ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার উপায়

ড্রাইভিং লাইসেন্স কি, ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য কিভাবে আবেদন করতে হয়, কি কি ডকুমেন্ট লাগে জেনে নিন।

 

ড্রাইভিং লাইসেন্স কি:

ড্রাইভিং লাইসেন্স হচ্ছে গাড়ি বা মোটরচালিত যানবাহন চালানোর জন্য একটি আইনি অনুমোদন। মোটরচালিত যানবাহনের মধ্যে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, মাইক্রবাস, মিনিবাস, বাস, ট্রাক, হিউম্যান হলার, পিকআপ ইত্যাদি অন্তর্ভূক্ত। এই সকল গাড়ি চালানোর জন্য বাংলাদেশ সরকয়ার অনুমোদন হিসাবে লাইসেন্স প্রদান করে থাকে। ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিষ্ঠান বিআরটিএ (Bangladesh Road Trasport Authority) .

 

ড্রাইভিং লাইসেন্সের ধরণ:

বাংলাদেশে সাধারণত দুই ধরণের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা হয়ে থাকে।

(১) পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স

(২) অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স

 

ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির যোগ্যতা:

(১) লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স।

(২) শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম  ৮ম শ্রেণী পাশ।

(৩) বয়স: অপেশাদার -এর জন্য ন্যূনতম ১৮ বছর এবং পেশাদার -এর জন্য ন্যূনতম বয়স ২১ বছর।

(৪) মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ।

 

ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার উপায়:

বর্তমানে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর আবেদন অনলাইনে করতে হয়। আবেদনের প্রক্রিয়া কয়েকটি ধাপে নিচে দেওয়া হলো।

(১) প্রথমে bsp.brta.gov.bd এই ওয়েবসাইটের মধ্যমে লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করতে হয়।

(২) আবেদন করার সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অনলাইনে সাবমিট করতে হবে।

(৩) তারপর অনলাইন সিস্টেম থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে শিক্ষানবিশ বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করা হবে।

(৪) ওয়েবসাইট থেকে সাথে সাথেই শিক্ষানবিশ বা লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স ডাউনলোড বা প্রিন্ট করা যাবে।

(৫) তারপর ২ থেকে ৩ মাস পর নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে নির্ধারিত কেন্দ্রে লিখিত, মৌখিক ও ফিল্ড টেস্ট-এ অংশ গ্রহণ করতে হবে।

(৬) পরীক্ষার সময় লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মূল কপি সাথে রাখতে হবে।

 

ড্রাইভিং লাইসেন্স এর আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:

(১) বিআরটিএ এর নির্ধারিত আবেদন ফরমে অনলাইনে আবেদন।

(২) আবেদনকারীর ছবি।

(৩) রেজিষ্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট।

(৪) জাতীয় পরিচয়পত্রের স্ক্যান কপি।

(৫) ইউটিলিটি বিলের স্ক্যান কপি।

(৬) আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা।

(৭) বর্তমান ঠিকানার ইউটিলিটি বিল এর কপি।

(৬) পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর জন্য পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন।
(৭) নির্ধারিত ফি, ১ ক্যাটাগরি- ৫১৮/-টাকা এবং ২ ক্যাটাগরি- ৭৪৮/-টাকা অনলাইনে পরিশোধ করতে হবে।

(৮) বিদ্যমান ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্ক্যান কপি [ড্রাইভিং লাইসেন্সের নবায়ন/শ্রেণী পরিবর্তন/শ্রেণী সংযোজন/ ধরণ পরিবর্তণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য]

(৯) লিখিত, মৌখিক ও ফিল্ড টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর পুনরায় একটি নির্ধারিত ফরমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফি প্রদান করে স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স -এর জন্য সংশিস্নষ্ট সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে।

(১০) গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহণপূর্বক স্মার্ট কার্ড ইস্যু করা হয়।

(১১) স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রন্টিং সম্পন্ন হলে গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়।

পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ধরণ:

(১) পেশাদার হালকা: মোটরযানের ওজন ২৫০০ কেজি -এর নিচে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রার্থীর বয়স কমপক্ষে ২১ বছর হতে হবে,

(২) পেশাদার মধ্যম: মোটরযানের ওজন ২৫০০ থেকে ৬৫০০ কেজি ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য পেশাদার হালকা ড্রাইভিং লাইসেন্সের ব্যবহার কমপক্ষে ০৩ বছর হতে হবে।

(৩) পেশাদার ভারী: মোটরযানের ওজন ৬৫০০ কেজির বেশী ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য পেশাদার মধ্যম ড্রাইভিং লাইসেন্সের ব্যবহার কমপক্ষে ০৩ বছর হতে হবে।

 

ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন প্রক্রিয়া:

() অপেশাদারঃ
(১) নির্ধারিত ফি (মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিনের মধ্যে হলে ৪,২১২/- টাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিন পরে প্রতি বছর ৫১৮/- টাকা জরিমানাসহ) জমা দিতে হবে।

(২) প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিআরটিএর নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে।

(৩) গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) প্রদান করতে হবে।

 (৪) স্মার্ট কার্ড প্রন্টিং সম্পন্ন হলে গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে জানানো হয়।

() পেশাদার:
(১) পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সধারীদেরকে লাইসেন্স নবায়নের জন্য পুনরায় একটি ব্যবহারিক পরীক্ষা দিতে হবে।

(২) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে নির্ধারিত ফি (মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিনের মধ্যে হলে ২,৪৮৭/- টাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিন পরে প্রতি বছর ৫১৮/- টাকা জরিমানাসহ) জমা দিতে হবে।

(৩) প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিআরটিএ এর নির্ধারিত সার্কেল অফিসে আবেদন।

(৪) গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহণের জন্য গ্রাহককে নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে উপস্থিত হতে হয়।

(৫) স্মার্ট কার্ড প্রিন্টিং শেষে গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে জানানো হবে।

 

ডুপ্লিকেট লাইসেন্স পাওয়ার পদ্ধতি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
(১) নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে।
(২) জিডি ও ট্রাফিক ক্লিয়ারেন্স কপি।
(৩) নির্ধারিত ফি বিআরটিএ এর নির্ধারিত ব্যাংকে জমা দেওয়ার রশিদ।
(৪) সদ্য তোলা ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

 

 

বি: দ্র: বিআরটিএ এর ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহিত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *