অংশীদারী চুক্তিনামার নিয়ম ও নমুনা

অংশীদারী চুক্তিনামার নিয়ম ও নমুনা।

 

অংশীদারী চুক্তিনামা নিয়ম:

বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী অংশীদারী ব্যবসায়ে মূলধনের পরিমাণ ১,০০,০০০/- টাকা এর কম হলে অংশীদারী চুক্তিনামাটি ২০০০/- টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে এবং মূলধনের পরিমাণ ১,০০,০০০/- টাকার বেশি যেকোন পরিমাণ হলে ৪০০০/- টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে প্রিন্ট করে নোটারী পাবলিক কর্তৃক সত্যায়িত করতে হবে। তারপর আরজেএসসি থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

 

অংশীদারী চুক্তিনামা নমুনা:

 

“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”

 

অংশীদারী চুক্তিনামা

 

আল আমীন, পিতা- মোঃ হবিব উল্লাহ, মাতা- রোজী বেগম, বর্তমান ঠিকানা- বাসা/হোল্ডিং-৭৪,  গ্রাম/রাস্তাঃ ০৩, ব্লক-ই, সেকশন-১২, পল্লবী, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬। স্থায়ী ঠিকানা- গ্রাম- কাফুরদী, ডাকঘর: বড়নগর-১৪৪১, সোনারগাঁও, নারায়নগঞ্জ। জন্ম তারিখ: ১৭ জুলাই ১৯৭৮, জাতীয়তা- বাংলাদেশী, ধর্ম- ইসলাম, পেশা- ব্যবসা, জাতীয় পরিচয়পত্র নং- ৮৮১০৪৫২২৫৯২৫৮।

… … … … … …  প্রথম পক্ষ।

 

শওকত হোসেন, পিতা- মোঃ ওয়াজেদ আলী বেপারী, মাতা- রিজিয়া বেগম, বর্তমান ঠিকানা- বাসা/হোল্ডিং-২২/২, গ্রাম/রাস্তাঃ ১২, ব্লক-ডি, সেকশন-১২, পল্লবী, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬। স্থায়ী ঠিকানা- গ্রাম/রাস্তাঃ এনায়েত নগর, ডাকঘরঃ এনায়েত নগর, কালকিনি, মাদারীপুর। জন্ম তারিখ: ০১ জুলাই ১৯৭৮, জাতীয়তা- বাংলাদেশী, ধর্ম- ইসলাম, পেশা- ব্যবসা, জাতীয় পরিচয়পত্র নং- ১৯৭৮২৬৫০৮৯৮২৬৪৭৮৪।

… … … … … … দ্বিতীয় পক্ষ।

 

পরম করুণাময় মহান আল্লাহ তায়ালার নাম স্মরণ করিয়া অদ্য ০১/০১/২০২৪ ইং তারিখে আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারী পক্ষগণ নিম্নে উল্লেখিত শর্ত সমূহে পূর্ণ মতৈক্যের ভিত্তিতে অংশীদারী ব্যবসার চুক্তিনামায় আবদ্ধ হইলাম।

 

শর্তাবলীঃ

 

১। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম (Name of the Firm):

অত্র প্রতিষ্ঠানের নাম হবে আলভী জিম-২ (Alvi Gym-2)।

 

২। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অফিস (Office of the Firm): আলভী জিম-২, বাসা-৫১/১, রোড-৫, ব্লক-ডি, পল্লবী, মিরপুর-১২, ঢাকা- ১২১৬.

 

৩। ব্যবসায়ের ধরণ (Nature of the firm): GYM/ Fitnes center.

 

৪। ব্যবসায়ের শুরুর তারিখ (Date of Commencement): ০১/০১/২০২৪ ইং তারিখ হইতে শুরু।

 

৫। মূলধন (Capital): ফার্মে প্রাথমিকভাবে মূলধন হইবে ১৬,০০,০০০/- (ষোল লক্ষ) টাকা। উক্ত মূলধন নিম্নোক্ত হারে সরবরারহ করা হইবে।

(ক) প্রথম পক্ষ ৫০%

(খ) দ্বিতীয় পক্ষ ৫০%

 

পরবর্তীতে অতিরিক্ত মূলধনের প্রয়োজন হইলে উভয়পক্ষ পর্যালোচনা ও ঐক্যের ভিত্তিতে সমহারে প্রয়োজনীয় মূলধন সরবরাহ করিবেন এবং অতিরিক্ত মুলধনের লাভ-লোকসান অনুচ্ছেদ ৬ -এ বর্ণিত হারে বন্টন করা হইবে। ইহাতে কোন পক্ষের কোন ওজর আপত্তি থাকিবে না।

 

৬। লাভলোকসান (Allocation of Profit and Loss): ব্যবসার লাভ-লোকসান উভয় পক্ষ সমান অংশিদারিত্বে ভোগ করিবেন। পক্ষগণ তাহাদের অংশ অনুযায়ী ব্যক্তিগতভাবে আয়কর কর্তৃপক্ষের নিকট জবাবদিহি হইবে।

 

৭। ব্যাংক হিসাব (Bank Account): অংশীদারগণ চাইলে প্রতিষ্ঠানের নামে একটি C/A খোলা হইবে। ব্যাংক একাউন্ট সহ সব দলিল পত্রে উভয়ের যৌথ স্বাক্ষর থাকিবে। কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে উভয় পক্ষ সিদ্ধান্তে উপনীত হইলে তবে প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ গ্রহণ করিতে পারিবে। যৌথ সম্মতির ভিত্তিতে পক্ষগণ এককভাবে ব্যাংক হিসাব বা যাবতীয় কার্য্যক্রম পরিচালনা করিতে পারিবেন।

 

৮। প্রতিষ্ঠানের হিসাবে (Account of the Firm): হিসাবরক্ষণ, বার্ষিক হিসাব ও নিরীক্ষণ ব্যবসায়ের লেনদেন যথাযথভাবে রক্ষণ ও হিসাব বই সংরক্ষণ করা হইবে। প্রতি মাসের শেষের দিন হিসাবে সম্পাদন করা হইবে। অংশীদারী পক্ষগণ প্রয়োজন হইলে যেকোন সময় ব্যবসায়ের হিসাবপত্র ও হিসাব প্রতিবেদন পরীক্ষা/নিরীক্ষা করিতে পারিবেন।

 

৯। শেয়ার হস্তান্তর (Transfer of Share): কোন অংশীদারের লিখিত সম্মতি ছাড়া অপর অংশীদার তাহার শেয়ার কোন ব্যক্তিকে হস্তান্তর করিতে পারিবেন না। তবে কোন অংশীদার তাহার অংশ হস্তান্তর করিতে চাহিলে উভয় পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ করিয়া নতুন স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে হস্থান্তর করিতে পারিবেন।

 

১০। অংশীদারদের অবসর (Retirement of a Partner): কোন অংশীদার প্রতিষ্ঠান থেকে অবসর নিতে চাহিলে কমপক্ষে ০৩ (তিন) মাস পূর্বে লিখিত ভাবে অন্য অংশীদারকে জানাইবেন। অন্য অংশীদার প্রতিষ্ঠানের লাভ-লোকসান, দায়বদ্ধতা, হিসাব-নিকাশ করিয়া অবসরকারীকে প্রদান করবেন এবং লিখিত ভাবে তাহার অংশীদারীত্ব সমাপ্তি ঘোষনা করিবেন।

 

১১। অংশীদারের মৃত্যু (Death of Partner): কোন অংশীদারের মৃত্যুতে তাহার আইনতগত বৈধ উত্তরাধিকারীগণ ওয়ারিশী সনদ ও মৃত্যু সনদ দাখিল পূর্বক দলিলের শর্ত অনুযায়ী মালিকানা লাভ করিবেন কিংবা অংশীদারদের অছিয়ত নামা বা রেজিস্ট্রিকৃত দলিল অনুযায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকানা লাভ করিবেন। আইনানুগ উত্তরাধিকারীর সাথে অংশীদারগণ চুক্তিতে আবদ্ধ হইয়া ব্যবসা পরিচালনা করিতে পারিবেন কিংবা তাহার ওয়ারিশগণ হিস্যা তুলিয়া নিয়া যাইতে পারিবেন।

 

১২। কর্মচারী নিয়োগ (Appointment of Staff): প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় কর্মচারী নিয়োগ ও তাদের বেতন ভাতা উভয় অংশীদারের সর্ব সম্মতি সিদ্ধান্তক্রমে গৃহিত হইবে। তবে অংশীদারগণের মধ্যে কেহ যদি কর্মচারী হিসাবে দায়িত্ব পালন করিতে আগ্রহী হন তবে তিনি অংশীদারগণের অনুমোদন সাপেক্ষে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী কর্মচারী হিসাবে (অংশীদার হিসাবে প্রাপ্য লভ্যাংশ ব্যতীত) বেতন ভাতাদি প্রাপ্ত হইবেন। নিয়োগ্রাপ্ত হিসাব রক্ষকের অনুপস্থিতিতে ব্যবসা পরিচালনাকারী অংশীদার প্রতিষ্ঠানের সকল হিসাব পরিচালনা করিবেন। সকল হিসাবের বই, ক্যাশ বই, ভাউচার ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের অফিসে সংরক্ষন থাকবে। উভয় অংশীদার ব্যাংক হিসাব, প্রতিষ্ঠানের হিসাব, ভাউচার পরিদর্শন (Inspection) করিতে পারিবেন।

 

১৩। ভাউচার অনুমোদন (Approval of Vouchers): সকল ভাউচার অংশীদারদের যৌথ স্বাক্ষরে অনুমোদিত হইবে।

 

১৪। অংশীদারদের সম্মানি ভাতা (Remuneration of Partner): অংশীদারদের সম্মানি ভাতা যৌথ সিদ্ধান্ত ক্রমে নির্ধারণ করা হইবে।

 

১৫। নিষেধাজ্ঞা (Prohibition): অত্র চুক্তি স্বাক্ষরকারী কোন অংশীদারই অপর অংশীদারের সম্মতি ছাড়া নিম্নোক্ত কার্য্যাবলী সম্পাদন করিতে পারিবেন না-

 

(ক) অত্র অংশীদার ব্যবসা ব্যতীত ইহার আশেপাশে ২ কিলোমিটার এর মধ্যে এই প্রকৃতির অন্য কোন ব্যবসায় জড়িত হওয়া।

(খ) অংশীদারীর কোন অংশ অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট হস্তান্তর করা।

(গ) ব্যবসায়ের কোন সম্পত্তি ক্রয় বা বিক্রয় করা।

(ঘ) প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয় অথবা সুনাম নষ্ট হয় এমন কোন কাজ করা বা আলাপ আলোচনা করা।

(ঙ) কোন কর্মচারী নিয়োগ বা অপসারণ করা।

(চ) অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের Guarantor হওয়া।

(ছ) ব্যক্তিগত কোন কাজে এই প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করা।

(জ) এই প্রতিষ্ঠানকে জিম্মায় রাখিয়া কোন কাজ করা।

(ঝ) কোন প্রকার মনোমালিন্যের কারণে অত্র প্রতিষ্ঠানে চলমান ব্যবসায়ের ব্যাঘাত ঘটিতে পারে এমন কাজ করা।

(ঞ) অংশীদারদের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন না করা।

 

১৬। অংশীদারগণের আচরণ (Conduct of the Partners): সকল অংশীদারগণ একে অন্যের প্রতি সর্বাবস্থায় সদাচরণ করিবেন, সহমর্মিতা দেখাইবেন এবং সম্মান প্রদর্শন করিবেন। উভয় পক্ষ সর্বদা প্রতিষ্ঠানকে আরো সমৃদ্ধশালী করিতে সচেষ্ট থাকিবেন।

 

১৭।  সংশোধন (Amendment): উভয় অংশীদার যৌথ সম্মতিক্রমে অত্র চুক্তির যে কোন শর্ত পরিবর্তন ও সংশোধন করিতে পারিবেন এবং পরিবর্তিত/সংযোজিত শর্তসমূহ অত্র চুক্তিনামার অঙ্গীভূত হইবে। তাছাড়াও ব্যবসা পরিবর্তন করিতে চাইলে সকল অংশীদারদের অনুমতি গ্রহণ করিতে হইবে এবং বিনিয়োগকৃত অর্থ অন্য কোন ব্যবসায় স্থানান্তর করা যাইবে না।

 

১৮।  বিরোধ নিষ্পত্তি (Arbitration): অংশীদারদের মধ্যে কোন বিরোধ দেখা দিলে নিজেদের যৌথ বৈঠকে তাদের বিরোধ নিষ্পত্তি করিবেন। তবে তাতেও যদি কোন সমাধান না হয় তবে পক্ষগণের সম্মতিক্রমে একজন সালিশদার এর মাধ্যমে তাহা নিষ্পত্তি করা হইবে এবং তাহার সিদ্ধান্ত উভয় পক্ষ মানিতে বাধ্য থাকিবেন। এই চুক্তিপত্রে উল্লেখ নাই এমন কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজন হইলে ‘অংশীদারিত্ব আইন ১৯৩২’ এর বিধান অনুযায়ী মীমাংসা করা হইবে।

 

১৯। অবসায়ন (Dissolution): ব্যবসায়ের বিলোপ সাধনের কোন কারণ দেখা দিলে উভয় পক্ষের যৌথ সম্মতিক্রমে প্রতিষ্ঠান বিলুপ্তি করিতে পারিবেন অথবা কোন আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত হইবে। যেক্ষেত্রে সকলের সম্মতিক্রমে প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত হইবে সেক্ষেত্রে উভয় পক্ষ লাভ-লোকসান ও দায়বদ্ধতা সমান ভাবে বহন করিবেন।

 

অত্র অংশীদারী চুক্তির সকল শর্ত আমরা ভাল ভাবে পাঠ করিয়া এবং উহার মর্ম সম্যক অবগত হইয়া কাহারো বিনা প্ররোচনায়, স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে, সুস্থ মস্তিস্কে অত্র চুক্তিনামায় নিজ নিজ নাম সহি স্বাক্ষর করিলাম। ইতি,

 

তারিখ:

 

অত্র অংশীদারী চুক্তিপত্র ৪০ (চল্লিশ) পাতায় কম্পিউটার কম্পোজকৃত এবং স্বাক্ষী ০৩ (তিন) জন বটে।

 

সাক্ষীগণের স্বাক্ষর  ঠিকানা:

 

১।

 

 

২।

 

 

৩।

 

 

…………………………

১ম পক্ষের স্বাক্ষর

 

…………………………

২য় পক্ষের স্বাক্ষর

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *