ভ্যাট (VAT) কি এবং ভ্যাটের ধাপ সমূহ কি কি
শাব্দিক অর্থ-
ভ্যাট বা VAT এর পূর্ণ অর্থ হচ্ছে Value Added Tax বা মূল্য সংযোজন কর। ইহা এক ধরনের পরোক্ষ কর বা Indirect Tax, যাহা কোন পণ্য বা সেবার মূল্য সংযোজন (Value Addition) এর প্রতি ধাপে সরকারকে প্রদান করা হয়।
পণ্য বা সেবার ভ্যাট আদায়ের ধাপসমূহ-
১। আমদানি (Import),
২। উৎপাদন (Manufacturing),
৩। পাইকারী বিক্রয় (Wholesale),
৪। খুচরা বিক্রয় (Retail)।
মূল্য সংযোজন (Value Addition)-
আমদানিকারক (Importer), উৎপাদনকারী (Manufacturer), পাইকারী বিক্রেতা (Wholesaler), খুচরা বিক্রেতা (Retailer) প্রত্যেকেই তাহাদের নিজেদের লাভ যোগ করার কারণে প্রত্যেক ধাপেই মূল্য বৃদ্ধি পায়। প্রত্যেক ধাপের এই মূল্য বৃদ্ধিকেই বলা হয় মূল্য সংযোজন বা Value Addition
মূল্য সংযোজন কর (Value Added Tax)-
মূল্য সংযোজনের প্রত্যেক ধাপে সরকারকে যে কর (tax) প্রদান করতে হয় তাকেই বলা হয় মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা Value Added Tax (VAT) বা ভ্যাট।
ভ্যাট কার্য্যক্রম পরিচালনাকারী-
বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা National Board of Revenue (NBR) এর ভ্যাট বিভাগ ভ্যাটের সকল কার্য্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
ভ্যাট আদায়কারী-
সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য বা সেবার জন্য সরকারের পক্ষে ভ্যাট (VAT) আদায় করে সরকারকে উহা জমা দিয়ে থাকে।
ভ্যাট প্রদানকারী-
মূলত পণ্য ক্রেতা বা সেবা গ্রহণকারী অর্থাৎ পণ্য বা সেবার অন্তিম ভোক্তাই মূলত ভ্যাট (VAT) প্রদান করে থাকে।
ভ্যাটের হার-
বাংলাদেশে সাধারণত ১৫% হারে ভ্যাট আদায় করা হয় তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম রয়েছে।
উদাহরণ-
ধরা যাক,
একটি পণ্যের কাঁচামালের দাম কিংবা আমদানি খরচ ১০০ টাকা।
১। আমদানি ধাপ-
একটি পণ্যের কাঁচামালের দাম কিংবা আমদানি খরচ ১০০ টাকা। আমদানিকারক সরকারকে ১৫% ভ্যাট দিয়েছে। বিধায় মোট খরচ ১১৫ টাকা।
আমদানি খরচ ১৫% ভ্যাটসহ | মূল্য সংযোজন | মোট | ১৫% ভ্যাট | বিক্রয় মূল্য |
১১৫ | ২০ | ১৩৫ | ২০.২৫ | ১৫৫.২৫ |
আমদানিকারক ১৫৫.২৫ টাকায় বিক্রয় করেন। যার মধ্যে সে তার ক্রেতার নিকট থেকে ভ্যাট হিসাবে আদায় করেছেন ২০.২৫ টাকা। এই ভ্যাট থেকে তার আমদানি করার সময় প্রদত্ত ভ্যাট ১৫ টাকা কেটে রেখে (রেয়াত নিয়ে) অবশিষ্ট ৫.২৫ টাকা সরকারকে প্রদান করবে।
২। উৎপাদন ধাপ-
উৎপাদক পণ্য তৈরি করে ২০ টাকা মূল্য যোগ করল। তাহলে পণ্যের মূল্য হবে (১৫৫.২৫+২০+১৫% ভ্যাট)=১৩৫ টাকা
উৎপাদকের ক্রয় মূল্য | মূল্য সংযোজন | মোট মূল্য (টাকা) | ১৫% ভ্যাট | বিক্রয় মূল্য |
১৫৫.২৫ টাকা | ২০ | ১৭৫.২৫ | ২৬.১৪ | ২০১.৩৯ |
উৎপাদক ২০১.৩৯ টাকায় বিক্রয় করে তার ক্রেতার নিকট থেকে গৃহিত ভ্যাট ২৬.১৪ টাকা থেকে তার প্রদত্ত ভ্যাট ২০.২৫ টাকা কেটে রেখে (রেয়াত নিয়ে) অবশিষ্ট ৫.৮৯ টাকা সরকারকে প্রদান করবে।
৩। পাইকারি বিক্রয় ধাপ-
পাইকারি বিক্রেতা ২০ টাকা মূল্য যোগ করল। তাহলে পণ্যের মূল্য হবে (২০১.৩৯+২০+১৫% ভ্যাট)=২৫৪.৬০ টাকা
পাইকারি বিক্রেতার ক্রয় মূল্য | মূল্য সংযোজন | মোট | ১৫% ভ্যাট | বিক্রয় মূল্য |
২০১.৩৯ টাকা | ২০ | ২২১.৩৯ | ৩৩.২১ | ২৫৪.৬০ |
পাইকারি বিক্রেতা ২৫৪.৬০ টাকায় বিক্রয় করে তার ক্রেতার নিকট থেকে গৃহিত ভ্যাট ৩৩.২১ টাকা থেকে তার প্রদত্ত ভ্যাট ২৬.১৪ টাকা কেটে রেখে (রেয়াত নিয়ে) অবশিষ্ট ৭.০৭ টাকা সরকারকে প্রদান করবে।
৪। খুচরা বিক্রয় ধাপ-
খুচরা বিক্রেতা ২০ টাকা মূল্য যোগ করল। তাহলে পণ্যের মূল্য হবে (২৫৪.৬০+২০+১৫% ভ্যাট)=২৫৪.৭৭ টাকা
পাইকারি বিক্রেতার ক্রয় মূল্য | মূল্য সংযোজন | মোট | ১৫% ভ্যাট | বিক্রয় মূল্য |
২৫৪.৬০ টাকা | ২০ | ২৭৪.৬০ | ৪১.১৯ | ৩১৫.৭৯ |
পাইকারি বিক্রেতা ৩১৫.৭৯ টাকায় বিক্রয় করে তার ক্রেতার নিকট থেকে গৃহিত ভ্যাট ৪১.১৯ টাকা থেকে তার প্রদত্ত ভ্যাট ৩৩.২১ টাকা কেটে রেখে (রেয়াত নিয়ে) অবশিষ্ট ৭.৯৮ টাকা সরকারকে প্রদান করবে।
ভ্যাট কেন নেওয়া হয়?
সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর জন্য এই পদ্ধতিতে ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে ভ্যাট নেওয়া হয়। স্বচ্ছ ট্যাক্স সিস্টেম নিশ্চিত করতে এবং ধাপে ধাপে কর আদায়ের মাধ্যমে কর ফাঁকি রোধ করার জন্য ভ্যাট নেওয়া হয়।
কোন আইনে ভ্যাট নেওয়া হয়?
মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বিধিমালা, ২০১৬ এই আইন অনুযায়ী ভ্যাট আদায় করা হয়।
আইনি সেবা
আমাদের আইনি সেবা সমূহ-
(১) দলিল লেখা ও রেজিস্ট্রি,
(২) নামজারি ও মিস কেইস পরিচালনা,
(৩) ট্যাক্স রিটার্ণ প্রস্তুত ও সাবমিট,
(৪) ভ্যাট রিটার্ণ সাবমিট
(৫) জমি-জমা বা দেওয়ানী মামলা পরিচালনা,
(৬) অপরাধমূলক বা ফৌজদারী মামলা পরিচালনা,
(৭) ট্রেড লাইসেন্স, ড্রাগ লাইসেন্স, সিভিল এভিয়েশন লাইসেন্স, পরিবেশ, ফায়ার ও রাজউক অনুমোদন সহ যেকোন ব্যবসায়িক নতুন লাইসেন্স করা ও নবায়নে সহায়তা,
(৮) জমি ও ফ্ল্যাট ক্রয়-বিক্রয় ও ডেভেলপমেন্ট করা।
যেকোন আইনগত উপদেশ ও সহায়তার জন্য যোগাযোগ করুন-
আইনবিদ লিগাল সল্যুশন
সার্বিক পরিচালনায়- এডভোকেট মুহাম্মদ মহীউদ্দীন (শিশির)
কোর্ট চেম্বার- ১৬, কোইলাশঘোষ লেন, ঢাকা জজ কোর্ট, কোতোয়ালী, ঢাকা
অথবা
ইভনিং চেম্বার- ১২, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র রোড, বাংলামটর, শাহবাগ, ঢাকা
অথবা
রেসিডেন্স চেম্বার- বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা।
মোবাইল- 01540105088/ 01711068609 (Whatsapp)
ওয়েবসাইট- www.ainbid.com