ওয়ারিশি সম্পত্তি অন্যান্য অংশীদাররা বুঝিয়ে না দিলে  কি করবেন

ওয়ারিশি সম্পত্তি অন্যান্য অংশীদাররা বুঝিয়ে না দিলে  করণীয়

ওয়ারিশি বা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি অন্যান্য অংশীদার বা শরীকরা বুঝিয়ে দিতে না চাইলে কিংবা আত্মসাৎ করার চেষ্টা করলে আইনগতভাবে অথবা সামাজিকভাবে তা উদ্ধার করা সম্ভব। নিম্নে ওয়ারিশি সম্পত্তি উদ্ধারের সামাজিক ও আইনি সমাধান ধাপে ধাপে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-

.

আইনগতভাবে মোকাবেলা করে সম্পত্তি উদ্ধার করা দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার এবং প্রচুর ব্যয়বহুল। তাই সর্ব প্রথম সকল ওয়ারিশগণ মিলে পরিবারের সকলকে নিয়ে ঘরোয়া বৈঠকের আয়োজন করে সমাধান করা যেতে পারে। পারিবারিক বৈঠকে সবাই একমত হলে সম্পত্তি ভাগ করে নিয়ে একটি বণ্টননামা দলিল (Partition Deed) সম্পাদন করে উক্ত দলিল স্থানীয় সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রি করে নিতে হবে।

.

পারিবারিক বৈঠকে সমাধান না হলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বা কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে একটি সালিশি বৈঠক আয়োজন করে সমাধান করা যেতে পারে। সালিশির ব্যাপারে “সালিশই আইন ২০০১” এ বিধান বর্ণিত আছে। উক্ত বৈঠকে সবাই একমত হলে সম্পত্তি ভাগ করে নিয়ে একটি বণ্টননামা দলিল (Partition Deed) সম্পাদন করে উক্ত দলিল স্থানীয় সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রি করে নিতে হবে।

.

পারিবারিক বৈঠকে কিংবা সামাজিক আপস-মীমাংসার মাধ্যমে সমাধান না হলে একজন বিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমে অন্যান্য অংশিদারদের নির্দিষ্ট কিছু দিন সময় উল্লেখ করে লিগ্যাল নোটিশ বা আইনি নোটিশ পাঠিয়ে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে আপনার প্রাপ্য অংশ বুঝিয়ে দেওয়ার দাবি জানাতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে  লিগ্যাল নোটিশ পেলে মামলার ভয়ে অন্যান্য ওয়ারিশরা বিরোধ মিটিয়ে ফেলতে চেষ্টা করে।

.

লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর পরও অন্যান্য অংশীদাররা জমি বুঝিয়ে না দিলে সংশ্লিষ্ট দেওয়ানি আদালতে বাটোয়ারা মামলা (Partition Suit) দায়ের করতে হয়। এই মামলায় সবকিছু ঠিক থাকলে বিজ্ঞ আদালত একজন কমিশনার নিয়োগ করে সম্পত্তি বণ্টন করে দিবেন।  

.

বণ্টন মামলা চলাকালীন অন্যান্য শরীকরা ঐ সম্পত্তি অন্য কাহারও নিকট বিক্রয় বা হস্তান্তর করার চেষ্টা করলে বিজ্ঞ আদালতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা (Temporary Injunction) চেয়ে আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিলে অন্যান্য শরীকরা এই মামলার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আর উক্ত সম্পত্তি বিক্রয় বা হস্তান্তর বা সম্পত্তির বর্তমান অবস্থার কোন রকম পরিবর্তন করতে পারবে না।

.

বণ্টন মামলায় আপনার পক্ষে রায় হলে এবং ঐ রায় অনুযায়ী অন্যান্য শরিকরা আপনার ভাগ না ছাড়লে ঐ রায় বাস্তবায়ন করার জন্য একটা জারি মামলা করতে পারেন। জারি মামলার মাধ্যমে আদালত স্থানীয় পুলিশের মাধ্যমে আপনার সম্পত্তির দখল আপনাকে বুঝিয়ে দিবেন।

.

অন্যান্য শরীকরা পেশী শক্তি দেখিয়ে আপনাকে জমি থেকে বের করে দিলে কিংবা জমিতে ঢুকতে না দিলে আপনি নিকটস্থ থানায় অভিযোগ করতে পারেন। থানায় অভিযোগ করে কোন সুফল না পেলে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৪৫ ধারা মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করতে পারেন।

.

মামলায় আপনার পক্ষে রায় পাওয়ার জন্য নিম্নলিখিত কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে-

১। সম্পত্তির মূল দলিল।

২। সম্পত্তির সকল বায়া দলিল।

৩। সি.এস (CS), এস.এ (SA), আর.এস (RS), বি.এস (BS) বা সিটি খতিয়ান বা নামজারি (Mutation) খতিয়ান।

৪। স্থনীয় কাউন্সিলর বা চেয়ারম্যানের থেকে ওয়ারিশান সনদ।

৫। এন.আই.ডি কার্ড।

৬। ডি.সি.আর

৭। ভূমি উন্নয়ন কর রশিদ / খাজনা পরিশোধের দাখিলা।

.

যেকোন আইনগত উপদেশ ও সহায়তার জন্য যোগাযোগ করুন-

সার্বিক পরিচালনায়- এডভোকেট মুহাম্মদ মহীউদ্দীন (শিশির)

কোর্ট চেম্বার- ২/১, কোর্ট হাউজ স্ট্রিট, ঢাকা জজ কোর্ট, কোতোয়ালী, ঢাকা

অথবা

রেসিডেন্স/ইভনিং চেম্বার- ব্লক-এ, রোড-৫, বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা

মোবাইল-  01540105088/ 01711068609 (Whatsapp)

ওয়েবসাইট- www.ainbid.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *