ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনে মামলা করার পদ্ধতি

ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ  প্রতিকার আইন- 

 

ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩ একটি যুগান্তকারী আইন। কারণ ভূমি অপরাধ সংক্রান্ত কোন আইন ইতিপূর্বে কখনও প্রণয়ন করা হয় নাই। এই ধরণের আইন বাংলাদেশে এই প্রথম। এ যাবত ভুমি সংক্রান্ত অপরাধের মামলা দন্ডবিধি অধীনে করা হতো। এই আইন প্রণয়ন করায় মানুষ ভূমি সংক্রান্ত অপরাধের বিচার সুনির্দিষ্টভাবে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

সে সকল অপরাধের বিষয়ে এই উল্লেখ করা হয়েছে

 

ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩ এই আইনে নিম্নলিখিত অপরাধ সমূহের উল্লেখ রয়েছে-

 

ক্রমিক অপরাধ দন্ড ধারা
১। ভূমি প্রতারণার দণ্ড অনধিক ৭ বৎসর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড ধারা ৪(২)
২। ভূমি জালিয়াতির দণ্ড অনধিক ৭ বৎসর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড ধারা ৫(২)
৩। অবৈধ দখলের দণ্ড অনধিক ২ বৎসর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড ধারা ৭(৩)
৪। ক্রেতা বরাবর বিক্রিত ভূমির দখল হস্তান্তর না করার দণ্ড অনধিক ২ বৎসর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড ধারা ৯

 

৫। সীমানা বা ভূমির ক্ষতিসাধনের দণ্ড অনধিক ২ বৎসর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড ধারা ১০
৬। সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা জনসাধারণের ব্যবহার্য ভূমির অবৈধ দখল, প্রবেশ বা কোনো কাঠামো নির্মাণ বা ক্ষতিসাধনের দণ্ড অনধিক ২ বৎসর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড ধারা ১১
৭। সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের স্বার্থযুক্ত বা জনসাধারণের ব্যবহার্য ভূমি অবৈধ ভরাট, শ্রেণি পরিবর্তন, ইত্যাদির দণ্ড অনধিক ২ বৎসর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড ধারা ১২
৮। মাটির উপরি-স্তর কর্তন ও ভরাটের দণ্ড অনধিক ২ বৎসর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড ধারা ১৩
৯। ৮ ধারার নির্বাহী আদেশ অমান্যের দণ্ড অনধিক ২ বৎসর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড ধারা ১৫
১০। অপরাধ সংঘটনে সহায়তা বা প্ররোচনার দণ্ড প্রকৃত অপরাধ সংঘটনকারী ব্যক্তির সমপরিমাণ দণ্ড ধারা ১৬
১১। অপরাধ পুনঃসংঘটনের দণ্ড

 

যে ধারায় ইতিপূর্বে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন উক্ত ধারায় নির্ধারিত দণ্ডের দ্বিগুণ ধারা ১৭

 

এই আইনে অপরাধের বিচারের ধরণ–    

এই আইনের ধারা ১৯(১) এর অধীন,

১। সকল অপরাধসমূহ- আমলযোগ্য (Cognizable),

২। ধারা ৪ ও ৫ এ বর্ণিত অপরাধ সমূহ- অ-জামিনযোগ্য (Non-bailable),

৩। অন্যান্য ধারায় বর্ণিত অপরাধ সমূহ- জামিনযোগ্য (Bailable) এবং আপোষযোগ্য (compoundable)।

 

কোন আদালতে মামলা করতে হবে–                

ধারা ৮-

এই আইনের ধারা ৮ এর অধীন মামলা করতে হবে- জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। এই ধারায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৩ মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির বিধান রয়েছে। অন্যথায় উক্ত আদালতের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।

ধারা ১৯(২)-

এই আইনের ধারা ১৯(২) এর অধীন মামলা করতে হবে – প্রথম শ্রেণির জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।

 

মামলা নিষ্পত্তির তারিখ ধারা ১৯(৩)

এই আইনের অধীন মামলা সমাপ্ত করতে হবে – মাওলা প্রাপ্তির তারিখ থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে।

 

অবৈধভাবে দখলচ্যুত ব্যক্তির দখল পুনরুদ্ধার

১। অবৈধভাবে উচ্ছেদ বা দখলচ্যুত করা হলে আবেদন করতে হবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট/ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (Executive Magistrate/ District Magistrate) এর নিকট।

২। সত্যতা প্রমাণিত হলে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আবেদন প্রাপ্তির পর হতে ৩ মাসের মধ্যে দখল পুনরুদ্ধার করিবেন।

৩। এই ক্ষেত্রে কোনো কর্মকর্তা বা কর্তৃপক্ষ উহাতে অসহযোগিতা বা অবহেলা করিলে তাহার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।

 

অবৈধভাবে দখলচ্যুত ব্যক্তি কখন দখল পুনরুদ্ধারের আবেদন করতে পারবে না–   ধারা ৮(৭)

কোনো দেওয়ানি আদালতে দখল পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত কোনো মামলা বিচারাধীন থাকলে একই বিষয়ে এই ধারার অধীন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট দখল পুনরুদ্ধারের আবেদন করা যাবে না।

 

তবে উক্ত দেওয়ানি আদালতে কোনো পক্ষ আবেদন করে আদালতের অনুমতি নিয়ে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট দখল পুনরুদ্ধারের আবেদন করা যাবে।

 

এই ধারার অধীন ব্যবস্থা গ্রহণের অন্যান্য পদ্ধতি বিধি দ্বারা নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত ফৌজদারী কার্যবিধির ধারা ১৪৫ এর বিধান অনুসরণ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।

 

লেখক

এডভোকেট মুহাম্মদ মহীউদ্দীন

01711-068609 / 01540105088

 

যেকোন আইনি সহায়তার প্রয়োজন হলে আমাদের অভিজ্ঞ আইনজীবিগণের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

 

যোগাযোগ-

মহীউদ্দীন এন্ড এসোসিয়েটস

সার্বিক পরিচালনায়- এডভোকেট মুহাম্মদ মহীউদ্দীন (শিশির)

১৬, কৈলাশঘোষ লেন, ঢাকা জজ কোর্ট, ঢাকা। অথবা

রোড-৫, ব্লক-এ, বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা।

মোবাইল- 01711-068609 / 01540-105088

ইমেইল- info@ainbid.com

ওয়েবসাইট- ainbid.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *