স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাকের হলফনামা

স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাকের হলফনামা করতে চাইলে নিম্নলিখিত হলফনামাটিতে প্রয়োজনীয় ব্যক্তিদের তথ্য দ্বারা সঠিকভাবে লিখে বর্তমান প্রচলিত আইন অনুযায়ী ৩০০ টাকার নন- জূডিশিয়াল স্ট্যাম্পে প্রিন্ট করে উভয় পক্ষ, সাক্ষী ও আইনজীবির স্বাক্ষর সম্পন্ন করে নোটারী করাতে হবে।

 

মোকামঃ বিজ্ঞ নোটারী পাবলিকের কার্যালয়, ঢাকা, বাংলাদেশ।

এফিডেভিট

(স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক)

 

 

আব্দুর রহিম (৪৫), পিতা- আব্দুল মজিদ, মাতা- মরিয়ম বেগম, সাং- গ্রাম- সাথিয়া, পো – গোলা, ইউনিয়ন- পাশা, থানা- চাষা, জেলা- শরিয়তপুর, পেশা- ব্যবসা, ধর্ম- ইসলাম, জাতীয়তা- বাংলাদেশী।  জন্ম তারিখ- ১২/১২/১৯৮২ ইং, জাতীয় পরিচয় পত্র নং- ২০২০২৩২৫৬২, মোবাইল নং- ০১৫১৫-০০০০০০।

 ……………………… এফিডেভিট দাতা/স্বামী

 

মনিষা আকতার (৩৮), পিতা- কুতুব আলী, মাতা- লিপি বেগম, সাং- বাসা- ৫১২, মধ্য বাড্ডা, বাড্ডা, ঢাকা।  পেশা- চাকুরি, ধর্ম-ইসলাম, জাতীয়তা-বাংলাদেশী।  জন্ম তারিখ- ১২/১১/১৯৮৬ ইং, জাতীয় পরিচয় পত্র নং- ২০২০২৩২৫৬৩, মোবাইল নং- ০১৫১৫-০০০০০০।

……………………… এফিডেভিট গ্রহীতা/স্ত্রী

 

১।   যেহেতু আমি এফিডেভিট দাতা/স্বামী একজন সুস্থ্য মস্তিক সম্পন্ন এবং হলফনামা সম্পাদনে যোগ্য বটে।

 

২। আমি এফিডেভিট দাতা/স্বামী প্রতিজ্ঞা পূর্বক ঘোষণা করিতেছি যে, বিগত ১১-১১-২০১৫ ইং তারিখে উপরোক্ত এফিডেভিট গ্রহীতা/স্ত্রীর সাথে ৫,০০,০০০/- (পাচ লক্ষ) টাকা মোহরানা ধার্য্যে ইসলামী শরাশরীয়ত মোতাবেক আমাদের বিবাহ কার্য্য সম্পন্ন হয়।  বিবাহের পর দীর্ঘদিন সুখে শান্তিতে সাংসারিক জীবন অতিবাহিত করার পর মহান আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে আমাদের সংসারে যথাক্রমে ২৭-০৯-২০১৭ ইং তারিখ ও ২৮-০৫-২০২০ ইং তারিখ দুইটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে।  উল্লেখ্য, পুত্র সন্তানদ্বয় বর্তমানে যথাক্রমে নবম ও চতুর্থ শ্রেণীতে অধ্যায়নরত আছে।

 

৩। বিবাহের পর আমরা সুখে শান্তিতে সাংসারিক জীবন অতিবাহিত করিতে থাকা অবস্থায়  অনুমানিক বিগত ২০১৭ ইং সালের পর হইতে এফিডেভিট গ্রহীতা/স্ত্রী, আমি এফিডেভিট দাতা/স্বামীর সাথে অত্যন্ত ছোট খাট বিষয় নিয়া প্রচন্ড মাত্রায় দূর্ব্যবহার করিতে থাকে।  যেমন এফিডেভিট গ্রহীতা/স্ত্রী প্রায়শই বলে, “আমার বাবার বাড়ি ঢাকায়, তোর কিছুই নাই, তুই ফকিন্নিইর বাচ্চা, তুই আমারে কিছুই দিতে পারলি না শুয়োরের বাচ্চা” ইত্যাদি।  এফিডেভিট গ্রহীতা/স্ত্রীর এই খারাপ ব্যবহার ক্রমান্বয়ে তীব্র থেকে তীব্রতর হইতে থাকে।  এমনকি সাংসারিক অতি ক্ষুদ্র বিষয় নিয়া তুই তুকারি করিয়া এবং বাবা মাকে তুলিয়া অকথ্য বিশ্রী ভাষায় গালি গালাজ করিতে থাকে।  এই অবস্থা দীর্ঘদিন যাবত চলিতে থালিকেও আমি আমাদের আল্লাহ প্রদত্ত দুইটি পুত্র সন্তানের কথা বিবেচনা করিয়া ধৈর্য ধারণ করিয়া সংসার টিকাইয়া রাখিতে আপ্রাণ চেষ্টা করি।  কিন্তু পর্যায়ক্রমে দিন দিন তাহার ব্যবহার এত পরিমাণ খারাপ হইতে থাকে যাহা সহ্য করা আর সম্ভবপর হইতেছে না।  সর্বশেষ বিগত ০৩-০৬-২০২২ ইং তারিখে আমি এফিডেভিট দাতা/স্বামী আমার কর্মস্থলের কার্যক্রম শেষ করিয়া বাহির হইতে আসিয়া ঘরে প্রবেশ করিয়া দুপুরের খাবার খাইয়া খাবারের প্লেটটি রান্নাঘরের বেসিনে ভিজাইয়া রাখিয়া আসিয়া মাস্টার বেডরুমের খাটের উপর বসিলে হঠাত এফিডেভিট গ্রহীতা/স্ত্রী আসিয়া আমি এফিডেভিট দাতা/স্বামীকে উদ্দেশ্য করিয়া শাহাদাত আঙ্গুলি তুলিয়া প্রচন্ড ক্ষিপ্ততার সাথে বলে “শুয়োরের বাচ্চা ভাত খাইয়া প্লেটটা ধুইলি না কেন? আমি তোর চাকর?” অতঃপর আমি এফিডেভিট দাতা/স্বামী প্রতিউত্তরে বলি, “আমি এখন টায়ার্ড সেই জন্য ভিজিয়ে রেখেছি, পরে ধোব” এই কথার প্রতিউত্তরে এফিডেভিট গ্রহীতা/স্ত্রী বলে, “তোর কাহিনী আমি জানিনা মনে করছিস? কুত্তার বাচ্চা, তুই পরে আমারে দিয়াই ধোয়াবি”।  পরক্ষনেই তর্কাতর্কির এক পর্যায় এফিডেভিট গ্রহীতা/স্ত্রী ক্ষিপ্রভাবে দৌড়াইয়া গিয়া রান্না ঘর থেকে বডি নিয়া আসিয়া আমি এফিডেভিট দাতা/স্বামীকে কোপ দিতে উদ্যত হইলে আমি বডিটা ধরিয়া ফেলি।  উক্ত ঘটনার সময় আমাদের ছোট ছেলে ভয়ে বেলকুনিতে পালাইয়া ছিল।  ইতোমধ্যে আমাদের বড় ছেলে কোচিং শেষ করিয়া ঘরে প্রবেশ করিলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয় এবং আমি এফিডেভিট দাতা/স্বামী সাথে সাথে আমার শ্বশুর জনাব মোঃ কুদরত আলীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পর পর দুইবার বিষয়টি অবহিত করি।  কিন্তু এই ব্যাপারে তিনি কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেন নাই।  উল্লেখিত ঘটনার পর হইতে আমি এফিডেভিট দাতা/স্বামী, অত্ররূপ বেপরোয়া এফিডেভিট গ্রহীতা/স্ত্রীর সহিত একঘরে বসবাস করা কোনভাবেই নিরাপদ ভাবিতে পারিতেছি না।  উল্লেখিত কারণে এফিডেভিট গ্রহিতা/স্ত্রীর সহিত আমি এফিডেভিট দাতা/স্বামীর দাম্পত্য জীবনে কোন ভাবেই বনিবনা হইতেছে না।  উক্ত এফিডেভিট গ্রহিতা/স্ত্রীর সহিত দাম্পত্য জীবন যাপন সম্ভব নয়।  এই ভাবে চলিতে থাকিলে আমার এফিডেভিট দাতা/স্বামীর জীবন যৌবনে অপূরনীয় ক্ষতি সাধিত হইবে বিধায় আমি এফিডেভিট দাতা/স্বামী ভবিষ্যৎ জীবনের কথা চিন্তা করিয়া উক্ত এফিডেভিট গ্রহিতা/স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছি।

৪। আমি এফিডেভিট দাতা/স্বামী, এফিডেভিট গ্রহিতা/স্ত্রী মনিষা আক্তারকে অদ্য মৌখিক ভাবে ১, ২, ৩, তালাকে বায়েন ঘোষনা করিতেছি যে, তিন তালাকে … … … …  এর সহিত বিবাহ বিচ্ছেদ করিতেছি এবং ভবিষ্যতে মনিষা আক্তারকে আমাকে স্বামী হিসাবে দাবী করিতে পারিবে না এবং আমিও তাহাকে স্ত্রী হিসাবে দাবী করিতে পারিব না।  আমি ভবিষ্যতে অন্যত্র বিবাহ করিতে পারিব।  উক্ত তালাকের বিষয়ে আমি মৌখিক ভাবে স্থানীয় কাউন্সিলরকে অবগত করিয়া ছিলাম মর্মে অত্র হলফনামা ঘোষনা করিলাম।

 

উপরোক্ত বিবরণ সমূহ আমার জ্ঞান ও বিশ্বাস মতে সত্য ও সঠিক জানিয়া,পড়িয়া, শুনিয়া অদ্য নোটারী পাবলিক মোকামে উপস্থিত হইয়া স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে অন্যের বিনা প্ররোচনায় নিজ নাম স্বাক্ষর করিলাম।

 

 

আমি হলফকারীর স্বাক্ষর

সনাক্ত করিলাম।

হলফকারীনির স্বাক্ষরঃ

 

এ্যাডভোকেট, জজ কোর্ট, ঢাকা

 

লেখক-

এডভোকেট মুহাম্মদ মহীউদ্দীন

01711068609 / 01540105088

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *