পারিবারিক আদালতে মামলা করার নিয়ম

পারিবারিক মামলা দাখিল করার নিয়ম:

পারিবারিক আদালতে মামলা দাখিল করার নিয়ম ১৯৮৫ সনের পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশের ৫ ধারার বিধান মতে পারিবারিক আদালতে ৫ ধরণের মামলা করা যায়। যথা-

১। খোরপোশ (Maintenance),

২। মোহরানা বা দেনমোহর (Dowry),

৩। বিবাহ-বিচ্ছেদ (Divorce),

৪। দাম্পত্য স্বত্ব পুনরুদ্ধার (To recover conjugal right),

৫। অভিভাবকত্ব ও শিশু সন্তানের প্রতিপালন (Guardianship)

 

কোর্ট ফিস:

১। খোরপোশ মামলায় – ১০০/-

২। মোহরানা বা দেনমোহর মামলায় – ১০০/-

৩। বিবাহ-বিচ্ছেদ মামলায় – ১০০/-

৪। দাম্পত্য স্বত্ব পুনরুদ্ধার মামলায় – ২০০/-

৫। অভিভাবকত্ব ও শিশু সন্তানের প্রতিপালন মামলায় – ১০০/-

 

সারা দেশের সকল সহকারী জজ/ সিনিয়র সহকারী জজ নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে পারিবারিক আদালতের জজ হিসাবে বিবেচিত হন। যে কোন ধর্মের ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত আইন দ্বারা অনুশাসিত উপরোক্ত ৫টি বিষয়ের যে কোন বিষয়ে ঐ আদালতে মামলা দায়ের করার অধিকারী। ঐ আদালতে মামলা দায়ের করার আগে আরজি/দরখাস্ত প্রস্তুতের সময় ব্যক্তিগত আইনের (যেমন-মুসলিম আইন) বিধানসমূহ খুব সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করতে হয়। নির্ধারিত টাকার কোর্ট ফিস প্রদান সাপেক্ষে এফিডেভিটসহ এই আদালতে মামলা দাখিল করা যায়। পারিবারিক আদালতে একজন মুসলিম মহিলা কর্তৃক বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা দায়ের করার আগে ১৯৩৯ সনে প্রণীত মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইনে উল্লেখিত বিষয়সমূহ গুরুত্ব সহকারে পাঠ করতে হয়। ইহা ছাড়াও ১৯৬১ সনে প্রণীত মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশে বর্ণিত বিষয়গুলির উপর দৃষ্টিপাত করার আবশ্যকতা রয়েছে। উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, স্বামী যদি কাবিননামায় তার স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে থাকেন (কাবিননামার ১৮ নং কলামে) তাহলে স্ত্রী এই আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করার অধিকারী থাকেন না। সেক্ষেত্রে তালাক-ই-তৌফিজের ক্ষমতা বলে তিনি বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রারের নিকট হাজির হয়ে তার স্বামীকে তালাক প্রদান করতে পারেন। স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক প্রদানের জন্য এ আদালাতে মামলা করা যায় না। কেননা একজন মুসলিম স্বামী তার স্ত্রীকে শরিয়তের বিধান এবং বর্তমানে প্রচলিত আইন অনুসারে যে কোন সময় উপযুক্ত কারণে তার স্ত্রীকে আদালতের বাইরে তালাক প্রদান করতে পারেন। অর্থাৎ বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা শুধুমাত্র একটি ক্ষেত্রেই করা যায়। তা হলো বিবাহের সময় স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক প্রদানের অনুমতি (কাবিননামার ১৮ নং কলামে) প্রদান না করে থাকলে কেবল সেই ক্ষেত্রেই এই আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করা যাবে। এই আদালতে মামলার যে কোন পক্ষ প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের প্রার্থনা করতে পারে। এই আদালতের আর্থিক এখতিয়ার অসীম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *