চুক্তি প্রবলের মোকদ্দমার আর্জি সাফ কবলা দলিল সম্পাদনের জন্য
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন, ১৮৭৭ এর ধারা ১২ অনুযায়ী চুক্তি প্রবলের (Specific Performance of Contract) নিমিত্তে সাফ কবলা দলিল সম্পাদন বিষয়ে মোকদ্দমার আর্জি।
মোকাম: জিলা ঢাকার যুগ্ম জিলা জজ আদালত নম্বর-২, ঢাকা।
দেওয়ানী মোকদ্দমা নম্বর ১৪২/২০২৪
আলহাজ্ব মোঃ ফজলুল হক সরকার,
পিতা মরহুম-আলহাজ্ব মোঃ আলী আকবর সরকার,
সাং-৬১, লয়েল স্ট্রীট, পাটুয়াটুলী রোড, থানা-কোতয়ালী, জেলা ও শহর-ঢাকা।
——————-বাদী।
-বনাম-
১। তাহমিনা বেগম, স্বামী-সিরাজুল ইসলাম,
সাং-আমকী, থানা-সোনাইমুড়ী, জেলা-নোয়াখালী, হাল সাং-২-৮/১১৫- ১১৬, রাইনখোলা, থানা-মিরপুর, জেলা-ঢাকা।
——————মূল-বিবাদী।
২। বাংলাদেশ সরকার পক্ষে জেলা প্রসাশক, ঢাকা। সাং-জেলা প্রসাশকের কার্যালয়, থানা-কোতয়ালী, জেলা ও শহর-ঢাকা।
—————–মোকাবেলা-বিবাদী।
চুক্তি প্রবলের (Specific Performance) নিমিত্তে সাফ কবলা দলিল সম্পাদনের মোকদ্দমাঃ-
মোকদ্দমার তায়দাদঃ- ৩৫,০০,০০০/ (পয়ত্রিশ লক্ষ) টাকা।
বাদীর বিনীত নিবেদন এই যে,
১। নিম্ন তফসিল বর্ণিত সম্পত্তি যাহা অতঃপর অত্র আরজীতে নালিশী সম্পত্তি বলিয়া উল্লেখ হইবে যাহা ঢাকা জেলার মিরপুর থানাধীন বিশিল নিবাসী তৎকালীন মালিক ও স্বত্বাধিকারী মৃত গেতু দেওয়ানের স্ত্রী আউয়াল নেছা বিবির নিকট হইতে এবং উক্ত থানাধীন জহুরাবাদ নিবাসী মৃত ইলিম চাঁন বেপারীর পুত্র মোহাম্মদ দয়াল মিয়ার নিকট হইতে বিগত ২৪/১১/১৯৫২ তারিখে ঢাকা সদর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রিকৃত ১০২৫২ নম্বর সাফ কবলা দলিল দ্বারা আব্দুল শরিফ খাঁ, পিতা মরহুম-বসর উদ্দিন খাঁ খরিদ করিয়া খরিদ সূত্রে মালিক দখলকার নিয়ত হন ও থাকেন। প্রসঙ্গতঃ বলা আবশ্যক, বর্ণিত আব্দুল শরিফ খাঁ তাহার স্বত্ব দখলীয় সম্পত্তিতে ভোগ দখলে থাকাবস্থায় তাহার অপর সহ-শরীকদের সহিত এজমালিতে যথাক্রমে এস, এ. এবং আর, এস. জরীপ আমলে। আসিলে তাহার নামে সঠিক ও শুদ্ধরূপে এস, এ. খতিয়ান নম্বর সাবেক ২৬৮ হাল ১৭৯ এবং আর, এস, খতিয়ান ১৯৭ উল্লেখে প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়।
২। অতঃপর বর্ণিত আব্দুল শরিফ খাঁ তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তিতে উপরিউক্তভাবে ভোগ দখলে থাকাবস্থায় তাহার নগদ টাকার বিশেষ প্রয়োজনে তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তি সাফ বিক্রয়ের নিমিত্তে প্রকাশ্যে ঘোষনা দিলে জেলা ঢাকার ১৩৯, লেক সার্কাস নিবাসী মরহুম-মৌলভী আব্দুল গণির পুত্র আহামদুল হক উহা জানিতে পারিয়া উপযুক্ত মূল্যে খরিদ করিতে সম্মত হইলে বর্ণিত আব্দুল শরিফ খাঁ কর্তৃক বিগত ২৩/০২/১৯৭৬ তারিখে সম্পাদিত ও জেলা ঢাকার সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিষ্ট্রিকৃত ৩৮৭৪ নম্বর সাফ কবলা দলিল মূলে নালিশী সম্পত্তি বর্ণিত আহামদুল হক এর নিকট সাফ বিক্রয় করতঃ বিক্রীত সম্পত্তি হইতে বর্ণিত শরিফ খাঁ চিরতরে নিঃস্বত্ববান হন।
৩। অতঃপর বর্ণিত আহামদুল হক তাহার খরিদা নালিশী সম্পত্তিতে মালিক দখলকার নিয়ত হইয়া ভোগ দখলে থাকাবস্থায় তাহার সাংসারিক নানাবিধ কারণে নগদ টাকার আবশ্যক হওয়ায় তফসিল বর্ণিত সম্পত্তি বিক্রয়ের নিমিত্তে প্রকাশ্যে ঘোষনা দিলে ১নং বিবাদী তাহা জানিতে পারিয়া বাজার সর্ব্বোচ্চ মূল্যে খরিদ করিতে সম্মত হইলে বর্ণিত আহামদুল হক কর্তৃক বিগত ০৮/০৬/২০০৫ তারিখে সম্পাদিত ও মিরপুর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রিকৃত ৩৪৬২ নম্বর সাফ কবলা দলিল মূলে সাফ বিক্রয় করতঃ বিক্রীত সম্পত্তির খাস দখল ক্রেতা ১নং বিবাদী তাহমিনা বেগম এর বরাবরে বুঝাইয়া দিয়া চিরতরে নিঃস্বত্ববান হন।
৪। অতঃপর ১নং বিবাদী উপরিউক্ত বর্ণনা অনুযায়ী নালিশী সম্পত্তি উহার প্রকৃত মালিকের নিকট হইতে খরিদ সূত্রে মালিক দখলকার নিয়ত হইয়া তাহার নামে যথাক্রমে আর, এস, রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকা মহানগর জরীপ অনুযায়ী নামজারী জমাভাগ কেস নম্বর যথাক্রমে ৪৩১৫/০৫ তারিখ ২৫/০৭/২০০৫ এবং ঢাকা মহানগর জরীপ অনুযায়ী ২৪৫৪/-১১ তারিখ ২১/১২/২০১০ মূলে নামজারী জমাভাগ করতঃ পৃথক খতিয়ান খুলিয়া ডি. সি. আর, প্রাপ্ত হইয়া তাহার দেয়া খাজনা- ট্যাক্সাদি নিয়মিত পরিশোধ পূর্বক ভোগ দখল করিতে থাকেন।
৫। উপরিউক্ত বর্ণনা অনুযায়ী ১নং বিবাদী তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তিতে তাহার নিরঙ্কুশ ও একক মালিকানায় ভোগ দখলে থাকাস্থায় তাহার নগদ টাকার আবশ্যক হওয়ায় তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তি সাফ বিক্রয়ের নিমিত্তে প্রকাশ্যে ঘোষনা দিলে অত্র মোকদ্দমার বাদী তাহা জানিতে পারিয়া নালিশী সম্পত্তির মূল্য ৩৪,০০,০০০/ (চৌত্রিশ লক্ষ) টাকা বলায় ১নং বিবাদী বাজার যাচাই অন্তে উক্ত মূল্যে তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তি বাদীর নিকট সাফ বিক্রয়ের নিমিত্তে সম্মত ও রাজী হইয়া মূল্য মধ্যে বায়না ব্যাবদ ২১,৫০,০০০/ (একুশ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা নগদ গ্রহণ পূর্বক বিগত ০৭/০৭/২০১০ তারিখে সম্পাদিত ও মিরপুর সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসে রেজিষ্ট্রীক্ত একটি বায়নাপত্র দলিল সহি সম্পাদন করিয়া দেন।
৬। উল্লেখ্য, উক্ত বায়নাপত্রের শর্ত অনুযায়ী বাদী নালিশী সম্পত্তির সমূদয় দলিল-পর্চা ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র হাল নাগাদ করতঃ বাদীর নিকট হইতে মূল্যের অবশিষ্ট =১২.৫০,০০০/ (বার লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা গ্রহণ করিয়া নালিশী সম্পত্তির সাফ কবলা দলিল সহি সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রি করিয়া দেওয়ার জন্য বলিলে ১নং বিবাদী নালিশী সম্পত্তির আর, এস. পর্চা পাইলেই তিনি মূল্যের অবশিষ্ট টাকা গ্রহণ করিয়া সাফ কবলা দলিল সহি সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করিয়া দিবেন বলিয়া বাদীর নিকট হইতে সময় লন এবং বাদী বিবাদীর উক্তরূপ কথায় আশ্বস্ত হন।
৭। উল্লেখ্য, উপরিউক্ত বায়নাপত্র সহি সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রির কিছু দিন পর ১নং বিবাদী নালিশী সম্পত্তির আর, এস, পর্চা উত্তোলন করিয়াছেন কি-না তৎসম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিলে তিনি যে জবাব দেন তাহাতে বিবাদীর কথায় বাদীর কিছুটা সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে বাদী বিবাদীর সহিত একাধিকবার যোগাযোগ করিবার চেষ্টা করিয়া ব্যর্থ হইলে বাদী অনন্যপায় হইয়া নালিশী সম্পত্তির এলাকায় বসবাস রত ভদ্রলোকদের সম্বন্বয়ে গঠিত তুরাগ সিটি উন্নয়ন ও পরিচালনা কমিটি এর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদন বরাবরে বাদী বিগত ০১/০৯/২০১০ তারিখে একটি আবেদন পত্র প্রদান পূর্বক নালিশী সম্পত্তি সম্পর্কে ১নং বিবাদীর সম্পাদিত বায়নাপত্রের পোষকতায় সাফ কবলা দলিল সহি সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রি করিয়া দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। বলা আবশ্যক, উক্ত নোটিশের প্রেক্ষিতে ১নং বিবাদী-কে উক্ত কমিটি ডাকিলে তিনি উক্ত কমিটির সম্মুখে হাজির হন নাই। তবে তিনি ব্যক্তিগতভাবে বাদীর সহিত যোগাযোগ করিয়া নালিশী সম্পত্তির আর, এস, পর্চা পাইলেই প্রয়োনীয় সাফ কবলা দলিল সহি সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করিয়া দিবেন মর্মে বাদীকে জানান এবং বাদী যেন বিবাদীর বিরুদ্ধে আর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করেন তজ্জন্য বাদীকে অনুরোধ করেন।
৮। বিবাদীর উক্তরূপ অনুরোধের পর বাদী অচিরেই নালিশী সম্পত্তি সম্পর্কে ১নং বিবাদী বাদীর বরাবরে প্রয়োজনীয় সাফ কবলা দলিল সহি সম্পাদন করিয়া দিতেছেন মর্মে আশায় বুক বাঁধিয়া থাকাবস্থায় বাদী ১নং বিবাদীর নিকট হইতে বিগত ২২/০৯/১০ তারিখে একটি লিগ্যাল নোটিশ পান যাহাতে ১নং বিবাদী সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে মূল্যের অবশিষ্ট টাকা ১নং বিবাদীকে প্রদান পূর্বক যেন নালিশী সম্পত্তির সাফ কবলা দলিল সহি সম্পাদন করাইয়া লয় অন্যথায় উক্ত বায়নাপত্র বাতিল বলিয়া গন্য হইবে মর্মে উল্লেখ করা হয়। বলা আবশ্যক, বাদী ১নং বিবাদীর নিকট হইতে উক্তরূপ নোটিশ প্রাপ্তীর সঙ্গে সঙ্গে কালবিলম্ব না করিয়া ১নং বিবাদীর সহিত বাদী ব্যাক্তিগতভাবে যোগাযোগ করেন। ১নং বিবাদী বাদীকে মৌখিকভাবে জানান যে, আমার প্রেরিত নোটিশে যাহাই থাকুক না কেন উহা কোন বিষয় নহে। তফসিল বর্ণিত সম্পত্তি সম্পর্কিত আর. এস. পর্চা আমি হাতে পাইলেই তফসিল বর্ণিত সম্পত্তি সম্পর্কে আমার সম্পাদিত বায়নাপত্র অনুযায়ী আপনার কিম্বা আপনার মনোনীত এক বা একাধিক ব্যক্তির বরাবরে সাফ কবলা দলিল সহি সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করিয়া দিব। সুতরাং এই বিষয়ে আপনি কোনরূপ দুঃশ্চিন্তা করিবেন না। পরবর্তীতে বেশ কিছু দিন অতিবাহিত হইবার পর ১নং বিবাদী যখন তফসিল বর্ণিত সম্পত্তি সম্পর্কে সাফ কবলা দলিল সহি সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করিয়া দেত আর. এস. পর্চা এখনও পাওয়া যায় নাই মর্মে কেবলই অজুহাত দেখাইতে থাকেন তখন বাদী বাধ্য হইয়া তাহার নিযুক্তীয় বিজ্ঞ আইনজীবী জনাব মোঃ আব্দুল আলীম মিয়া এর মারফত উক্ত নোটিশের উত্তর বিগত ০১/১২/১০ তারিখে ১নং বিবাদীর আইনজীবী জনাব তুষার বণিক, সাকিন-রুম নম্বর ১২০ জওহের কমপ্লেক্স, গ্রাউন্ড ফ্লোর, ১৪নং কোর্ট হাউস স্ট্রীট, থানা-কোতয়ালী, ঢাকা-১১০০ বরাবরে প্রদান করেন কিন্তু উক্ত নোটিশটি Not Known উল্লেখে ফেরত আসে। ফলে বাদীর আইনজীবী পুনরায় ১নং বিবাদীর আইনজীবী সাহেবের পূর্ণ ঠিকানা প্রদান পূর্বক বিগত ২২/১২/১০ তারিখে প্রেরণ করিলে উক্ত আপত্তি “বিলিকালীন সময়ে প্রাপক সর্বদাই অনুপস্থিত” উল্লেখে বাদীর আইনজীবীর নিকট ফেরৎ আসে।
৯। অতঃপর বাদী তাহার উক্ত আইনজীবী সাহেবের মাধ্যমে ১নং বিবাদীকে নালিশী সম্পত্তির সংশ্লিষ্ট দলিল দস্তাবেজ ও পর্চা সমূহ সংগ্রহ করতঃ মূল্যের অবশিষ্ট টাকা বাদীর নিকট হইতে গ্রহণ করিয়া বাদী কিম্বা তাহার মনোনীত ব্যক্তি/ব্যক্তিগণের বরাবরে ১নং বিবাদীর সম্পাদিত বায়নাপত্রের পোষকতায় নালিশী সম্পত্তির সাফ কবলা দলিল সহি সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করিয়া দেওয়ার জন্য বিগত ০৯/০২/২০১১ তারিখে একটি লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেন। কিন্তু উক্ত নোটিশটিও “প্রাপক উক্ত ঠিকানায় না থাকায় ফেরৎ “উল্লেখে বাদীর আইনজীবীসাহেবের নিকট ফেরৎ আসে।
১০। উল্লেখ্য, বাদী ব্যক্তি জীবনে একজন ব্যবসায়ী। তিনি সরল বিশ্বাসে ১নং বিবাদীর কথায় বিশ্বাস করিয়া এবং তাহার সকল কাগজপত্র না দেখিয়াই তাহার নিকট হইতে তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তি খরিদ করিতে সম্মত ও রাজী হইয়া ছিলেন। পক্ষদ্বয়ের মধ্যে কথা থাকে যে, ১নং বিবাদী নালিশী সম্পত্তিতে তাহার মালিকানার সকল দলিল দস্তাবেজ ও পর্চাসহ যাবতীয় কাগজপত্র সঠিক করিয়া বাদীর নিকট হইতে মূল্যের অবশিষ্ট টাকা গ্রহণ করিয়া নালিশী সম্পত্তির সাফ কবলা দলিল সহি সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করিয়া দিবেন। কিন্তু পরবর্তীতে ১নং বিবাদী তাহার কাগজপত্র ঠিক না করিয়া দূর্লোভের বশবর্তী হইয়া অসৎ উদ্দেশ্যে তাহার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করিয়া তাহার তথাকথিত আইনজীবী যাহাকে তাহার উল্লেখিত ঠিকানায় পাওয়া যায় না এমন আইনজীবীকে দিয়া স্বল্প সময় দিয়া বাদীকে একটি নোটিশ দেয়। বাদী মূলতঃ ১নং বিবাদীর কথায় সরল বিশ্বাসে বিশ্বাস স্থাপন করিয়া উপযুক্ত মূল্যে তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তি বাজার সর্ব্বোচ্চ তথা উপযুক্ত মূল্যে খরিদ করিবার নিমিত্তে বায়নাবদ্ধ হইয়াছেন এবং বায়নার মেয়াদের মধ্যেই তিনি নালিশী সম্পত্তির অবশিষ্ট মূল্য পরিশোধ পূর্বক তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তি সম্পর্কে সাফ কবলা দলিল সহি সম্পাদন করিয়া দেওয়ার জন্য ১নং বিবাদীকে অনুরোধ করিয়া আসিতেছেন। তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তি সম্পর্কে বিগত ০৭/০৭/২০১০ তারিখে ১নং বিবাদী কর্তৃক বাদীর বরাবরে সম্পাদিত ও রেজিষ্ট্রিকৃত বায়নাপত্রের কোন শর্ত বাদী ভঙ্গ করেন নাই। বাদী নালিশী সম্পত্তির অবশিষ্ট মূল্য পরিশোধ পূর্বক সাফ কবলা দলিল সহি সম্পাদন করিয়া দেওয়ার জন্য সর্বদাই ১নং বিবাদীকে অনুরোধ করিয়াছেন। এমনকি পরবর্তীতে বাদী যখন অনুধাবন করিতে পারিলেন যে, সম্ভবতঃ ১নং বিবাদী তাহার সম্পাদিত বায়নাপত্র অনুযায়ী সাফ কবলা দলিল সহি সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করিয়া না দেওয়ার কোন অপকৌশল খুঁজিতেছে। ঠিক তখনই বাদী তাহার আইনজীবীকে দিয়া ১নং বিবাদীর বরাবরে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেন। অর্থাৎ বাদী তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তির অবশিষ্ট মূল্য ১নং বিবাদীকে পরিশোধ করিতে সর্বদাই প্রস্তুত ছিল এবং এখনও আছে। কিন্তু ১নং বিবাদী অসৎ উদ্দেশ্যে বাদীকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করিয়া নিজে লাভবান হইবার অসৎ উদ্দেশ্যে বাদীর নিকট হইতে নালিশী সম্পত্তির অবশিষ্ট মূল্য গ্রহণ করেন নাই এবং সাফ কবলা দলিলও সহি সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রি করিয়া দেন নাই যাহা তিনি করিয়া দিতে আইনতঃ ও ন্যায়তঃ বাধ্য এবং বাদী তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তি সম্পর্কে বর্ণিত বায়নাপত্রের পোষকতায় সাফ কবলা দলিল পাইবার অধিকারী বটে। কিন্তু ১নং বিবাদী তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তি সম্পর্কে বাদী কিম্বা তাহার মনোনীত ব্যক্তির অনুকূলে সাফ কবলা দলিল সহি সম্পাদন করিয়া না দেওয়ায় তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তি সম্পর্কে সাফ কবলা দলিল সহি সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করিয়া দেওয়ার জন্য বাদী অত্রাকারে চুক্তি প্রবলের মোকদ্দমা দায়ের করিতে বাধ্য হইলেন। প্রসঙ্গতঃ বলা আবশ্যক, নালিশী সম্পত্তির মূল্যের অবশিষ্ট =১২,৫০,০০০/ (বার লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা /০৩/১১ তারিখের … … … নম্বর চালান মূলে বিজ্ঞ আদালতে জমা দিয়াছেন উক্ত চালানের মূল কপি অত্র সহ দাখিল করা হইল।
১১। তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তি সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারে কোন স্বত্ব-স্বার্থ, মালিকানা কিম্বা কোনরূপ দখলাধিকার নাই। কিন্তু যেহেতু পি. ও. ১৪২/১৯৭২ এর আদেশ অনুযায়ী যে কোন প্রকার চুক্তিপ্রবলের মোকদ্দমায় বাংলাদেশ সরকারকে পক্ষভূক্তি করিবার বিধান রাখা হইয়াছে বিধায় বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে কোনরূপ প্রতিকার না চাহিয়া শুধুমাত্র তাহার উপস্থিতিতে মোকদ্দমাটি নিষ্পত্তি হওয়া আবশ্যক হেতু তাহার প্রতিনিধি জিলা প্রশাসক ঢাকা-কে মোকাবেলা বিবাদী করিয়া মোকদ্দমাটি দায়ের করা হইল। কিন্তু মোকাবেলা বিবাদী যদি বাদীর আরজীর বিরুদ্ধে লিখিত জবাব দাখিল করিয়া মোকদ্দমায় প্রতিযোগীতা করেন তাহা হইলে মূল বিবাদীদের বিরুদ্ধে প্রার্থীত প্রতিকার তাহার বিরুদ্ধেও চাওয়া হইয়াছে বলিয়া গন্য ও বিবেচিত হইবে।
১২। মোকদ্দমার কারণঃ- বাদী কর্তৃক ১নং বিবাদীকে বিগত ০৯/০২/১১ তারিখে আইনগত নোটিশ প্রদান করিলে ১নং বিবাদী উক্ত নোটিশ ১নং বিবাদীর বরাবরে জারীর নিমিত্তে সর্বশেষ ডাক পিয়ন বিগত ১৭/০২/১১ তারিখে গেলে উক্ত তারিখেও ১নং বিবাদী ইচ্ছাকৃতভাবে গ্রহণ না করিয়া ফেরৎ প্রদান করায় যদিও আইনের বিধান অনুযায়ী উক্ত নোটিশ বিবাদীর প্রতি যথাযথভাবে জারী হইয়াছে বিধায় উক্ত নোটিশে উল্লেখিত বিগত ০৪/০৩/২০১১ তারিখে উত্তীর্ণ হইবার তারিখে ১নং বিবাদী নালিশী সম্পত্তি সম্পর্কে বাদীর অনুকূলে সাফ কবলা দলিল সহি সম্পাদন করিয়া না দেওয়ায় অত্র মোকদ্দমার কারণ অত্রাদালতের এক্তিয়ারাধীন মিরপুর থানার অর্ন্তগত বিশিল মৌজাস্থিত তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তিতে উদ্ভব হইয়া এখনও বিদ্যমান আছে।
১৩। মোকদ্দমার মূল্যায়ণঃ- যেহেতু বর্তমান মোকদ্দমাটি একটি চুক্তি প্রবলের মোকদ্দমা সেইহেতু নালিশী সম্পত্তির ধার্য্যকৃত মূল্য =৩৪,০০,০০০/ (চৌত্রিশ লক্ষ) টাকা ধার্য্য করতঃ ধার্য্যকৃক্ত মূল্যের উপর সর্ব্বোচ্চ কোর্ট ফি অর্থাৎ ৪০,০০০/ (চল্লিশ হাজার) টাকার অ্যাডভেলোরেম কোর্ট ফি প্রদান করিয়া বর্তমান মোকদ্দমাটি দায়ের করা হইল। বলা আবশ্যক, কোর্ট ফি চালানের মূল কপিও অত্র সহ দাখিল দেওয়া গেল।
অতএব বিনীত প্রার্থনা হুজুরাদালত দয়া করিয়াঃ-
(ক) নিম্ন তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তি সম্পর্কে বাদী কিম্বা তাহার মনোনীত ব্যক্তি/ব্যক্তিগণের বরাবরে সাফ কবলা দলিল সহি সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রি করিয়া দেওয়ার জন্য এবং নালিশী সম্পত্তির খাস দখল সাফ কবলা দলিল গ্রহীতার বরাবরে বুঝাইয়া দেওয়ার জন্য বাদীর অনুকূলে এবং ১নং বিবাদীর প্রতিকূলে ডিক্রী দিতে;
এবং
(খ) ১নং বিবাদী যদি ডিক্রীর মর্মমতে তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তি সম্পর্কে সাফ কবলা দলিল সহি সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করিয়া না দেন তাহা হইলে বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক উক্ত সাফ কবলা দলিল সহি সম্পাদন পূর্বক রেজিস্ট্রি করিয়া দেওয়ার ডিক্রী দিতে;
এবং
(গ) ১নং বিবাদী যদি ডিক্রীর মর্মমতে নির্দ্ধারিত সময়ের মধ্যে তফসিল বর্ণিত নালিশী সম্পত্তির খাস-দখল বুঝাইয়া না দেন; তাহা হইলে ১নং বিবাদীর সকল প্রকার বাঁধা-বিঘ্ন অপসারণ পূর্বক আদালত যোগে নালিশী সম্পত্তির খাস- দখল বুঝাইয়া দেওয়ার নিমিত্তে বাদীর অনুকূলে এবং ১নং বিবাদীর প্রতিকূলে ডিক্রি প্রদান করিতে;
এবং
(ঙ) মোকদ্দমার যাবতীয় খরচের ডিক্রী বাদীর অনুকূেলে এবং প্রতিযোগী বিবাদীর প্রতিকূলে প্রদানের ডিক্রী দিতে;
এবং
(চ) আইন এবং ইকুইটি মতে বাদী আর যে সকল প্রতিকার পাইবার অধিকারী হয় তদমর্মে যথোপযুক্ত আদেশ দানে সুবিচার করিতে মর্জি হয়।
নালিশী সম্পত্তির তফসিলঃ-
জিলা-ঢাকা, থানা ও সাব-রেজিস্ট্রী অফিস মিরপুর অধীন। ঢাকা কালেক্টরীর ৯৪৫৭ নং তৌজিভূক্ত। জে. এল. নং সাবেক ২২৪, এস. এ. ৪৮, আর. এস. ২৭, ঢাকা সিটি জরীপে ৩, মৌজা স্থিত। সি. এস. ২৬৮নং এস. এ. ১৭৯নং আর. এস. ১৯৭নং ঢাকা সিটি জরীপে ৬০২নং মিউটেশন ১৪৬৮নং খতিয়ানের সি. এস. ও এস. এ. ৮৪নং আর. এস. ৬৯নং ঢাকা সিটি জরীপে ২৪৩১নং দাগে মোট জমি ১১.৭০ শতাংশ বা ১১৭০ একর ইহার কাতে ১নং বিবাদীর খরিদা ২.৬২ কাঠা বা ০৪৩২ (চারশত বত্রিশ) অযুতাংশ নাল জমি। যাহার চৌহদ্দিঃ-উত্তরেঃ-নকুল মজুমদার, দক্ষিনেঃ-শহীদ, পূর্বেঃ-অন্য দাগের জমি এবং পশ্চিমেঃ-মোস্তফা কামাল ও রাস্তা। এই চৌহদ্দিভূক্ত জমি অত্র মোকদ্দমার নালিশী সম্পত্তি যাহা বাদী এবং ১নং বিবাদীর মধ্যে বিগত ০৭/০৭/২০১০ তারিখে সম্পাদিত এবং রেজিস্ট্রিকৃত ৯১৮৯ নম্বর বায়নাপত্র দলিল মূলে বায়নাকৃত যাহা সম্পর্কে বাদী চুক্তি প্রবলের প্রার্থনায় বর্তমান মোকদ্দমাটি দায়ের করিয়াছেন।
সত্যপাঠঃ-
অত্র আরজীর সকল বর্ণনা আমার জ্ঞান ও বিশ্বাসমতে সত্য এবং আমার কথামত প্রস্তুত করা হইয়াছে জানিয়া উহার সত্যতা স্বীকারে অত্র সত্যপাঠে দস্তখত করিলাম।
—————————————–
(আলহাজ্ব মোঃ ফজলুল হক সরকার)