সাগর-রুনি হত্যা মামলা- গবেষণা ও পর্যালোচনা

সাগর-রুনি হত্যা মামলার গবেষণা ও পর্যালোচনা

 

মামলার বিবরণ-

সাগর-রুনি হত্যা মামলা।

মামলা নম্বর-      , তারিখ                   ২০১২, শেরেবাংলা নগর থানা, ঢাকা।

বাদী- রুনির ভাই নওশের আলম রোমান।

 

হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়-

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও তার স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় খুন হন।

 

মামলার অগ্রগতি-

এই হত্যাকাণ্ডের পর রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

 

তখন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তারা বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই খুনিদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা হবে। কিন্তু সেই ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে প্রায় এক যুগ পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এই মামলার বিচারই শুরু হয়নি।

 

সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডে মামলা হওয়ার পর প্রথমে এর তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় শেরে বাংলা থানা পুলিশকে।

 

চার দিন পর এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় ডিবি পুলিশের কাছে। এর ৬২ দিন পর ডিবি তদন্ত সম্পাদনে আদালতে ব্যর্থতা স্বীকার করে।

 

তারপর তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় RAB কে। দায়িত্ব পেয়ে সাগর ও রুনির মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে পুনরায় ময়না তদন্ত ও ভিসেরা পরীক্ষা করে RAB. এরপর বেশ কয়েকজন গ্রেফতার হলেও তদন্তে আর কোন অগ্রগতি হয়নি। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে পারেনি RAB.

 

উল্লেখ্য, তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার পর মূলত বিচারের মূল কার্যক্রম শুরু হয়। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত বিচার কার্যই শুরু হয় নাই।

 

পর্যালোচনা-

তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার জন্য আদালত একটা তারিখ দিয়ে থাকে। সেই তারিখে তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে না পারলে তদন্তকারি কর্মকর্তা (IO) তদন্ত সম্পন্ন করার জন্য আরও সময় চাইলে আদালত আবার সময় দিয়ে নতুন একটা তারিখ নির্ধারণ করে দেন। এইভাবে তদন্তের জন্য বার বার সময় নিতে থাকলে মামলায় দেরি হতে থাকে। এই ২০২৪ পর্যন্ত ১১১ বার সময় বৃদ্ধি করেও সফল হতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

 

বিলম্বের কারণ-

এই হত্যাকান্ডের কারণ নিয়ে নানারকম গুজব ও ষড়যন্ত্র ছড়িয়ে পড়েছে। এই হত্যার ঘটনা নিয়ে অনুসন্ধান করেছিলেন সাংবাদিক হারুন উর রশীদ। তার মতে, তদন্ত সঠিক পথে না থাকার কারণেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নানান গুজব ছড়ানো হয়েছিলো।

 

“প্রভাবশালীদের অনেকে জড়িত, সাগর কোন একটা বই লিখেছিল অথবা কোন ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণেও এটি ঘটতে পারে এরকম নানা কথা বাজারে ছড়িয়েছিলো। এমনকি পুলিশ গ্রিল কাটা চোর নিয়ে মহড়া করে সেটার ভিডিও করেছিলো। এরকম নানা তথ্য সমাজে ছড়িয়ে থাকায় বোঝা যাচ্ছে যে, ঘটনার সঠিক তদন্ত হচ্ছে না।

 

তথ্যসূত্র- বিবিসি বাংলা, ঢাকা, ৩০ জানুয়ারি ২০১৮

 

ফেব্রুয়ারি ২০২৪ বৃহস্পতিবার

১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘তাদের তদন্তে যতদিন সময় লাগে সঠিকভাবে দোষী নির্ণয় করতে, তাদেরকে ততটুকু সময় দিতে হবে। সেটা যদি ৫০ বছর হয়, ৫০ বছর দিতে হবে।’

 

তথ্যসূত্র- দি ডেইলি স্টার- বৃহস্পতিবার ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৪ ০৫:০৯ অপরাহ্ন

 

সর্বশেষ তথ্য-

আজ বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট ২০২৪) সাগর- রুনি হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। তারা দ্রুত মামলার অভিযোগ গঠনের আহ্বান জানান এবং দ্রুত চার্জশিট দাখিলের দাবি জানান।

 

সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম এবং সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের ভবনে হামলার নিন্দা জানিয়েছে পরিষদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *