Penal Code, 1860 (দন্ডবিধি, ১৮৬০)
ধারা ৩৬১: আইনগত অভিভাবক হতে মনুষ্যহরণ।
১৪ বছরের কম বয়স্ক বালক, ১৬ বছরের কম বয়স্ক বালিকা বা বিকৃত মস্তিস্কের কোনো ব্যক্তিকে তাহার আইনগত অভিভাবকের অনুমতি ব্যতীত বা যাহার হেফাজতে থাকার কথা তাহার অনুমতি ব্যতীত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করলে তাকে বলা হয় আইনগত অভিভাবক হতে মনুষ্যহরণ।
ধারা ৩৬২: অপহরণ/ অপবাহন (Abduction)
কোনো ব্যক্তি অপর কোনো ব্যক্তিকে জোরপূর্বক বা প্রলুব্ধ করে বা প্রতারণা করে বা ক্ষতির ভয় দেখিয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করলে তাকে বলা হয় অপহরণ।
ধারা ৩৬৩: মনুষ্যহরণ/ অপহরণের শাস্তি
৭ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৩৬৪: খুনের উদ্দেশ্যে মনুষ্যহরণ/ অপহরণের শাস্তি
যাবজ্জীবন/ ১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৩৬৪ক: ১০ বছরের কম বয়স্ক শিশু খুনের উদ্দেশ্যে অপহরণের শাস্তি
মৃত্যুদণ্ড/ যাবজ্জীবন/ ১৪ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদন্ড তবে ৭ বছরের কম নয় ও অর্থদন্ড
ধারা ৩৬৫: গোপনে আটক রাখার জন্য অপহরণের শাস্তি
৭ বছর পর্যন্ত সশ্রম/বিনাশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৩৬৬: কোনো নারীকে বিবাহের বা ধর্ষণের জন্য অপহরণের শাস্তি
১০ বছর পর্যন্ত যেকোনো কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৩৬৬ক: অপ্রাপ্ত বালিকা সংগ্রহের শাস্তি
১০ বছর পর্যন্ত যেকোনো কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৩৬৬খ: বিদেশ হতে বালিকা আমদানির শাস্তি
১০ বছর পর্যন্ত যেকোনো কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৩৬৯: শিশুর দেহ থেকে সম্পত্তি চুরির উদ্দেশ্যে অপহরণের শাস্তি
৭ বছর পর্যন্ত যেকোনো কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৩৭৫: ধর্ষণের (Rape) সংজ্ঞা
কোনো পুরুষ কোনো স্ত্রীলকের সঙ্গে যৌন সঙ্গম করলে নিম্নলিখিত ৫ টি ক্ষেত্রে ধর্ষণ বলে গণ্য হবে –
- ইচ্ছার বিরুদ্ধে
- সম্মতি ব্যতীত
- সম্মতিক্রমে মৃত্যু বা জখমের ভয় দেখিয়ে
- সম্মতিক্রমে কিন্তু পুরুষটি জানে সে তার স্বামী নয় এবং স্ত্রীলোকটি স্বামী মনে করে ভুল করছে
- সম্মতিক্রমে বা ব্যতীত নারীর বয়স ১৪ বছরের কম হলে
ব্যাখ্যা: ধর্ষণের অপরাধের ক্ষেত্রে যৌন সঙ্গমের জন্য যৌনাঙ্গ প্রবিষ্ট করাই যথেষ্ট।
ব্যতিক্রম: কোনো পুরুষ কর্তৃক নিজ স্ত্রীর সাথে যৌন সঙ্গম ধর্ষণ বলে গণ্য হবে যদি স্ত্রীর বয়স ১৩ বছরের কম হয়।
ধারা ৩৭৬: ধর্ষণের শাস্তি
নিজ স্ত্রী ১২ বছরের কম হলে – ২ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড/ অর্থদন্ড/ উভয়
অন্যান্য ক্ষেত্রে – যাবজ্জীবন/ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৩৭৭: অসাভাবিক অপরাধসমূহ (Unnatural Offences)
প্রকৃতির নিয়মের বাহিরে কোনো পুরুষ, স্ত্রীলোক বা পশুর সাথে যৌন সঙ্গম করলে তাহার শাস্তি
যাবজ্জীবন/ ১০ বছর কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৩৭৮: চুরির সংজ্ঞা
অপর ব্যক্তির অস্থাবর সম্পত্তি তাহার অসম্মতিতে অসাধুভাবে অপসারণ করাকে চুরি বলে।
ধারা ৩৭৯: চুরির শাস্তি
৩ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড/ অর্থদন্ড/ উভয়
ধারা ৩৮০: বাসগৃহে চুরির শাস্তি
৭ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৩৮১: চাকর কর্তৃক মনিবের সম্পত্তি চুরির শাস্তি
৭ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৩৮২: চুরির উদ্দেশ্যে খুন, গুরুতর আঘাত বা অবৈধ আটক ইত্যাদির প্রস্তুতিসহ চুরির শাস্তি
১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৩৮৩: জোরপূর্বক আদায়/ ছিনতাই (Extortion) এর সংজ্ঞা
কোনো ব্যক্তি অপর কোনো ব্যক্তিকে শরীর, সম্পত্তি, খ্যাতি ইত্যাদির ভয় দেখিয়ে সম্পত্তি আদায় করলে তাকে জোরপূর্বক আদায় বা ছিনতাই বলে।
ধারা ৩৮৪: ছিনতাই এর শাস্তি
৩ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড/ অর্থদন্ড/ উভয়
ধারা ৩৮৫: ভয় দেখিয়ে ছিনতাই/ চাঁদাবাজি এর শাস্তি
১৪ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড কিন্তু পাঁচ বছরের কম নয়
ধারা ৩৯০: দস্যুতার (Robbery) সংজ্ঞা
চুরি বা বলপূর্বক সম্পত্তি আদায় (ছিনতাই) এর সময় উগ্রতা প্রদর্শন করলে তাহা দস্যুতা বলে গণ্য হবে।
[দস্যুতাকারীর সংখ্যা হবে ৪ জন বা তার কম। ৪ জনের বেশি হলে তখন সেটা ডাকাতি বলে গণ্য হবে।]
ধারা ৩৯১: ডাকাতির (Dacoity) সংজ্ঞা
৫ বা ততোধিক ব্যক্তি দস্যুতা সংঘটন করলে বা সংঘটনের চেষ্টা করলে তাহা ডাকাতি বলে গণ্য হবে।
[ডাকাতির সদস্য সংখ্যা হবে কমপক্ষে ৫ জন]
ধারা ৩৯২: দস্যুতার শাস্তি
দিনে দস্যুতার শাস্তি – ১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদন্ড
রাতে রাজপথে দস্যুতার শাস্তি – ১৪ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৩৯৩: দস্যুতার উদ্যোগ/ চেষ্টার শাস্তি
দস্যুতার উদ্যোগের শাস্তি – ৭ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৩৯৪: দস্যুতার সময় স্বেচ্ছায় আঘাত দানের শাস্তি
দস্যুতার সময় স্বেচ্ছায় আঘাত দানকারী এবং তার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের শাস্তি হবে
যাবজ্জীবন/ ১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৩৯৫: ডাকাতির শাস্তি
যাবজ্জীবন/১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৩৯৬: খুনসহ ডাকাতির শাস্তি
মৃত্যুদণ্ড/ যাবজ্জীবন/ ১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৩৯৭: মৃত্যু বা গুরুতর আঘাতের চেষ্টাসহ দস্যুতা বা ডাকাতির শাস্তি
কমপক্ষে ৭ সশ্রম কারাদন্ড
ধারা ৩৯৮: মারাত্মক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দস্যুতা বা ডাকাতির শাস্তি
কমপক্ষে ৭ সশ্রম কারাদন্ড
ধারা ৩৯৯: ডাকাতির প্রস্তুতির শাস্তি
১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৪০০: ডাকাত দলে থাকার শাস্তি
যাবজ্জীবন/ ১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৪০১: চোরের দলে থাকার শাস্তি
৭ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৪০৩: অসাধুভাবে অস্থাবর সম্পত্তি আত্মসাতের শাস্তি
২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড/ অর্থদণ্ড/ উভয়
ধারা ৪০৪: মৃত্যুকালে মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি অসাধুভাবে আত্মসাতের শাস্তি
৩ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড
মৃত্যুকালে মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি তার চাকর কর্তৃক অসাধুভাবে আত্মসাতের শাস্তি
৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড
ধারা ৪০৫: অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের (Criminal Breach of Trust) সংজ্ঞা
কোনো সম্পত্তি পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি কর্তৃক উক্ত সম্পত্তি অসাধুভাবে আত্মসাত করলে বা নিজের ব্যবহারে প্রয়োগ করলে তাকে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ বলা হয়।
ধারা ৪০৬: অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের শাস্তি
৩ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড/ অর্থদণ্ড/ উভয়
ধারা ৪০৭: বাহক কর্তৃক অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের শাস্তি
৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড
ধারা ৪০৮: চাকর/ কেরানী/ কর্মচারী/ ভৃত্য কর্তৃক অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের শাস্তি
৭ বছর পর্যন্ত যেকোনো কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড
ধারা ৪০৯: সরকারী কর্মচারী/ব্যাংকার/ব্যবসায়ী/প্রতিনিধি কর্তৃক অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের শাস্তি
যাবজ্জীবন/ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড
ধারা ৪১০: নিম্নলিখিত ৫ ভাবে অর্জিত সম্পত্তি চোরাইমাল বলে গণ্য হবে –
- চুরি (Theft)
- ছিনতাই/ বল পূর্বক গ্রহণ(Extortion)
- দস্যুতা(Robbery)
- অপরাধমূলক আত্মসাৎ(Criminal Misappropriation)
- অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ (Criminal Breach of Trust)
ধারা ৪১১: চোরাইমাল জেনেশুনে গ্রহণের শাস্তি
৩ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড/ অর্থদণ্ড/ উভয়
ধারা ৪১২: ডাকাতির মাধ্যমে অর্জিত চোরাইমাল জেনেশুনে গ্রহণের শাস্তি
যাবজ্জীবন/ ১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড
ধারা ৪১৩: চোরাইমাল অভ্যাসগতভাবে ক্রয়/বিক্রয় করার শাস্তি
যাবজ্জীবন/ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড
ধারা ৪১৪: চোরাইমাল লুকিয়ে রাখতে সহযোগিতা করার শাস্তি
৩ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড/ অর্থদণ্ড/ উভয়
ধারা ৪১৫: প্রতারণার (Cheating) সংজ্ঞা
প্রতারণা: কোনো ব্যক্তি অপর কোনো ব্যক্তিকে অসাধুভাবে সম্পত্তি প্রদানে বা কোনো কাজ করতে বা করা থেকে বিরত থাকতে প্ররোচিত করলে তাকে প্রতারণা বলে।
ব্যাখ্যা: ছলনা: অসাধুভাবে তথ্য গোপন করাকে ছলনা বলে।
ধারা ৪১৬: অপরের রূপ ধারণ করে/ ছদ্মবেশে প্রতারণার (Cheating by personation) সংজ্ঞা
কোনো ব্যক্তি নিজেকে অপর কোনো ব্যক্তির পরিচয় দিয়ে বা অপর কোনো ব্যক্তিকে নিজের পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করলে সেটি অপরের রূপ ধারণপূর্বক প্রতারণা বলে গণ্য হবে।
ধারা ৪১৭: প্রতারণার শাস্তি
১ বছর পর্যন্ত যেকোনো কারাদণ্ড/ অর্থদণ্ড/ উভয়
ধারা ৪১৯: অপরের রূপ ধারণপূর্বক প্রতারণার শাস্তি
৩ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড/ অর্থদণ্ড/ উভয়
ধারা ৪২০: প্রতারণা করে সম্পত্তি অর্জন বা দলিল প্রণয়নের শাস্তি
৭ বছর পর্যন্ত যেকোনো কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড
ধারা ৪২৫: ক্ষতি বা অনিষ্টসাধন (Mischief)
জনসাধারণের বা কোনো ব্যক্তির ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে কোনো সম্পত্তি ধ্বংস করাকে ক্ষতি বা অনিষ্ট বলে।
ধারা ৪২৬: ক্ষতি বা অনিষ্টসাধনের শাস্তি
৩ মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড/ অর্থদণ্ড/ উভয়
ধারা ৪২৭: ৫০ টাকা বা তদূর্ধ্ব পরিমাণ অর্থের ক্ষতি বা অনিষ্টসাধনের শাস্তি
২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড/ অর্থদণ্ড/ উভয়
ধারা ৪২৯: ৫০ টাকা বা তদূর্ধ্ব মূল্যের পশু হত্যা বা বিকলাঙ্গ করে ক্ষতির শাস্তি
৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড/ অর্থদণ্ড/ উভয়
ধারা ৪৪১: অপরাধমূলক অনধিকার প্রবেশ (Criminal Trespass)
কোনো ব্যক্তি যদি অপরাধ, অপমান, ভীতি প্রদর্শন বা বিরক্ত করার উদ্দেশ্যে অপর কোনো ব্যক্তির দখলভুক্ত সম্পত্তির ভিতরে বা উপরে প্রবেশ করে তাহলে সেটি অপরাধমূলক অনধিকার প্রবেশ বলে গণ্য হবে।
ধারা ৪৪২: গৃহে অনধিকার প্রবেশ (House Trespass)
মানুষের আবাসস্থল হিসাবে ব্যবহৃত গৃহ, তাবু, জলযান বা উপাসনালয় অথবা সম্পত্তির হেফাজত স্থানে প্রবেশ করে বা অবস্থান করে অপরাধমূলক অনধিকার প্রবেশ সংঘটন করে তাহলে তাকে অনধিকার গৃহে প্রবেশ বলা হবে।
[যেমন সিঁদ কেটে গৃহে প্রবেশ]
ধারা ৪৪৩: সংগোপনে গৃহে অনধিকার প্রবেশ (Lurking House Trespass)
বিষয়টি গোপন রাখার ব্যবস্থা করে গৃহে প্রবেশ করলে তাকে সংগোপনে গৃহে অনধিকার প্রবেশ বলে।
ধারা ৪৪৪: রাত্রিকালে সংগোপনে গৃহে অনধিকার প্রবেশ (Lurking House Trespass at night)
সূর্যাস্তের পরে ও সূর্যদয়ের পূর্বে সংগোপনে গৃহে অনধিকার প্রবেশ করলে তাহা রাত্রিকালে সংগোপনে গৃহে অনধিকার প্রবেশ বলে গণ্য হবে।
ধারা ৪৪৫: অপথে গৃহে প্রবেশ (House Breaking)
নিম্ন বর্ণিত ৬ উপায়ে গৃহে প্রবেশ করলে অপথে গৃহে প্রবেশ বলে গণ্য হবে
(১) নিজের তৈরী পথে
(২) দেওয়াল বা গৃহ টপকিয়ে
(৩) গৃহের মালিকের উদ্দেশ্য ছাড়া তৈরী পথে
(৪) তালা খুলে
(৫) অপরাধমূলক বলপ্রয়োগ, আঘাত বা হুমকি দিয়ে
(৬) বন্ধ রাখা পথে
ধারা ৪৪৬: রাত্রিকালে অপথে গৃহে প্রবেশ
সূর্যাস্তের পরে ও সূর্যোদয়ের পূর্বে সিধ কেটে বা দরজা জানালা ভেঙে গৃহে প্রবেশ করলে তাহা রাত্রিকালে অপথে গৃহে প্রবেশ বলে গণ্য হবে।
ধারা ৪৪৭: অপরাধমূলক অনধিকার প্রবেশের শাস্তি
৩ মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড/ ৫০০ টাকা অর্থদণ্ড/ উভয়
ধারা ৪৪৮: গৃহে অনধিকার প্রবেশের শাস্তি
১ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড/ ১০০০ টাকা অর্থদণ্ড/ উভয়
ধারা ৪৪৯: মৃত্যুদণ্ড ঘটানোর উদ্দেশ্যে গৃহে অনধিকার প্রবেশের শাস্তি
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড/১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড
ধারা ৪৫০: যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দণ্ডনীয় অপরাধ ঘটানোর উদ্দেশ্যে গৃহে অনধিকার প্রবেশের শাস্তি
১০ বছর পর্যন্ত যেকোনো কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড
ধারা ৪৫১: কারাদন্ডে দণ্ডনীয় অপরাধ ঘটানোর উদ্দেশ্যে গৃহে অনধিকার প্রবেশের শাস্তি
২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড
চুরির উদ্দেশ্যে গৃহে অনধিকার প্রবেশের শাস্তি – ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড
ধারা ৪৫৩: সংগোপনে গৃহে অনধিকার প্রবেশ বা অপথে গৃহে প্রবেশের শাস্তি
২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড
ধারা ৪৫৬: রাত্রে সংগোপনে গৃহে অনধিকার প্রবেশ বা অপথে গৃহে প্রবেশের শাস্তি ৩ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।
ধারা ৪৬০: রাত্রে সংগোপনে গৃহে অনধিকার প্রবেশ বা অপথে গৃহে প্রবেশের সাথে সম্মিলিতভাবে জড়িত ব্যক্তিদের ভিতর যেকোনো একজন মৃত্যু বা গুরুতর আঘাত প্রদান করলে প্রত্যেকের শাস্তি
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড/ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড
ধারা ৪৬৩: জালিয়াতির (Forgery) সংজ্ঞা
নিম্নলিখিত কারণে মিথ্যা দলিল বা দলিলের অংশ বিশেষ প্রণয়ন করলে তাহা জালিয়াতি বলে গণ্য হবে –
- কাহারো ক্ষতির জন্য
- স্বত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য
- সম্পত্তি ত্যাগে বাধ্য করার জন্য
- চুক্তি সম্পাদনের জন্য
- প্রতারণা করার জন্য
ধারা ৪৬৪: মিথ্যা অথবা জাল দলিল প্রনয়ণ (Making a false document)
নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে মিথ্যা দলিল প্রণয়ন বলে গণ্য হবে –
- অন্যের স্বাক্ষর ও সীল নকল করলে
- দলিলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ পরিবর্তন করলে
- অন্যের দ্বারা দলিল স্বাক্ষর, সীলমোহর বা পরিবর্তিত করলে
ধারা ৪৬৫: জালিয়াতির শাস্তি
২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড/ অর্থদণ্ড/ উভয়
ধারা ৪৬৬: আদালতের নথি বা সরকারী রেজিস্টার ইত্যাদি জালকরণের শাস্তি
৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড
ধারা ৪৬৭: মূল্যবান জামানত বা উইল জালিয়াতির শাস্তি
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড/ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড
ধারা ৪৬৮: প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতির শাস্তি
৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড
ধারা ৪৭০: জাল দলিলের (Forged document) সংজ্ঞা
সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে জালকৃত কোনো মিথ্যা দলিলকে বলা হয় জাল দলিল।
ধারা ৪৭৭এ: হিসাবপত্র সমূহে মিথ্যা বর্ণনার শাস্তি
৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড/ অর্থদণ্ড/ উভয়
ধারা ৪৭৮: পণ্য প্রতীক (Trade Mark) সংজ্ঞা
কোনো পণ্যদ্রব্য, কোনো বিশেষ ব্যক্তির উৎপাদিত পণ্য বা ব্যবসায়ের পণ্য বলে নির্দেশ করার জন্য ব্যবহৃত চিহ্ন বা মার্কাকে পণ্য প্রতীক বলে।
ধারা ৪৭৯: সম্পত্তি চিহ্ন (Property Mark) সংজ্ঞা
কোনো অস্থাবর সম্পত্তি কোনো বিশেষ ব্যক্তির মালিকানাধীন বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত চিহ্নকে সম্পত্তি চিহ্ন বলে।
ধারা ৪৮২: মিথ্যা পণ্য প্রতীক বা ট্রেড মার্ক ব্যবহারের শাস্তি
১ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড/ অর্থদণ্ড/ উভয়
ধারা ৪৮৯এ: পত্রমুদ্রা বা ব্যাংক নোট জাল করার (Counterfeiting currency-notes or bank-notes) শাস্তি
যাবজ্জীবন/ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৪৮৯বি: নকল বা মেকী পত্রমুদ্রা বা ব্যাংক নোট খাটি বলে ব্যবহার/ক্রয়-বিক্রয়/লেনদেন করার শাস্তি
যাবজ্জীবন/ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড ও অর্থদন্ড
ধারা ৪৮৯সি: নকল বা মেকী পত্রমুদ্রা বা ব্যাংক নোট জেনে শুনে দখলে রাখার শাস্তি
৭ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড/ অর্থদন্ড/ উভয়
ধারা ৪৯৩: কোনো নারীকে আইনানুগ বিবাহের বিশ্বাসে প্ররোচিত করে স্বামী স্ত্রী রূপে সহবাস করার (Deceitful cohabitation including belief of lawful marriage) শাস্তি
১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড
ধারা ৪৯৪: স্বামী স্ত্রীর জীবদ্দশায় পুনরায় বিবাহ/ দ্বিবিবাহ/ দ্বিগামিতার (Bigamy) শাস্তি:
৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদন্ড
ব্যতিক্রম: নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে অপরাধ হবে না –
(১) স্বামী স্ত্রীর বিবাহ আদালত কর্তৃক নাকচ ঘোষিত হলে
(২) স্বামী বা স্ত্রী ৭ বছর নিখোঁজ থাকলে
ধারা ৪৯৫: পূর্বের বিবাহ গোপন করে পুনরায় বিবাহের শাস্তি
১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড
ধারা ৪৯৬: প্রতারণামূলক বিবাহের শাস্তি:
৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড
ধারা ৪৯৭: ব্যাভিচারের (Adultery) শাস্তি
কোনো ব্যক্তি জেনেশুনে অপর কোনো ব্যক্তির স্ত্রীর সাথে উক্ত অপর ব্যক্তির সম্মতি ও সমর্থন ছাড়া যৌন সঙ্গম করে যা নারী ধর্ষণের সামিল নহে তাকে ব্যভিচার বলে।
ব্যাভিচারের শাস্তি – ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড/ অর্থদণ্ড/ উভয়
এক্ষেত্রে প্ররোচনার জন্য নারীর কোনো শাস্তি হবে না।
এই ধারায় মামলা করতে পারবে ঐ নারীর স্বামী।
ধারা ৪৯৯: মানহানি বা দুর্নাম করা (Defamation)
যদি কোনো ব্যক্তি অপর কোনো ব্যক্তির খ্যাতি বা সুনাম নষ্ট করার উদ্দেশ্যে জেনেশুনে কোনো কথা, চিহ্ন বা দৃশ্যমান কল্পমূর্তির সাহায্যে নিন্দাবাদ প্রণয়ন বা প্রকাশ করে তাকে মানহানি বলে।
এই ধারায় ৪ টি ব্যাখ্যা ও ১০ টি ব্যতিক্রম আছে।
[মৃত ব্যক্তি বা কৃত্রিম ব্যক্তির (কোম্পানি) ক্ষেত্রে এই ধারা প্রযোজ্য হবে।]
ধারা ৫০০: মানহানির শাস্তি
২ বছর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড/ অর্থদণ্ড/ উভয়
ধারা ৫০১: মানহানিকর বস্তু মুদ্রণের শাস্তি
২ বছর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড/ অর্থদণ্ড/ উভয়
ধারা ৫০৩: অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন (Criminal Intimidation)
যদি কোনো ব্যক্তি অপর কোনো ব্যক্তির দেহ, খ্যাতি বা সম্পত্তির ক্ষতি করার ভীতি প্রদর্শন করে সে যা করতে বাধ্য নয় তাহা করতে বাধ্য করে অথবা সে যা করতে বাধ্য তাহা করা থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করে তাহলে তাকে অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন বলে।
[দেওয়ানী মামলা পরিচালনা থেকে বিরত রাখার জন্য কাহারো বাড়ি পুড়িয়ে ফেলার হুমকি দেওয়া]
ধারা ৫০৬: অপরাধজনক ভীতি প্রদর্শনের শাস্তি
৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড/ অর্থদণ্ড/ উভয়
মৃত্যু বা গুরুতর আঘাত ইত্যাদির ভীতি প্রদর্শনের শাস্তি – ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড/ অর্থদণ্ড/ উভয়
স্ত্রীলোকের সতীত্ব নষ্ট হয়েছে বলে দুর্নাম আরোপের হুমকি দিলে – ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড/ অর্থদণ্ড/ উভয়
ধারা ৫০৯: নারীর শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যে কথা, অঙ্গভঙ্গি বা কাজ (Eve-teasing) করার শাস্তি
১ বছর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড/ অর্থদণ্ড/ উভয়
ধারা ৫১০: মাতাল বা নেশাগ্রস্থ ব্যক্তি প্রকাশ্যে অসদাচরণ করার ফলে কাহারো বিরক্ত ঘটলে শাস্তি
২৪ ঘন্টা বিনাশ্রম কারাদণ্ড/ ১০ টাকা অর্থদণ্ড/ উভয়
ধারা ৫১১: যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় অপরাধ সংঘটনের উদ্যোগের গ্রহণের শাস্তি
যে অপরাধের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তার জন্য বিহিত সর্বোচ্চ শাস্তির অর্ধেক পর্যন্ত কারাদণ্ড/ বিহিত অর্থদণ্ড/ উভয়দন্ড।
[যেমন পকেট মারার উদ্দেশ্যে পকেটে হাত দিয়ে কিছু পেল না]
লেখক-
Advocate Muhammad Mohiuddin
01711068609 / 01540105088