দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধার বা দাম্পত্য সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার মোকদ্দমার আর্জি।
মোকামঃ বিজ্ঞ জেলা জজ সাহেবের আদালত, ঢাকা।
পারিবারিক মোকদ্দমা নং-/২০০৮
মোঃ আব্দুল কুদ্দুস মিয়া,
পিতা-মৃত গোলাম মোস্তফা শেখ,
সাং- কান্দিরপাড়া, পোঃ জসিলদিয়া, থানা-লৌহজং,
জেলা-মুন্সীগঞ্জ।
বর্তমান- ২০৫, আমলীগোলা, নীচতলা, করিম মিয়ার বাড়ী থানা- লালবাগ, জেলা-ঢাকা,।
—————-বাদী।
-বনাম-
১। মোসাঃ ঝিনুক আক্তার ঝিনু
পিতা-মজনু মিয়া,
২। মজনু মিয়া,
পিতা- মৃত মফিজ উদ্দিন খলিফা।
৩। রিজিয়া বেগম,
স্বামী-মজনু মিয়া,
সর্ব সাং- কান্দিরপাড়া, পোঃ জসিলদিয়া, খানা-লৌহজং,
জেলা- মুন্সীগঞ্জ।
৪। শহিদুল ইসলাম
পিতা-হয়দার শেখ সাং- শিমুলিয়া, খানা- লৌহজং
জেলা- মুন্সীগঞ্জ।
——————-বিবাদীগণ।
দাম্পত্য সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার মোকদ্দমা
মোকদ্দমার মূল্যমান ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা।
উপরোক্ত বাদী নিম্নরূপ বর্ণনা করিতেছেন যে,
১। বর্তমান মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং থানাধীন কান্দিপাড়া গ্রামের এক রক্ষণশীল মুসলিম ঐতিহ্যবাহী ও স্বনামধন্য ব্যবসায়িক পরিবারের বাদীর জন্ম হয়। বাদীর পারিবারিক ঐতিহ্য অনুযায়ী পড়ালেখা করিয়া ঢাকায় ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করিয়া আসিতেছে।
২। অত্র মোকদ্দমার সকল বিবাদীগণ বাদীর পূর্ব পরিচিত ও একই এলাকার বাসিন্দা। ১নং বিবাদিনী বাদীর স্ত্রী ২নং বিবাদী বাদীর শ্বশুর, ৩ং বিবাদনী বাদীর শাশুড়ী এবং ৪র্থ বিবাদী বাদীর মামা শুশুর ১নং বিবাদী বাদীর নিজের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করিতেন এবং ব্যবসায়িক সূত্র ধরে ১নং বিবাদীনীর সহিত বাদরি পরিচয় ঘটে যাহা এক পর্যায়ে ভালবাসায় রূপান্তরিত হয়। এইভাবে ধীরে ধীরে বাদী এবং ১নং বিবাদিনী একে অপরের প্রতি চরমভাবে আকৃষ্ট হইয়া পড়িলে তাহারা একে অপরকে না দেখিয়া থাকিতে পারে না। এমতাবস্থায় উভয়ে তাহাদের ভালবাসাকে দীর্ঘস্থায়ী এবং বাস্তবে রূপদান কল্পে বিবাহের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। উভয়ের সম্মতিক্রমে এবং উভয়ের হিতাকাঙ্খীদের অনুমতিক্রমে পারিবারিকভাবে বিগত ২১/০১/২০০৭ইং তারিখে ইসলামিক শরা-শরীয়ত অনুযায়ী ১,০০,০০/- (এক লক্ষ এক) টাকা দেন মোহর ধার্য্য করিয়া উহার মধ্যে ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা উসুল ক্রমে পবিত্র কলেমা পাঠ করিয়া কাজী অফিস আনন্দবাজার, নিমতলী, ঢাকায় রেজিস্ট্রি কাবিল মূলে বাদী এবং ১নং বিবাদীনীর মধ্যে বিবাহ কার্য্য সম্পন্ন হয়, এবং একই তারিখে নোটারী পাবলিক অব বাংলাদেশ ঢাকা এর বরাবরে এফিডেভিট এর মাধ্যমেও হলফনামা করিয়া বিবাহ হয়।
৩। বিবাহের পর কিছুদিন তাহাদের দাম্পত্য জীবনে মধুর সম্পর্ক বিরাজ করিতে থাকে এবং বাদী তার স্ত্রীকে (১নং বিবাদিনীকে) তার পিত্রালয়ে (২নং বিবাদী) রাখেন। এইভাবে আহাদের মনুর সম্পর্কের খাতিরে সবকিছু তুলিয়া গিয়া সহজ সরল বাদী অল্পদিনের মধ্যেই তাহার মুন্সীগঞ্জস্থ লৌহজং থানার কান্দিপাড়া গ্রামের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের দায়-দায়িত্ব ১নং বিবাদিনীকে বুঝাইয়া দেন। ১নং বিবাদীনী বাদীর নিকট থেকে বিভিন্ন তারিখে সর্বমোট ১,৫০,০০০/- (এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা গ্রহণ করিয়া তাহার মামা শহিদুল ইসলামকে (অত্র মোকদ্দমার ৪নং বিবাদী) ব্যবসার জন্য দেয়। অতঃপর বাদী ১নং বিবাদিনীর নিকট তারা ব্যবসার হিসাব চাহিলে ১নং বিবাদিনী দেই দিচ্ছি বলিয়া নানা কথায় বাদীকে ভুলাইয়া রাখিতে চেষ্টা করে। ৪নং বিবাদী নিজেও বাদীকে উক্ত টাকা ফেরৎ প্রদানে পুনঃ পুনঃ অঙ্গীকার করে কিন্তু অদ্যাবধি কোন টাকা পরিশোধ করে নাই। তদুপরি ১নং বিবাদীনী তাহার পিতার বাড়ীতে অবস্থান করার কারণে বাদীর বহুমূল্যবান জিনিসপত্র ও টাকা পয়সা সহ সকল কিছু ১নং বিবাদিনীর জিম্মায় থাকিত। অতঃপর এক পর্যায়ে বানী উক্ত ১নং বিবাদিনীর নিকট টাকা চাহিলে এবং ২-৩নং বিবাদীকে অত্র বিষয়ে আত করিলে তাহার হানীর উপর ক্ষিপ্ত হইয়া উঠে। কিন্তু বিবাদীগণের একরোখা আরচণে বাদীর সমস্ত উদ্দ্যোগ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হইয়াছে। বানী কর্তৃক দেওয়া ১নং বিবাদিনীর উপর অর্পিত বাসীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটিও ১নং বিবাদিনীর দায়িত্ব অবহেলার কারণে নষ্ট হইয়া গিয়াছে প্রায়। তবুও ভালবাসার টানে বাদী তাহার স্ত্রী ১নং বিবাদিনীকে তাহার দাম্পত্যাধীনে ফিরিয়া পাইবার নিমিত্তে দাম্পত্য সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার মোকদ্দমা রুজু করিতে আদালতের স্মরণাপন্ন হইলেন।
৭। অত্র মোকদ্দমার নালিশের কারণ বিগত ৩০/০৭/২০০৭ইং তারিখে যেইদিন বিবাদীগণ বাদীকে জোরপূর্বক বাসা হইতে বাহির করিয়া দেন এবং সর্বশেষ ০৫/০২/২০০৮ইং তারিখে যেইদিন বাদী তাহার আপনজনদের মাধ্যমে ১নং বিবাদিনীকে তাহার নিজের ঘরে আনিয়া পুনঃরায় সংসার করিবার সমস্ত চেষ্টা করিয়া ব্যর্থ হয়।
৮। অত্র মোকদ্দমাটি একটি দাম্পত্য সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্টার মোকদ্দমা বিধায় বাদী ১নং বিবাদিনীর সহিত তাহার বিবাহের দেন মোহরের সমপরিমাণ অর্থ ১,০০,০০১/- (এক লক্ষ এক) টাকাকে অত্র মোকদ্দমার মূল্যবান নির্ধারণক্রমে এবং যেহেতু উহা একটি পারিবারিক মোকদ্দমা সেহেতু নির্ধারিত কোর্ট ফি অর্থাৎ আজিতে ৬০/- (ষাট) টাকা কোর্ট ফিস প্রদানে অত্র মোকদ্দমা রুজু করিলেন।
৯। অতএব বাদী প্রার্থনা করিতেছেন যে,
(ক) বাদী ও ১নং বিবাদিনীর মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার নিমিত্তে এক ডিক্রী প্রচার করিতেঃ
(খ) ১নং বিবাদিনী বাদীর দাম্পত্যাধিনে বসবাস করিতে বাধ্য মর্মে এক ডিক্রী প্রচার করিতে।
(গ) ২-৪ নং বিবাদীগণ যাহাতে কোন বাধা/বিঘ্ন/প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করিতে না পারে সেই মর্মে তাহাদের বিরুদ্ধে যথাবিহীত আদেশ প্রচার করিতে:
(ঘ) ময় আদালত ব্যয় বাদীর স্বপক্ষে এবং বিবাদীগণের বিরুদ্ধে ডিক্রী দিতে; এবং
(ঙ) আইন, ন্যায়-নীতি, ন্যায় বিচারে বাদী আর যে সকল প্রতিকারাদি পাইবার হকদার বলিয়া বিবেচিত হন সেইগুলো বাদীর বরাবরে মঞ্জুর করিতে বিজ্ঞ হজুর আদালতের মর্জি হয়।
ডকুমেন্টের তফসিল
বাদী তাহার মোকদ্দমার প্রমানার্থে নিম্ন লিখিত কাগজপত্রাদি দাখিল করিতেছে।
১। ১নং বিবাদিনী ও বাদীর সহিত বিবাহের নিকাহ নামার নকল (সহি মোহরী) যাহার তারিখ- ২১/০১/২০০৭ইং।
২। ১নং বিবাদিনী ও বাদীল সহিত বিবাহের হলফনামার ১ (এক) কপি যাহা নোটারী পাবলিক অব বাংলাদেশ এর বরাবরে হলফ করিয়া সম্পন্ন হয়।
সাক্ষীর তফসিল
বাদী তাহার মোকদ্দমা প্রমাণাথে নিম্ন লিখিত ব্যক্তিগণের সাক্ষী মান্য করিতেছেন।
১। মোঃ নয়ন মিয়া, পিতা- বাবলু খান
২। সুফিয়া বেগম, স্বামী তোফাজ্জেল খান
সর্বসাং- কান্দিরপাড়া, পোঃ জসিমদিয়া, থানা- লৌহজং, জেলা- মুন্সীগঞ্জ।
৩। আব্দুস সালাম, পিতা-মৃত কফিল উদ্দিন
সাং- মাতুয়াইল, ডেমরা, ঢাকা।
৪। মোঃ হোসেন, পিতা-মৃত আব্দুল হক,
সাং- কামরাঙ্গীর চর, ঢাকা।
সত্যপাঠ
আমি অত্র মোকদ্দমার বাদী ও তদ্বিরকারক। অত্র মোকদ্দমার আরজিতে বর্ণিত সকল বর্ণনা সত্য ও সঠিক। বিধায় উহার শুদ্ধতা স্বীকারে আমার নিয়োজিত আইনজীবী মহোদয়ের চেম্বারে বসিয়া নিজ নিজ নাম সহি সম্পাদন করিলাম।
———————
সত্যপাঠকারীর স্বাক্ষর