অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার পদ্ধতি ও অফলাইন পেপার প্রস্তুত পদ্ধতি

 

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার পদ্ধতি-

বাংলাদেশে এযাবৎ ম্যানুয়াল পদ্ধতিতেই আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রচলন ছিল। এখনও সনাতন পদ্ধতিই বেশির ভাগ লোক ব্যবহার করছে। তবে বর্তমানে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে সরকার। এই উদ্দেশ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR) একটি স্মার্ট ই-রিটার্ন সিস্টেম চালু করেছে। ধীরে ধীরে গ্রাহকগণও অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে শুরু করেছে।

 

অনলাইনে আয়করের যে সকল সুবিধা পাওয়া যাবে-

(১) ঘরে বসে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে।

(২) ঘরে বসে অনলাইনে রিটার্নের প্রাপ্তি স্বীকার পাওয়া যাবে।

(৩) ঘরে বসে অনলাইনে কর সনদ (Tax Certificate) সংগ্রহ করা যাবে।

(৪) ই-পেমেন্ট করা যাবে।

(৫) ই-রিটার্ন সিস্টেম থেকে অফলাইন অর্থাৎ রিটার্ন পেপারও বানিয়ে নেওয়া যাবে।

(৬) ই-রিটার্ন ভেরিফাই করা যাবে।

(৭) সিস্টেমটি ব্যবহারের জন্য ট্যাক্স হিসাব জানার প্রয়োজন নাই।

 

এখন থেকে ঘরে বসেই অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে। সকলের সুবিধার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার পদ্ধতি এখানে তুলে ধরা হলো-

 

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য যা যা দরকার হবে

(১) নিজের নামের বায়োমেট্রিকলি ভেরিফাইড মোবাইল ফোন নম্বর,

(২) ই-টিন নম্বর,

(৩) প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র যেমন- বেতন সনদপত্র, বিনিয়োগ (সঞ্চয়পত্র, এফডিআর, ডিপিএস, জীবন বিমা ইত্যাদি),

(৪) ব্যাংক স্টেটমেন্ট,

(৫) জমি বা ফ্ল্যাট এর কাগজপত্র,

 

অনলাইন রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি-

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা (Submit) দেওয়ার পূর্বে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের জন্য NBR এর নির্ধারিত ওয়েবসাইটে https://etaxnbr.gov.bd/ প্রবেশ করে ই-রিটার্ন বাটনে ক্লিক করতে হবে। তারপর ডান দিকের সাইডবারে নিচের দিকে রেজিস্ট্রেশন লেখা বাটনে ক্লিক করতে হবে। এরপর একটি পপআপ মেন্যু আসবে। এই মেন্যুতে TIN নম্বর, মোবাইল নম্বর এবং ক্যাপচা টাইপ করে ভেরিফাই বাটনে ক্লিক করতে হবে।

 

এইবার মবাইল নম্বরে ছয় অক্ষরের ওটিপি (OTP) কোড যাবে সেটি নির্ধারিত স্থানে বসিয়ে একটি নতুন পাসওয়ার্ড দিয়ে সাবমিট করতে হবে। তাহলেই রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়ে যাবে। রেজিস্ট্রেশন করার সাথে সাথে একটি ই-রিটার্ন অ্যাকাউন্ট তৈরি হবে।

 

সাইন ইন (Sign in)-

রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে সাইন ইন করতে হবে। সাইন ইন করার জন্য https://etaxnbr.gov.bd/ সাইটে প্রবেশ করে ই-রিটার্ন পেইজটি ওপেন করতে হবে। এই পেইজে TIN নম্বর, পাসওয়ার্ড এবং ক্যাপচা দিয়ে সাইন ইন করতে হবে। সাইন ইন করলে ই-রিটার্নের ড্যাশবোর্ডে নিয়ে যাবে। এখানে ই-টিনের সকল তথ্য, রিটার্ন সাবমিশন ও ট্যাক্স রেকর্ডের সকল তথ্য পাওয়া যাবে।

 

রিটার্ন দাখিল বা জমা (E-return submission)-

ই-রিটার্ন ড্যাশবোর্ডের রিটার্ন সাবমিশন অপশনের ভেতর দুটি রিটার্ণ পেইজ থাকে।

(১) সিঙ্গেল পেইজ রিটার্ন ও

(২) ডিটেইল রিটার্ন।

 

(১) সিঙ্গেল পে রিটার্ন (এক পাতার আয়কর বিবরণী)-

বার্ষিক করযোগ্য আয় পাঁচ লক্ষ টাকার কম হলে এবং মোট সম্পদের পরিমাণ ৪০ লক্ষ টাকার কম হলে এই এক পাতার আয়কর বিবরণী (Single Page Return) জমা দিলেই হবে।

 

(২) ডিটেইল রিটার্ন

সিঙ্গেল পেইজ রিটার্ন এর উল্লেখিত আয় এবং সম্পদ্র পরিমাণ বেশি থাকলে ডিটেইল রিটার্ন জমা দিত হবে।

 

সিঙ্গেল পে রিটার্ন দাখিলের পদ্ধতি-

সিঙ্গেল পেজ রিটার্ন অপশনে ক্লিক করলে একটি পপআপ মেন্যু আসবে। সেখানে এক পাতার রিটার্ন পূরণের নিম্নলিখিত শর্তাবলীগুলোতে টিক দিতে হবে: যথা-

করযোগ্য আয় অনূর্ধ্ব ৫,০০,০০০ (পাঁচ লক্ষ) টাকা;

মোট পরিসম্পদ অনূর্ধ্ব ৪০,০০,০০০ (চল্লিশ লক্ষ) টাকা;

গণকর্মচারী নন;

মোটরযানের মালিক নন;

সিটি কর্পোরেশনে গৃহ সম্পত্তির মালিক নন;

বিদেশে পরিসম্পদের মালিক নন;

কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক নন।

 

তারপর আয়ের প্রধান উৎসের স্থান সিলেক্ট করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে। এরপর স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার রিটার্ন খসড়া পেইজ আসবে। সেখান থেকে নিম্নলিখিত তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে-

আয়ের উৎস,

মোট পরিসম্পদ,

মোট আয়,

আরোপযোগ্য কর,

কর রেয়াত,

প্রদেয় কর,

উৎসে কর্তিত কর,

এই রিটার্নের সহিত প্রদত্ত কর,

জীবনযাপন ব্যয় ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে।

 

এরপর নিচের দিকে সেভ এন্ড  ড্রাফট বাটনে ক্লিক করে সেভ করতে হবে। সর্বশেষ চেক করার পর সব ঠিক থাকলে ডানপাশের “সাবমিট রিটার্ন অনলাইন” বাটনে ক্লিক করলে সাবমিট হয়ে যাব।

 

ডিটেইল রিটার্ন দাখিলের পদ্ধতি-

ডিটেইল রিটার্ন (Detail Return) অপশনে ক্লিক করলে এসেসমেন্ট ইনফরমেশন ও হেডস অফ ইনকাম এর পেইজ আসবে। সেখানে রিটার্ন স্কিম (Return scheme) ঘরে সেল্ফ (Self), এসেসমেন্ট ইয়ার ও ইনকাম ইয়ারের ঘরে সাল ও তারিখ ডিফল্ট থাকবে। এরপর ডান পাশের হেডস অফ ইনকামের (Heads of income) নিচের অপশনগুলোতে টিক দিতে হবে।

 

যেমন- ইনকাম ফ্রম ইম্পলয়মেন্ট; ইনকাম ফ্রম রেন্ট; ইনকাম ফ্রম এগ্রিকালচার; ইনকাম ফ্রম বিজনেজ; ক্যাপিটাল গেইনস; ইনকাম ফ্রম ফিনান্সিয়াল এসেটস ও ইনকাম ফ্রম আদার সোর্সেস। এছাড়াও এর নিচে বাংলাদেশের বাইরে থেকে ইনকাম হলে সেই ঘরেও টিক দিতে হবে। এরপর সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ (Save and continue) বাটনে ক্লিক করতে হবে।

 

এরপর এডিশনাল ইনফরমেশনে (Additional information) কর্মস্থলের নাম সিলেক্ট করতে হবে। যেমন- ঢাকা নর্থ সিটি করপোরেশন,

ঢাকা সাউথ সিটি করপোরেশন,

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন,

আদার সিটি করপোরেশন,

এনি আদার এরিয়া।

এরপর ক্লেম ট্যাক্স রেবেট ফর ইনভেস্টমেন্ট (Claim tax rebate for investment), নিজের মোটর কার আছে কিনা বা সিটি করপোরেশনের মধ্যে নিজের বাড়ি -এসব স্থানে টিক দিয়ে সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ (Save and continue) বাটনে ক্লিক করতে হবে।

 

এরপর নিচের পেইজগুলো পূরণ করতে হবে-

এসেসমেন্ট,

ইনকাম,

রেবেট,

এক্সপেনডিচার,

এসেটস অ্যান্ড লায়াবিলিটিস ও

ট্যাক্স অ্যান্ড পেমেন্ট।

তারপর রিটার্ন ভিউ দেখে সবকিছু ঠিক থাকলে পেইজের নিচের দিকে “সাবমিট রিটার্ন” বাটনে ক্লিক করে রিটার্নটি সাবমিট করা যাবে।

 

অফলাইন রিটার্ন (পেপার) তৈরি

ই-রিটার্ন ওয়েবসাইটে (etaxnbr.gov.bd) গিয়ে সাইন ইন (Sign in) করে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এবার ট্যাক্স অ্যান্ড পেমেন্ট অংশে গিয়ে প্রসিড টু অফলাইন (পেপার) (Proceed to offline) রিটার্ন সিলেক্ট করতে হবে। আপনার অফলাইন (পেপার) রিটার্ন তৈরি হয়ে পিডিএফ ফরম্যাটে সেভ হয়ে যাবে।

 

প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন-

 

যোগাযোগ

মহীউদ্দীন ল’ ফার্ম

সার্বিক পরিচালনায়- এডভোকেট মুহাম্মদ মহীউদ্দীন

ঢাকা জজ কোর্ট, কোতোয়ালী, ঢাকা।

অথবা রোড-৫, ব্লক-এ, বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা

01711068609 / 01540105088

ainbid.com

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *