দুনিয়ার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধ দখল জনিত স্বত্বে দ্বাদ্বষ বর্ষের বহু উর্দ্ধকাল যাবৎ তাহার নিরঙ্কুশ ও একক মালিকানায় বিভিন্ন মৌসুমী ফসলাদি সৃজনের মাধ্যমে নিরবিচ্ছিন্ন ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ-দখলে রত থাকেন। প্রসঙ্গতঃ বলা আবশ্যক যে, বর্ণিত ছাবেদ আলীর অজ্ঞতার কারণে এস.এ. এবং আর.এস.জরীপে নালিশী সম্পত্তির রেকর্ড তাহার নামে না হইয়া তাহার বিক্রেতা বর্ণিত জমিদন নেছার নামে হইয়াছে কিন্ত ছাবেদ আলীর নামে নালিশী সম্পত্তির এস.এ.এবং আর.এস.রেকর্ড না হইলেও নালিশী সম্পত্তিতে তাহার স্বত্বের কিম্বা দখলের কোন ব্যাঘাত কিম্বা হানি ঘটে নাই এবং বর্ণিত জমিদন নেছাও তাহার নামে তথাকথিত এস.এ.এবং আর.এস.রেকর্ডের ভিত্তিতে কোনদিন নালিশী সম্পত্তির মালিকানা দাবী করেন নাই। কাজেই নালিশী সম্পত্তির এস.এ.এবং আর.এস.পর্চা ভুল এবং উক্ত পর্চা দ্বারা বাদীগণ বাধ্য নহে। বলা আবশ্যক যে, নালিশী আর. এস. খতিয়ানের আর, এস. ১০১৫ দাগের সম্পত্তি বর্ণিত আকিমুদ্দিন তাহার খরিদের পর হইতেই সম্পূর্ণ পৃথকভাবে সীমানা চিহ্নিত পূর্বক ভোগ-দখল করায় এবং উক্ত সম্পত্তি সম্পর্কে বাদীগণের কোন দাবী না থাকায় এবং বাদীগণের সম্পত্তি সম্পর্কেও বর্ণিত আকিমুদ্দিন কিম্বা তাহার ওয়ারিশদের কোন দাবী না থাকায় আকিমুদ্দিনের ওয়ারিশদের অত্র মোকদ্দমায় পক্ষ করা হইল না।

 

৮।  উল্লেখ্য যে, বর্ণিত ছাবেদ আলী উপরোক্তভাবে নালিশী সম্পত্তিতে ভোগ-দখলে থাকাবস্থায় তাহার নগদ টাকার বিশেষ প্রয়োজনে নালিশী সম্পত্তি সাফ বিক্রয়ের নিমিত্তে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিলে ১ ও ২নং বাদী ডেমরা এলাকায় লতিফ বাওয়ানী জুট মিলে চাকুরী করিবার সুবাদে জনৈক মাতু মোল্লার মাধ্যমে উক্ত বিক্রয়ের ঘোষণা সম্পর্কে জানিতে পারিয়া তাহারা বাজার সর্বোচ্চ মূল্যে নালিশী সম্পত্তি খরিদ করিতে সম্মত হইলে বর্ণিত ছাবেদ আলী কর্তৃক বিগত ১৮ ই ফাল্গুন ১৩৮৫ বঙ্গাব্দে মোতাবেক ০৩/০৩/১৯৭৯ ইং তারিখে সম্পাদিত এবং ঢাকার সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিষ্ট্রীকৃত যথাক্রমে ১ নং বহির ৩৬ নং ভলিউমের ২৮১ পৃষ্ঠা হইতে ২৮৩ পৃষ্ঠায় লিখিত ১৯৭৯ ইং সনের ৭৫৯৭ নং রেজিষ্ট্রিকৃত সাফ কবালা দলিলমূলে ১ নং বাদীর নিকট ৭ শতাংশ এবং উক্ত একই তারিখে তাহার সম্পাদিত এবং একই অফিসে রেজিস্ট্রিকৃত এবং একই বুক ভলিউমের ২৭৮ পৃষ্ঠা হইতে ২৮০ পৃষ্ঠায় লিখিত ১৯৭৯ ইং সনের ৭৫৯৬ নং রেজিষ্ট্রিকৃত সাফ কবালা দলিল মূলে ৭ শতাংশ অর্থাৎ নালিশী সমুদয় ১৫ শতাংশ সম্পত্তি সাফ বিক্রয় করতঃ বিক্রিত সম্পত্তির খাস দখল উক্ত ক্রেতাদ্বয়ের বরাবরে বুঝাইয়া দিয়া চিরতরে নিঃস্বত্ববান হন। আরও উল্লেখ্য যে,১ ও ২ নং বাদীদ্বয় তাহাদের খরিদের পর পরই ডেমরা থানাধীন আমুলিয়া নিবাসী জনৈক আলী হোসেনকে দিয়া প্রায় ২/৩ বৎসর নালিশী সম্পত্তি বর্গা চাষ করান এবং তৎপর আলী হোসেনের ভাতিজা নিজম উদ্দিনের মাধ্যমে প্রায় ১৪/১৫ বৎসর এবং সর্বশেষে ১ নং আমমোক্তার প্রায় ২/৩ বৎসর যাবৎ বর্গা চাষাবাদ করিয়া আসিতেছেন। প্রসঙ্গতঃ বলা আবশ্যক যে, উপরোক্ত প্রত্যেক বর্গাদার বর্ণিত লতিফ বাওয়ানী জুট মিলে চাকুরী করিতেন এবং তাহারা ১ ও ২ নং বাদীদের অধীনস্ত কর্মচারী ছিলেন।

 

৯।  উল্লেখ্য যে, ১ ও ২ নং বাদীদ্বয় উপরোক্তভাবে উপযুক্ত মূল্যে রেজিষ্ট্রিকৃত সাফ কবালা দলিল মূলে খরিদ সূত্রে নালিশী সম্পত্তিতে মালিক-দখলকার নিয়ত হইয়া ও থাকিয়া তাহাদের নিজ স্বত্ব প্রচারে এবং অন্যের স্বত্ব অস্বীকারে তাবৎ দুনিয়ার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধ দখল জনিত স্বত্বে দ্বাদশ বর্ষের বহু উর্দ্ধকাল যাবৎ নিরবিচ্ছিন্নভাবে অন্যের নিরাপত্যে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ-দখলে থাকাবস্থায় সংশ্লিষ্ট রাজস্ব অফিসে নামজারী কেস নং ১১৬৫০/৯৮-৯৯ এর মাধ্যমে নালিশী সম্পত্তি সম্পর্কে তাহাদের নামে নামজারী করতঃ পৃথক খতিয়ান খুলিয়া ডি.সি.আর. প্রাপ্ত হইয়া তাহাদের দেয় যাবতীয় খাজনা-ট্যাক্সাদি নিয়মিত প্রদান পূর্বক ভোগ-দখলে থাকাবস্থায় হাল মহানগর জরীপ আমলে আসিলে নালিশী সম্পত্তি সম্পর্কে তাহাদের নামে খানাপুরি তথা বুঝারত খতিয়ান প্রস্তুত হয়। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, মূল-বিবাদীগণ বাদীগণের পূর্ববর্তী বিক্রেতা বর্ণিত জমিদন নেছার দেবর পুত্র আব্দুল খালেকের এবং তাহার মাতা বানেছা বিবির পরবর্তী ওয়ারিশ। কিন্তু মূল-বিবাদীগণ তাহাদের ওয়ারিশ হিসাবে বর্ণিত আব্দুল খালেক এবং জমিদন নেছার ঘরোয়া আপোষ-বন্টন মানেন না এবং সেইহেতু মূল-বিবাদীগণ নালিশী সম্পত্তিতে তাহাদের পূর্বসূরী আব্দুল খালেক এবং আব্দুল খালেকের মাতা বানেছা বিবি আরও সম্পত্তি পাইবেন মর্মে নালিশী সম্পত্তি দাবী করিয়া দুর্লোভের বশবর্তী হইয়া ১ ও ২ নং বিবাদীর নামীয় উক্ত মহানগর জরীপ উত্তোর কালীন সময়ে আপত্তি স্তরে বুঝারত খতিয়ানের বিরুদ্ধে ১৪২ নং আপত্তি দিলে সংশ্লিষ্ট আপত্তি অফিসার উভয় পক্ষকে শুনানী অন্তে মূল বিবাদীগণের তথাকথিত আপত্তি খারিজ করিয়া দেন এবং ১ ও ২ নং বাদীর নামে নালিশী সম্পত্তি সম্পর্কে বুঝারত খতিয়ান নং ২০৩৬ ডি.পি. খতিয়ান নং ১৩৬৮ এবং দাগ নং ২০৭০ উল্লেখে রেকর্ডভূক্তির চূড়ান্ত আদেশ প্রদান করেন। আরও উল্লেখ্য যে, ১ ও ২ নং বাদীগণ উপরোক্তভাবে নালিশী সম্পত্তি এজমালিতে ভোগ-দখলে থাকাবস্থায় ২ নং বাদী তাহার বৈধ প্রয়োজনে নগদ টাকার বিশেষ আবশ্যক হওয়ায় বিগত ৩০ শে বৈশাখ ১৪০৬ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ১৩/০৫/১৯৯৯ ইং তারিখে তাহার কর্তৃক সম্পাদিত এবং ডেমরা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রিকৃত ১৯৯৯ ইং সনের ৩১৬৬ নং রেজিস্ট্রিকৃত সাফ কবালা দলিল মূলে নালিশী সম্পত্তির কাতে ৬ শতাংশ সম্পত্তি ৩ নং বাদীর নিকট সাফ বিক্রয় করতঃ বিক্রিত সম্পত্তির খাস দখল ক্রেতা ৩ নং বাদীর নিকট বুঝাইয়া দিয়া চিরতরে নিঃস্বত্ববান। বলা আবশ্যক ৩ নং বাদী তাহার খরিদকৃত ৬ শতাংশ সম্পত্তিতে মালিক-দখলকার নিয়ত হইয়া ১ ও ২ নং বাদীগণের সহিত তাহাদের স্ব স্ব অংশ তথা হিস্যা অনুযায়ী এজমালিতে নালিশী সম্পত্তি ভোগ-দখলে রত আছেন।

 

১০।  প্রসঙ্গতঃ আরও উল্লেখ্য যে, বাদীগণের স্বত্ব-দখলীয় নালিশী সম্পত্তিতে মূল-বিবাদীগণ রেকর্ড করাইতে না পারিয়া তাহারা প্রতারণার আশ্রয় লইয়া তাহাদের পূর্ববর্তী আব্দুল খালেক কর্তৃক বর্ণিত আকিমুদ্দিনের নিকট বিক্রিত ২৩ শতাংশ সম্পত্তির মধ্যে ১১ শতাংশ সম্পত্তি সম্পর্কে আকিমুদ্দিনের পুত্রগণের অজ্ঞাতে তাহাদের নামে ডি.পি. খতিয়ান নং ২০৬৮ এবং দাগ নং ২০৭১ উল্লেখে রেকর্ড করাইতে সক্ষম হন। কিন্তু আকিমুদ্দিনের পুত্র শুকুর মাহমুদগং তাহাদের স্বত্ব-দখলীয় সম্পত্তি সম্পর্কে মূল-বিবাদীগণের নামীয় উক্ত রূপ রেকর্ড করাইবার বিষয় সম্পর্কে জানিতে পারিয়া প্রজাস্বত্ব আইনের ৩০ বিধি মোতাবেক সংশ্লিষ্ট সেটেলমেন্ট অফিসে ১২৯ নং আপত্তি কেস দায়ের করেন। প্রসঙ্গতঃ আরও উল্লেখ্য যে, উক্ত আপত্তি কেসের বিরোধীয় ভূমিতে উভয় পক্ষ তাহাদের দখল দাবী করিলে সংশ্লিষ্ট আপত্তি অফিসার সরেজমিনে বদর তথা তদন্তের নির্দেশ দেন এবং সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক উক্ত বিরোধীয় ভূমিতে মূল বিবাদীগণের স্বত্ব এবং দখল তথা মালিকানা না থাকায় মূল-বিবাদীগণের নামীয় তথাকথিত রেকর্ড বাতিল করতঃ বর্ণিত শুকুর মাহমুদগংদের নামে রেকর্ড করাইবার আদেশ প্রদান পূর্বক উক্ত ১২৯ নং আপত্তি কেসটি মঞ্জুর হয়।

 

১১।  উল্লেখ্য যে, বাদীগণ উপরোক্তভাবে তফসিল বর্ণিত নালিশী সমুদয় সম্পত্তিতে মালিক-দখলকার নিয়ত হইয়া ও থাকিয়া তাহাদের নিজ স্বত্ব প্রচারে এবং অন্যের স্বত্ব অস্বীকারে তাবৎ দুনিয়ার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধ দখল জনিত স্বত্বে মৌসুমী ফসলাদি সহ ইরিধানের চাষাবাদের মাধ্যমে দ্বাদশ বর্ষের বহু উর্দ্ধকাল যাবৎ নালিশী সম্পত্তিতে ভোগ-দখলে রত আছেন। প্রসঙ্গতঃ বলা আবশ্যক যে, নালিশী সম্পত্তিতে কিম্বা উহার কোন অংশে বিবাদীগণের কাহারও কোন স্বত্ব এবং দখল কিম্বা অন্য কোন প্রকার কোন অধিকার মালিকানা কোনদিনই ছিল না এবং বর্তমানেও নাই। কিন্তু বিবাদীগণ বর্ণিত আবদুল খালেক ও বানেছা বিবির ওয়ারিশ হিসাবে তাহারা উক্ত সম্পত্তি পাইবেন এই অজুহাতে তাহারা বে-আইনীভাবে তাহাদের গায়ের জোরে বিগত ৩১/১০/১৯৯৯ ইং তারিখে নালিশী সম্পত্তি হইতে বাদীগণকে বে-দখল করিবার হুমকী দিলে বাদীগণ নালিশী সম্পত্তি সম্পর্কে বিবাদীগণের বিরুদ্ধে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার প্রার্থনায় অত্রাদালতে দেওয়ানী ২৫০/৯৯ নং মোকদ্দমা দায়ের করেন। প্রসঙ্গতঃ আরও উল্লেখ্য যে, উপরোক্ত মোকদ্দমা দায়েরের কথা জানিতে পারিয়া মূল-বিবাদীগণ আরও ক্ষিপ্ত হইয়া উঠে এবং বাদীগণকে নালিশী সম্পত্তি হইতে বে-দখল করিবার পাঁয়তারা করিতে থাকে। এমনি অবস্থায় উক্ত মোকদ্দমাটি বিচারাধীন থাকাবস্থায় ১ ও ২ নং বাদী পক্ষে আমমোক্তার এবং ৩ নং বাদীর বর্গাদার মোঃ আমির আলীর রোপিত শরিষা উত্তোলন করিতে গেলে মূল-বিবাদীগণ তাহাদের অধীনস্ত গুন্ডা-পান্ডা ও ভাড়াটিয়া মস্তান লইয়া শরিষা তুলিতে বাঁধা দিলে বর্ণিত আমির আলীর আহবানে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও গন্যমান্য ব্যাক্তিদের উপস্থিতিতে একটি শালিশ হয় এবং উক্ত শালিশে এই মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, যেহেতু মোঃ আমির আলী নালিশী সম্পত্তিতে শরিষা রোপন করিয়াছে সেইহেতু সে-ই পাকা শরিষা তুলিয়া লইবে এবং উক্ত মোকদ্দমা নিষ্পত্তির পর কোর্ট যাহার পক্ষে রায় দিবে সে নালিশী সম্পত্তি পাইবে। শালিশগণের উক্তরূপ সিদ্ধান্তের পর নালিশী সম্পত্তিতে বাদীগণের সৃজিত শরিষা বাদীগণের পক্ষে বর্ণিত মোঃ আমির আলীই উত্তোলন করেন। বলা আবশ্যক যে, পরবর্তীতে উভয় পক্ষের শুনানী অন্তে রায়ের গর্ভে উল্লেখিত পর্যবেক্ষনসহ বিগত ০৭/০৫/২০০০ ইং তারিখে বর্ণিত দেওয়ানী ২৫০/৯৯ নং মোকদ্দমাটি খারিজ করিয়া দেন।

 

১২।  উল্লেখ্য যে, মূল-বিবাদীগণ বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক দেওয়ানী ২৫০/৯৯ নং মোকদ্দমায় খারিজাদেশে উৎসাহিত হইয়া বিগত ০৮/০৫/২০০০ ইং তারিখে নালিশী সম্পত্তি হইতে বাদীগণকে বে-দখল করেন। প্রসঙ্গতঃ বলা আবশ্যক যে, নালিশী সম্পত্তি কিম্বা উহার কোন অংশে বিবাদীগণের কাহারও কোন স্বত্ব কিম্বা দখল কিম্বা মালিকানা কোন দিনই ছিলনা এবং থাকিবার কোনও কারণও ছিলনা এবং বর্তমানেও নাই। কিন্তু বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক বর্ণিত দেওয়ানী ২৫০/৯৯ মোকদ্দমাটি খারিজ করিয়া দেওয়ায় উক্ত খারিজাদেশে উৎসাহিত হইয়া মূল-বিবাদীগণ একজোট হইয়া বিগত ০৮/০৫/২০০০ ইং তারিখে নালিশী সম্পত্তি হইতে তাহাদের গায়ের জোরে বাদীগণকে বে-দখল করিয়াছেন। এমতাবস্থায় নালিশী সম্পত্তি হইতে বিবাদীগণকে উচ্ছেদ তথা তাহাদের সকল প্রকার বাঁধা-বিঘ্ন অপসারণ পূর্বক বাদীগণ স্বত্ব ঘোষণাসহ খাস-দখলের প্রার্থনায় অত্রাকারে বর্তমান মোকদ্দমাটি দায়ের করিলেন।

 

১৩।  উল্লেখ্য যে,১০ এবং ১১ নং মোকাবেলা-বিবাদীদ্বয় বর্ণিত জমিদন নেছার পুত্রহেতু তাহাদের উপস্থিতিতে মোকদ্দমাটি নিষ্পত্তি হওয়া আবশ্যক বিধায় তাহাদিগকে মোকাবেলা-বিবাদী করিয়া মোকদ্দমাটি দায়ের করা হইল। কিন্তু যদি তাহারা লিখিত জবাব দাখিলক্রমে মোকদ্দমায় প্রতিযোগীতা করেন তাহা হইলে মূল-বিবাদীগণের বিরুদ্ধে প্রার্থিত প্রতিকার তাহাদের বিরুদ্ধেও চাওয়া হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

 

১৪।  মোকদ্দমার কারণঃ-মূল-বিবাদীগণ বিগত ৩১/১০/১৯৯৯ ইং তারিখে বাদীগণকে নালিশী সম্পত্তি হইতে বে-দখল করিবার হুমকী দিলে অত্র মোকদ্দমার কারণ সর্ব প্রথম উদ্ভব হয় এবং পরবর্তীতে বাদীগণ কর্তৃক সহকারী জজ ৬ষ্ঠ আদালতে দায়েরকৃত দেওয়ানী ২৫০/৯৯ মোকদ্দমাটি খারিজ হইবার পর মূল-বিবাদীগণ উক্ত খারিজাদেশে উৎসাহিত হইয়া তাহাদের গায়ের জোরে বিগত ০৮/০৫/২০০০ ইং তারিখে তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তিতে প্রবেশ করতঃ বাদীগণকে বে-দখল করিয়া উক্ত সম্পত্তির দখল গ্রহণ করায় অত্র মোকদ্দমার কারণ সর্বশেষে উদ্ভব হইয়া অত্রাদালতের এলাকাধীন ডেমরা থানার অন্তর্গত শূন্যা মৌজাস্থিত তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তিতে এখনও বিদ্যমান আছে।

 

১৫।  মোকদ্দমার মূল্যায়ণঃ-যেহেতু ইহা একটি স্বত্ব ঘোষণাসহ খাস দখলের মোকদ্দমা সেইহেতু নালিশী সম্পত্তির মূল্য =১,২৫,০০০/ (এক লক্ষ পঁচিশ হাজার) টাকা ধার্য্য করিয়া ধার্য্যকৃত মূল্যের উপর =৬,৪৪০/ (ছয় হাজার চারিশত চল্লিশ) টাকার অ্যাডভেলোরেম কোর্ট ফি প্রদানে মোকদ্দমাটি দায়ের করা হইল। কোর্ট ফি চালানের মূল কপি অত্রসহ দাখিল দেওয়া গেল।

 

অতএব বাদীগণের বিনীত প্রার্থনা হুজুরাদালত দয়া করিয়াঃ-

 

(ক) নালিশী সম্পত্তিতে বাদীগণ ১. (ষোল) আনা স্বত্বে স্বত্ব বান মর্মে বাদীগণের অনুকূলে এবং বিবাদীগণের প্রতিকূলে ঘোষণা মূলক ডিক্রি  প্রদান করিতে;

 

(খ) নালিশী সম্পত্তির এস.এ. এবং আর.এস. পর্চা ভুল ও অশুদ্ধ এবং উক্ত পর্চা দ্বারা বাদীগণ বাধ্য নহে মর্মে বাদীগণের অনুকূলে এবং  বিবাদীগণের প্রতিকূলে ডিক্রি দিতে;

 

(গ) নালিশী সম্পত্তি হইতে বিবাদীগণ কিম্বা তাহাদের অনুগত  লোকজনের সকল প্রকার বাঁধা-বিঘ্ন অপসারণ পূর্বক সংকীর্ণ সময়ের  মধ্যে নালিশী সম্পত্তির খাস দখল বাদীগণের বরাবরে বুঝাইয়া দেওয়ার  জন্য বাদীগণের অনুকূলে এবং বিবাদীগণের প্রতিকূলে ডিক্রি প্রদান  করিতে;

 

(ঘ) বিবাদীগণ যদি বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশিত সময়ের মধ্যে নালিশী  সম্পত্তির খাস-দখল বাদীগণের বরাবরে বুঝাইয়া না দেন; তাহা হইলে  বিবাদীগণের সকল প্রকার বাঁধা-বিঘ্ন অপসারণ পূর্বক আদালত যোগে  নালিশী সম্পত্তির খাস-দখল বাদীগণকে বুঝাইয়া দেওয়ার নিমিত্তে  বাদীগণের অনুকূলে এবং বিবাদীগণের প্রতিকূলে ডিক্রি প্রদান করিতে;

 

(ঙ) মোকদ্দমার অবস্থা ও ব্যবস্থা মতে বিজ্ঞ আদালতের ন্যায় বিচারে বাদীগণ অন্য কোন প্রকার প্রতিকার প্রাপক হইলে তাহাও প্রদানের  আদেশ দিতে,

এবং

(চ) মোকদ্দমার যাবতীয় খরচ বাদীগণের অনুকূলে এবং বিবাদীগণের  প্রতিকূলে ডিক্রি দিয়া সুবিচার করিতে মর্জি হয়।

 

নালিশী সম্পত্তির তফসিলঃ-

জিলা-ঢাকার, ডেমরা থানাধীন শূন্যা মৌজাস্থিত সি,এস, জে,এল, নং ৩১৪ সি,এস, খতিয়ান নং ১৫৮ এবং যাহার এস.এ. এবং নামজারী খতিয়ান নং ২৫২ এবং আর. এস. খতিয়ান নং ১৮৭ এবং যাহার সি,এস, এবং এস.এ.দাগ নং ৫২৮ এবং আর. এস. দাগ নং ১০১৬ জমির পরিমাণ ৫০ শতাংশ উহার কাতে ৩৮ শতাংশ এবং উক্ত ৩৮ শতাংশের কাতে পশ্চিমাংশ দিয়া ১৫ শতাংশ সম্পত্তি যাহা হাল তথা মহানগর জরীপে বুঝারত খতিয়ান নং ২০৩৬ ডি.পি. খতিয়ান নং ১৩৬৮ এবং দাগ নং ২০৭০ উল্লেখে ১ এবং ২ নং বাদীর নামে রেকর্ড হইয়াছে। যাহার চৌহদ্দিঃ- উত্তরে-আব্দুল খালেক কর্তৃক বিক্রিত ৫২৭ দাগের সম্পত্তি বর্তমানে যাহাতে হাফিজ উদ্দিন ভোগ-দখলে রত আছে। দক্ষিণে-মোহাম্মাদ আলী গংদের বিক্রিত সম্পত্তি যাহাতে বর্তমানে রমিজ উদ্দিন ভোগ-দখলে রত আছে, পূর্বে-আব্দুল খালেক কর্তৃক বিক্রিত অত্র দাগের অবশিষ্ট সম্পত্তি যাহাতে বর্তমানে আকিমুদ্দিনের পুত্র শুকুর মাহমুদগং ভোগ- দখলে রত আছে এবং পশ্চিমে-মোঃ নূরুল আমিন মাষ্টারের সম্পত্তি। অত্র চৌহদ্দিভূক্ত সম্পত্তিই অত্র মোকদ্দমার নালিশী সম্পত্তি বটে।

 

-সত্যপাঠ-

 

অত্র আরজীর সকল বর্ণনা আমার জ্ঞান ও বিশ্বাস মতে সত্য এবং আমাদের কথামত লেখা হইয়াছে জানিয়া উহার সত্যতা স্বীকারে ১ ও  ২ নং বাদীগণের আমমোক্তার এবং ৩ নং বাদীপক্ষের তদ্বিরকারক  হিসাবে আমিমোঃ আমির আলী অত্র সত্যপাঠে স্বাক্ষর করিলাম।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *