নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধনী-২০১৩) এর ৭/৩০ ধারায় দরখাস্ত।

 

মোকাম: বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-৪, ঢাকা।

সূত্রঃ নারী ও শিশু পিটিশন মামলা নং- ১৩৫/২০২৪

 

ধারাঃ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী-২০১৩) এর ৭/৩০ ধারা।

 

নাসীমা বেগম (৪৫),

স্বামী-ইদ্রিস বেপারী,

সাং-পুরাতন তুইতাইল, পোঃ বাংলাবাজার,

থানা-নবাবগঞ্জ, জেলা-ঢাকা।

—————–বাদী।

 

=বনাম=

 

১। লিটন (২২),

পিতা-মোসলেম উদ্দিন,

২। রবিন (২২),

পিতা- কামাল হোসেন

৩। আব্বাস (২৩),

৪। আকবর (২৫),

উভয় পিতা- আনোয়ার

৫। শামীম

পিতা- মোঃ মাসুম খাঁ

সর্ব সাং- বাগনটিউরী (শেওরাইল),

থানা-সিংগাইর, জেলা-মানিকগঞ্জ।

৬। ফাতেমা, স্বামী-হারুন

৭। মোঃ হারুন,

পিতা-মৃত জোনাবালী বেপারী

উভয় সাং-জাহানাবাজ (কাউনিয়া কান্দি),

পোঃ দাউসপুর, থানা- নবাবগঞ্জ, জেলা-ঢাকা।

———————আসামীগণ।

 

সুমাইয়া আক্তার (১৫),

পিতা-ইদ্রিস আলী বেপারী, মাতা-নাসিমা বেগম

জন্ম তারিখ-১০/০৯/১৯৯৮ ইং

———————–ভিকটিম।

 

সাক্ষী:

১। বাদীনি নিজে।

২। মোঃ জনি, পিতা-

৩। আনোয়ার বেগম, স্বামী-

৪। লাভীল, পিতা-বাবলু

৫। আরিফ, পিতা-আঃ আলেক মিয়া

৬। আরিফ, পিতা-আঃ আলেক মিয়া

৭। সরন, পিতা-

সর্ব সাং- পুরাতন তুইতাইল, থানা-নবাবগঞ্জ, জেলা-ঢাকা।

 

প্রয়োজনে আরোও সাক্ষী উপস্থাপন করা যাইবে।

 

ঘটনার তারিখ- ২৫/১১/২০১৩ ইং,

সময়- ভোর ৫.১৫ ঘটিকা।

স্থানঃ নবাবগঞ্জ থানাধীন পুরাতন তুইতাইল গ্রামস্থ বাদিনীর বসত বাড়ী।

 

বাদিনী পক্ষে সবিনয় নিবেদন এই যে,

 

১। যেহেতু অত্র মামলার বাদী একজন সহজ-সরল আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক ও বাসিন্দা বটে। পক্ষান্তরে আসামীগণ কুচক্রী, ধূর্ত, আইন অমান্যকারী, নারী অপহরনকারী, একদলবদ্ধ ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক বটে।

 

২। যেহেতু অত্র মামলার বাদিনী ও ভিকটিম বিগত প্রায় ৪ মাস পূর্বে ৬ ও ৭নং আসামীর বাড়ীতে এক অনুষ্ঠানে বেড়াইতে গেলে সেখানে ১ ও ২নং আসামীদেরকে তারা উক্ত বাড়ীতে দেখতে পায়। ১নং আসামী, ৬নং আসামীর আত্মীয় বলে ৬নং আসামী বাদিনীর ও তাহার নাবালিকা কন্যা সুমাইয়া আক্তার এর সহিত পরিচয় করিয়ে দেয় এবং খাওয়া দাওয়ার পর এক পর্যায়ে ১নং আসামী, ২নং আসামীর উপস্থিতিতে বাদিনীর মেয়েকে একা পাইয়া প্রেম নিবেদন করিলে ভিকটিম কোন কথা না বলিয়া ঘরের ভিতরে ৬নং আসামীর নিকট যায়, ১ ও ২ নং আসামী ভিকটিমের পিছনে পিছনে ঘরে ঢুকিয়া ৬নং আসামীর উপস্থিতিতে আবার ও প্রেম নিবেদন করিলে ভিকটিম রেগে যায় এবং বাদীকে ডাকতে থাকে। তখন ৬নং আসামী ভিকটিমকে ধমকের স্বরে বলে আমার আত্মীয় তোমাকে দেখে পছন্দ করেছে তোমাকে ভালবেসেছে আর তুমি রাগ করে মাকে ডাকাডাকি করছ কেন। উক্ত কথা বলিয়া ভিকটিম পুনরায় ৬নং আসামীর ঘর থেকে বের হয়ে তার মাকে পেয়ে ঘটনা বিস্তারিত বলিলে বাদিনী ৭নং আসামীকে বিষয়টি জানাইলে ৭নং আসামী ও ১,২ ও ৬ং আসামীর কথায় সায় দিয়ে বলে তোমার মেয়েকে যখন পছন্দ করেছে তাহলে ১নং আসামীর সহিতই তোমার মেয়ের বিয়ে হবে অন্য কোথাও তোমার মেয়েকে বিয়ে দিতে পারবেনা। ৭নং আসামীর মুখে উক্ত কথা শুনিয়া বাদিনী ও তাহার কন্যা (ভিকটিম) কাল- বিলম্ব না করিয়া নিজ বাড়ীতে চলিয়া আসে। চলে আসার সময় ১-২ নং আসামীগণ বাদিনীর মেয়েকে জোর করে তুলে নিয়ে যাবে বলেও হুমকী দেয়।

 

৩। অতঃপর উক্ত ঘটনার ১৫/২০ দিন পরে ১-৫নং আসামীরা ২টি হুন্ডা নিয়া বাদিনীর বাড়ীর পাশে আসিয়া পানি খাওয়ার ছলে ৩-৫ নং আসামী বাদিনীর বাড়ীর আঙ্গিনায় যায় এবং বাদিনীর নিকট পানি চাহিলে বাদিনী তাহাদের গ্রামের বাড়ীর কথা জিজ্ঞাসা করিলে উক্ত ঠিকানার কথা বলে। বাদিনী তখন আসামীদের পানি দিলে আসামীরা পানি পান করে বাড়ীর চারদিকে ঘোলাফেরা করে দেখতে থাকে। বাদিনী উক্ত ঘোরা ফেরার সন্দেহ হইলে তাহাদের এরূপ ব্যবহারের কারন জিজ্ঞাসা করিলে তাহারা কোন কথা না বলিয়া বাড়ী থেকে নেমে যায়। বাদিনী তাহাদের পিছনে গেয়ে ১ ও ২নং আসামীকে ২টি হুন্ডার অন্যান্য আসামীদের নিয়ে চলে যেতে দেখিতে পায়। উক্ত ঘটনার দিন বাদিনীর মেয়ে স্কুলে থাকায় তাহরা ভিকটিমকে দেখিতে পায় নাই এবং তুলেও নিতে পারে নাই।

 

৪। অতঃপর বিগত ২৫/১১/২০১৩ ইং তারিখে ভোর ৫০১৫ ঘটিকা হইবে বাদিনী নামাজ পড়তে থাকাবস্থায় ভিকটিম প্রাকৃতিক ডাকে ঘরের বাহিরে গেলে পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা আসামীগণ বাদিনীকে মুখ চেপে ধরে গাড়ীতে উঠানোর সময় চিৎকার শুনিয়া বাদিনী নামাজ শেষ করে বাহিরে আসিয়া দেখতে পান ২টি হুন্ডা ও ১টি অটো গাড়ী এবং বাদিনী কিছু বুঝে উঠার আগেই হুন্ডা ও গাড়ী স্ট্যান্ড করে বাদিনীর মেয়েকে নিয়ে আসামীগন চলে যায়। তখন বাদিনী চিৎকার করিতে থাকিলে লোকজন ও সাক্ষীগণ বের হয়ে আসে এবং সাক্ষীরা বাদিনীর মেয়েকে আসামীরা অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার সময় দেখতে পান। উক্ত অটোবাইকে ৬ ও ৭ নং আসামীকে সনাক্ত করেন।

 

৫ । অতঃপর বাদিনীর ডাক চিৎকারে আশে পাশের বহুলোক জরো হয় এবং স্থানীয় কয়েকটি হুন্ডা নিয়া চারিদিকে রাস্তাগুলোতে তল্লাসী করার জন্য বের হয়। কিন্তু ততক্ষনে আসামীরা ভিকটিমকে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে যায়। উক্ত ঘটনার পর বাদিনী ১,২,৬ ও ৭নং আসামীকে সন্দেহ করে ৬ ও ৭ নং আসামীদের বাড়ীতে যাইয়া ৭নং আসামীকে দেখিতে পাইয়া ৬ন আসামীর কথা জিজ্ঞাসা করিলে ৭নং আসামী প্রথমে বালতে রাজি না হইলেও বাদিনী ভিকটিমকে অপহরনের সময় ৭নং আসামীকে সবাই দেখেছে বলিলে ৭নং আসামী ১-৫ নং আসামীদের বাড়ীতে গেলে সেখানে ভিকটিমকে পাওয়া যায় নাই এবং আসামীদের বাবা মা উক্ত বিয়ষটি জানে না বলে জানায় তবে আসামীদের বাবা- মা বলে যে, আসামীরা ৬-৭ নং আসামীদের বাড়ীতে গত ২৪/১১/২০১৩ইং সন্ধ্যায় বেড়াতে নিয়েছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে বাদিনী নিশ্চিত হন যে, আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে ও অসৎ উদ্দেশ্যে বাদিনীর নাবালিকা কন্যা অর্থাৎ ভিকটিম সুমাইয়া আক্তারকে তাহার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে অপহরন করিয়া অজ্ঞাত স্থানে আটক রাখিয়াছে।

 

৬। অতঃপর বাদিনী অনেক খোজাখুজি করিয়া তাহার মেয়েকে না পাইয়া ও আসামীদেরকেও না পাইয়া বিগত ২৬/১১/২০১৩ ইং তারিখে নবাবগঞ্জ থানায় মামলা করিতে গেলে থানার পুলিশ ঘটনাকে অপব্যাখ্যা দিয়া মামলা না নিয়া কোর্টে মামলা করার পরামর্শ দিলে বাদিনী বিজ্ঞ আদলতে তাহার মেয়েকে উদ্ধারের ও আসামীদের শাস্তির দাবীতে ন্যায় বিচারের আশায় অত্র মামলা দায়ের করিলেন।

 

৭। যেহেতু ১-৫ নং আসামী বাদিনীর নাবালিকা মেয়েকে জোর পূর্বক অপহরণ করিয়া এবং এবং ৬ ও ৭নং আসামী উক্ত অপহরনের সহায়তা করিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী-০৩) এর ৭/৩০ ধারায় অপরাধ করিয়াছে।

 

অতএব হুজুর আদালতে বাদিনীর প্রার্থনা, ন্যায় বিচারের স্বার্থে অত্র  মামলাটি আমলে গ্রহণ করিয়া আসামীদের প্রতি W/A ইস্যু করতঃ  নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার প্রতি ভিকটিমকে উদ্ধারের  প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার আদেশ করতঃ সাক্ষ্য প্রমান গ্রহণ করিয়া  মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আসামীদেরকে গ্রেফতার পূর্বক জেল  হাজতে আটক রাখিরা সুবিচার করিতে মর্জি হয়।

 

ইতি, তাং

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *