ফৌজদারী কার্যবিধির সহজ নোট (ধারা ১৬৭-৩৭৩)

ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮

The Code of Criminal Procedure, 1898

 

ধারা ১৬৭: ২৪ ঘন্টার ভিতর তদন্ত সম্পন্ন না হলে তখনকার পদ্ধতি/পুলিশ রিমান্ড।

(১) আসামীকে গ্রেফতারের ২৪ ঘন্টার ভিতর তদন্ত সম্পন্ন না হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসার পুলিশ ডায়েরীর কপিসহ নিকটতম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর সামনে হাজির করবেন।

(২)সংশ্লিষ্টম্যাজিস্ট্রেট এর মামলা আমলে নেবার ক্ষমতা থাকুক বা না থাকুক তিনি সময় সময় পুলিশ হেফাজতে আটক রাখার ক্ষমতা প্রদান করতে পারবেন তবে তাহা সর্বসাকূল্যে ১৫ দিনের বেশি হবে না।

 

এই ধারায় পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করতে পারবেন –

  • মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট
  • ১ম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট বা
  • সরকার দ্বারা বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত ২য় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট।

এই ধারায় পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করতে পারবেন না –

  • ৩য় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট এবং
  • ক্ষমতাপ্রাপ্ত নন এরূপ ২য় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট।

 

ধারা ১৬৭(৫):  মামলা দায়েরের তারিখ বা তদন্তের আদেশ দিলে সেই তারিখ হতে ১২০ দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন না হলে বিচারিক আদালত আসামীকে জামিনে মুক্তি দিতে পারবেন।

 

ধারা ১৭০: পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ পেলে পুলিশ অফিসার হেফাজতে থাকা আসামীকে পুলিশ রিপোর্টের ভিত্তিতে মামলা আমলে নেবার ক্ষমতা সম্পন্ন ম্যাজিস্ট্রেট এর নিকট প্রেরণ করবেন/ ইহাই কোর্টে চালান।

 

ধারা ১৭১: ফরিয়াদি বা সাক্ষীকে পুলিশের সাথে যেতে বলা যাবে না।

আদালতে যাবার পথে কোনো ফরিয়াদি বা সাক্ষীকে –

  • পুলিশেরসাথে যেতে বলা যাবে না।
  • অপ্রয়োজনীয় বাধা প্রদান করা যাবেনা।
  • মুচলেকা ছাড়া হাজিরের জন্য জামানত দাবী করা যাবে না।

 

ধারা ১৭২: তদন্ত ডায়েরী/ পুলিশ ডায়েরী/ কেইস ডায়েরী/ CD .

তদন্তকারী কর্মকর্তা (IO) তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার তারিখ থেকে একটি ডায়েরি সংরক্ষণ করবেন। উক্ত ডায়েরিতে তিনি তদন্তকালীন সকল তথ্য ধারাবাহিকভাবে লিপিবদ্ধ করবেন। এই ডায়েরিকেই বলা হয় তদন্ত ডায়েরী/ পুলিশ ডায়েরী/ কেইস ডায়েরী/ CD.

পুলিশ ডায়েরীর সাক্ষ্যগত কোনো মূল্য নাই। তবে আদালত ন্যায়বিচারের স্বার্থে পুলিশ ডায়েরী তলব করতে পারেন।

 

ধারা ১৭৩: পুলিশ রিপোর্ট (Police Report).

পুলিশ অফিসার তদন্ত শেষে নির্দাহ্রিত ফরমে বিচারিক আদালতে যে রিপোর্ট পেশ করেন তাকেই পুলিশ রিপোর্ট বলা হয়।

[পুলিশ রিপোর্ট সাধারণত ২ প্রকার –

  • Charge Sheet (অভিযোগনামা)
  • Final Report ]

 

ধারা ১৭৪: আত্মহত্যা ইত্যাদি সম্পর্কে পুলিশ অনুসন্ধান করবে এবং রিপোর্ট দিবে।

(ক) আত্মহত্যা

(খ) কোনো ব্যক্তি/ প্রাণী/ যন্ত্র/ দুর্ঘটনা দ্বারা মৃত্যু

(গ) মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে সন্দেহ থাকলে।

 

এই ৩ টি কারণে মৃত্যুর সংবাদ পেলে পুলিশ অফিসার তাতক্ষণিকভাবে নিকটতম ক্ষমতাবান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে অবহিত করবেন এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্বয়ং সাথে সাথে মৃত দেহের অবস্থানে গমন করবেন। সেখানে উপস্থিত হয়ে তদন্ত করবেন। উপস্থিত ২ বা ততোধিক সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির উপস্থিতিতে মৃত্যুর দৃশ্যমান কারণ সম্পর্কে তদন্ত করবেন এবং রিপোর্ট প্রণয়ন করবেন। এই রিপোর্টকে বলা হয় সুরতহাল রিপোর্ট (Inquest Report).

 

সুরতহাল রিপোর্ট এ স্বাক্ষর করবেন তদন্তকারী অফিসার এবং উপস্থিত সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিগণ।

 

শত্রুর কার্যের দ্বারা মৃত্যুর মৃত্যুর ক্ষেত্রে ক্ষমতাবান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে অবহিত করতে হবে না।

 

পুলিশ অফিসার সুরতহাল রিপোর্ট প্রণয়ন করবেন এবং সাথে সাথে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের (District Magistrate/ DM) নিকট প্রেরণ করবেন।

 

মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজন হলে ময়ান তদন্তের (Post Mortem Report) জন্য নিকটতম সিভিল সার্জনের নিকট প্রেরণ করবেন। তবে আবহাওয়া, দূরত্ব বা পচন ধরার বিষয় বিবেচনা করে প্রেরণ নাও করতে পারেন।

 

ধারা ১৭৫:  লোকজনকে সমন প্রদানের ক্ষমতা।

১৭৪ ধারায় অগ্রসর হওয়া পুলিশ অফিসার তদন্তের উদ্দেশ্যে যেকোনো ব্যক্তিকে লিখিত আদেশ দ্বারা সমন করতে পারবেন। এইরূপে সমনকৃত প্রত্যেক ব্যক্তি হাজির হতে এবং যে সমস্ত প্রশ্নের জবাব তাকে কোনো ফৌজদারী অভিযোগ বা দন্ড বা বাজেয়াপ্তির দিকে ঠেলে দিতে পারে সেই সকল প্রশ্ন ব্যতীত সকল প্রশ্নের জবাব দিতে বাধ্য থাকবে।

 

ধারা ১৭৬: ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান।

(১) পুলিশ হেফাজতে মারা গেলে নিকটতম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ অফিসার কর্তৃক কৃত তদন্তের অতিরিক্ত সুরতহাল তদন্ত করবেন। ১৭৪ ধারায় পুলিশ অফিসার কর্তৃক কৃত তদন্তের ক্ষেত্রেও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশের তদন্তের অতিরিক্ত তদন্ত করতে পারবেন।

(২) উক্ত ম্যাজিস্ট্রেট তদন্তের স্বার্থে কবর হতে লাশ উত্তোলন (Disinter corpeses) করতে এবং পরীক্ষা করতে পারবেন।

 

অধ্যায়  ১৫

অনুসন্ধান ও বিচারে ফৌজদারী আদালতের এখতিয়ার (Jurisdiction of criminal courts)  

ধারা ১৭৭  – ১৯৯খ

 

ধারা ১৭৭: অনুসন্ধান ও বিচারের সাধারণ স্থান।

সাধারণত যে আদালতের স্থানীয় এখতিয়ারের মধ্যে ঘটনাটি ঘটবে অপরাধের অনুসন্ধান ও বিচার সেখানেই হবে।

 

ধারা ১৭৯: অপরাধ ঘটনের জেলায় বা পরিণাম ঘটনের স্থানে আসামীর বিচারের হবে।

অপরাধ সংঘটিত হয়েছে যেখানে অথবা পরিণাম ঘটেছে যেখানে উক্ত দুই স্থানের যেকোনো এক স্থানে অপরাধের অনুসন্ধান ও বিচার হবে।

 

ধারা ১৮০: কৃতকার্য যেইক্ষেত্রে অন্য অপরাধের কারণে অপরাধ সেই ক্ষেত্রে বিচারের স্থান।

অপরাধের সহায়তা প্রদান করা হয় যেখানে অথবা সহায়তার পরিণাম ঘটে যেখানে উক্ত দুই স্থানের যেকোনো এক স্থানে অপরাধের অনুসন্ধান ও বিচার হবে।

 

ধারা ১৯০: ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক অপরাধ আমলে গ্রহণ/ Cpmplaint Register Case/ CR Case.

CMM/ MM/ CJM/ 1st Class Magistrate/ Special Magistrate নিম্নলখিত ক্ষেত্রে অপরাধ আমলে নিতে পারেন-

(ক) নালিশ বা অভিযোগ পেলে

(খ) পুলিশ রিপোর্টের ভিত্তিতে

(গ) নিজের জ্ঞানমতে।

 

ধারা ১৯৩: দায়রা আদালত কর্তৃক অপরাধ আমলে গ্রহণ

ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক অপরাধ আমলে নেওয়ার পর আসামীসহ মামলাটি দায়রা আদালতে প্রেরিত হলে দায়রা আদালত অপরাধ আমলে নিতে পারেন।

[ দায়রা আদালত সরাসরি কোনো অপরাধ আমলে নিতে পারেন না ]

 

ধারা ১৯৬: রাষ্ট্র বিরোধী অপরাধের অভিযোগ।

সরকার বা সরকার দ্বারা বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তার নালিশ ছাড়া কোনো আদালত রাষ্ট্র বিরোধী অপরাধের অভিযোগ আমলে নিবেন না।

 

ধারা ১৯৭: বিচারক বা সরকারি কর্মচারির বিরুদ্ধে অভিযোগ।

জজ/ম্যাজিস্ট্রেট/সরকারি কর্মচারির বিরুদ্ধে অভিযোগ সরকারের পূর্ব অনুমতি ছাড়া কোনো আদালত আমলে নিবেন না।

 

ধারা ১৯৮: চুক্তিভঙ্গ, মানহানি ও বিবাহ বিষয়ক অপরাধের অভিযোগ।

চুক্তিভঙ্গ, মানহানি ও বিবাহ বিষয়ক অপরাধের অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্থ/সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির নালিশ ছাড়া কোনো আদালত আমলে নিবেন না।

 

ধারা ১৯৯: ব্যভিচার বা বিবাহিতা স্ত্রীলোককে ফুসলাইয়া নিবার অভিযোগ।

ব্যভিচার বা বিবাহিতা স্ত্রীলোককে ফুসলাইয়া নিবার অভিযোগ স্ত্রীলোকটির স্বামীর/তত্ত্বাবধায়কের নালিশ ছাড়া কোনো আদালত আমলে নিবেন না।

 

অধ্যায়  ১৬

ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নালিশ (Complan to magistrate)  

ধারা ২০০  – ২০৩

 

ধারা ২০০: ফরিয়াদীর জবানবন্দী গ্রহণ (Examination of complainant)

নালিশের ভিত্তিতে মামলা আমলের ক্ষেত্রে অভিযোগ মৌখিক হলে ম্যাজিস্ট্রেট ফরিয়াদীর এবং হাজির সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণ করবেন।

 

জবানবন্দীতে জবানবন্দীদানকারী ও আদালত স্বাক্ষর করবেন।

 

৩ টি ক্ষেত্রে ফরিয়াদীর জবানবন্দী গ্রহণ করার প্রয়োজন নাই-

  • অভিযোগটি লিখিত হলে।
  • অভিযোগকারী আদালত বা সরকারী কর্মচারী হলে।
  • অভিযোগটি পূর্বে জবানবন্দীগ্রহণ করে মামলা হস্তান্তর করা হলে।

 

ধারা ২০১: অভিযোগ আমলে নেবার ক্ষমতা আদালতের না থাকলে।

অভিযোগ আমলে নেবার ক্ষমতা আদালতের না থাকলে এবং অভিযোগটি লিখিত হলে মন্তব্যসহ ফেরত দিবেন। অভিযোগটি মৌখিক হলে অভিযোগকারীকে যথাযথ আদালতে পাঠাবেন।

 

ধারা ২০২: পরোয়ানা (Warrant) ইস্যু স্থগিত রাখার নির্দেশ

নালিশি মামলায় আদালত পরোয়ানা ইস্যু না করে প্রথমে তদন্ত বা অনুসন্ধানের আদেশ দিবেন।

 

ধারা ২০২(২খ): পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন (Final Report) ম্যাজিস্ট্রেট গ্রহণ করতে পারবেন এবং অব্যাহতি দিতে পারবেন।

 

ধারা ২০৩: নালিশ খারিজকরণ

২০২ ধারা মোতাবেক তদন্ত বা অনুসন্ধানের রিপোর্ট পাওয়ার পর অগ্রসর হওয়ার কারণ না থাকলে ম্যাজিস্ট্রেট নালিশ খারিজ করতে পারবেন

 

[নালিশ খারিজের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ ব্যক্তির প্রতিকার রিভিশন ]

 

অধ্যায়  ১৭

ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যধারা শুরু  

ধারা ২০৪ – ২০৫ঘ

 

ধারা ২০৪: পরোয়ানা ইস্যু (Issue of Process).

ম্যাজিস্ট্রেট অগ্রসর হওয়ার মত কারণ থাকলে প্রয়োজন অনুসারে সমন বা পরোয়ানা ইস্যু করবেন।

সমন বা পরোয়ানার সাথে নালিশের একটি কপি সংযুক্ত করতে হবে।

২ টি ক্ষেত্রে এই ধারায় সমন বা পরোয়ানা ইস্যু করবেন না –

  • বাদীপক্ষের সাক্ষীদের তালিকা দাখিল না করা হলে।
  • পরোয়ানার ফিস প্রদানের বিধান থাকলে প্রদান করা না হলে।

 

পরোয়ানার ফিস প্রদানের বিধান থাকা স্বত্বেও প্রদান না করা হলে ম্যাজিস্ট্রেট নালিশ খারিজ করতে পারবেন।

 

ধারা ২০৫: ব্যক্তিগত হাজিরা হতে রেহাই।

আসামী আদালতে হাজির হয়ে সঙ্গত কারণে ব্যক্তিগত হাজিরা হতে অব্যাহতি চাইলে আদালত ব্যক্তিগত হাজিরা হতে অব্যাহতি দিতে পারেন। এইক্ষেত্রে আসামীর আইনজীবীকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিবেন।

[আসামীকে হাজিরা হতে অব্যাহতি দেওয়া আদালতে বিবেচনামূলক ক্ষমতা]

 

ধারা ২০৫গ: বিচারের জন্য দায়রা আদালতে মামলা প্রেরণ।

ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দায়েরকৃত মামলা শুধুমাত্র দায়রা আদালতে বিচার্য হলে তিনি –

(ক) মামলাটি দায়রা আদালতে প্রেরণ করেবেন।

(খ) জামিনের শর্তে বিচার কালে আসামীকে হেফাজতে প্রেরণ করবেন।

(গ) দলিলাদি ও জিনিসপত্র প্রেরণ করবেন।

(ঘ) PP কে নোটিশ দিবেন।

 

ধারা ২০৫গগ: জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (District Magistrate) ইত্যাদির কাছে মামলা প্রেরণ।

ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দায়েরকৃত মামলা CMM বা CJM আদালতে বিচার্য হলে তিনি –

(ক) মামলাটি CMM বা CJM আদালতে প্রেরণ করেবেন।

(খ) জামিনের শর্তে বিচার কালে আসামীকে হেফাজতে প্রেরণ করবেন।

(গ) দলিলাদি ও জিনিসপত্র প্রেরণ করবেন।

 

ধারা ২০৫ঘ: একই অপরাধে নালিশী মামলা ও পুলিশী তদন্ত চলতে থাকলে পদ্ধতি।

(১) একই অপরাধে নালিশী মামলা ও পুলিশী তদন্ত একত্রে চলতে থাকলে ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক অনুসন্ধান ও বিচার কার্য স্থগিত রেখে পুলিশ অফিসারের তদন্ত তলব করেবেন।

(২) পুলিশের ১৭৩ ধারায় প্রদত্ত রিপোর্ট ম্যাজিস্ট্রেট গ্রহণ করলে নালিশ ও পুলিশের উভয় মামলা একত্রিত করে পুলিশ রিপোর্টের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়েছে বলে গণ্য হবে।

(৩) পুলিশ রিপোর্টে ম্যাজিস্ট্রেট আমলে না নিলে নালিশের ভিত্তিতে স্থগিত রাখা মামলার   অনুসন্ধান ও বিচার কার্যে অগ্রসর হবেন।

 

অধ্যায় – ১৮ – বাতিল  – ধারা ২০৬ – ২২০

 

অধ্যায়  ১৯

অভিযোগের ধরণ  

ধারা ২২১ – ২৪০

 

ধারা ২২১: অভিযোগে অপরাধের বিবরণ থাকবে

(১) অপরাধের বিবরণ।

(২) অপরাধের নাম।

(৩) আইনে অপরাধেটির  নাম না থাকলে সংজ্ঞা।

(৪) আইনের ধারা।

(৫) অভিযোগে কি বুঝানো হয়েছে।

(৬) অভিযোগে ইংরেজি বা আদালতের ভাষায় লিখিত হবে।

(৭) পূর্ববর্তী দন্ড থাকলে তার ঘটনা, তারিখ ও স্থান উল্লেখ করতে হবে।

 

ধারা ২২২: সময়, স্থান  ব্যক্তি সম্পর্কে বিবরণ

(১) অপরাধের সময়, স্থান ও ব্যক্তি সম্পর্কে বিবরণ থাকবে।

(২) অপরাধজনক বিশ্বাস লংঘন বা অসৎভাবে অর্থ আত্মসাতের ক্ষেত্রে এক বছরের মধ্যে কৃত সকল অপরাধ একটি অপরাধ বলে গণ্য হবে।

 

ধারা ২২৭: আদালত অভিযোগ পরিবর্তন করতে পারবেন।

(১) রায় প্রকাশের পূর্বে যে কোনো পর্যায়ে আদালত অভিযোগ পরিবর্তন বা নতুন কিছু যুক্ত করতে পারবেন।

(২) প্রত্যেকটি পরিবর্তন বা সংযোজন আসামীকে পড়ে শুনাতে হবে।

 

ধারা ২৩৪: একই ধরণের ৩ টি অপরাধ  বছরের মধ্যে হলে একত্রে অভিযোগ গঠিত হবে।

 

ধারা ২৪০: একাধিক অপরাধের একটিতে দণ্ডিত হলে অবশিষ্টগুলি প্রত্যাহার

 

অধ্যায়  ২০

ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক মামলার বিচার

ধারা ২৪১ – ২৫০

 

ধারা ২৪১: মামলার কার্যবিধি।

মামলার বিচারের সময় ম্যাজিস্ট্রেটগণ নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করেবেন।

 

ধারা ২৪১ক: আসামিকে যখন অব্যাহতি (Discharge) দেওয়া হবে

চার্জ শুনানীতে আদালত মামলার নথি, পুলিশ রিপোর্ট, মেডিকেল রিপোর্ট (যদি থাকে), উভয় পক্ষের বক্তব্য বিবেচনার পর অভিযোগ ভিত্তিহীন মনে করলে আসামীকে অব্যাহতি (Discharge) দিবেন।

[ চার্জ শুনানীতে আদালত কর্তৃক বিবেচিত হবে না আসামী কর্তৃক দাখিলকৃত কাগজপত্র ]

[ অব্যাহতির বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ ব্যক্তির প্রতিকার রিভিশন ]

[ চার্জ গঠনের (Charge Frame) পূর্বে যে শুনানী হয় তাকে চার্জ শুনানী (Charge Hearing) বলে ]

 

ধারা ২৪২: অভিযোগ গঠন (Charge Frame).

২৪১ক ধারা মোতাবেক আদালত অব্যাহতি না দিলে অভিযোগ গঠন করবেন। আসামীকে পড়ে শুনাবেন এবং স্বীকার করে কিনা তাহা জিজ্ঞাসা করবেন।

[ অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ ব্যক্তির প্রতিকার রিভিশন ]

 

ধারা ২৪৩: চার্জ বা অভিযোগ স্বীকারের ভিত্তিতে দণ্ড

২৪২ ধারা মোতাবেক চার্জ গঠনের পর আসামী দোষ স্বীকার করলে এবং যথেষ্ট কারণ দর্শাতে না পারলে আদালত স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে দন্ড প্রদান করবেন।

[ দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ ব্যক্তির প্রতিকার আপীল ]

 

ধারা ২৪৪: অভিযোগ স্বীকার না করলে তখনকার পদ্ধতি

২৪৩ ধারা মোতাবেক আদালত আসামীকে দন্ড না দিলে শুনানীর তারিখ ধার্য করবেন। উক্ত তারিখে উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনবেন। ফরিয়াদি পক্ষ আগে বক্তব্য উপস্থাপন করবেন। অতঃপর আসামী পক্ষ বক্তব্য উপস্থাপন করবেন।

 

ধারা ২৪৫: খালাস বা দন্ড (Acquittal/ Sentence).

আসামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ না পেলে আদালত আসামীকে খালাস দিবেন। আর সাক্ষ্য প্রমাণ পেলে দন্ড দিবেন।

 

ধারা ২৪৭: ফরিয়াদি অনুপস্থিতি (Non-appearance of complainant).

নালিশি মামলায় সমন ইস্যুর পর শুনানীর তারিখে ফরিয়াদি অনুপস্থিত থাকলে আদালত আসামিকে খালাস দিবেন।

আদালত উপযুক্ত মনে করলে অন্য কোনো দিন পর্যন্ত শুনানী মূলতবী রাখতে পারবেন।

ফরিয়াদি সরকারী কর্মচারী হলে হাজির জতে অব্যাহতি দিতে পারেন।

 

ধারা ২৪৮: নালিশ প্রত্যাহার (Withdrawal of complaint). 

নালিশী মামলায় রায় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে ফরিয়াদি মামলা প্রত্যাহার করলে আদালত আসামীকে খালাস দিবেন।

 

ধারা ২৪৯: ফরিয়াদী না থাকলে বিচার বন্ধ করার ক্ষমতা

পুলিশি মামলায়/ GR মামলায়/ নালিশ (Complaint) ব্যতীত অন্য কোনো মামলায় CJM/ MM/ ১ম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট এর অনুমতি নিয়ে অন্য কোনো ম্যাজিস্ট্রেট (২য়/ ৩য়) মামলার কার্যক্রম বন্ধ রাখতে পারেন এবং আসামী হাজতে থাকলে তাকে মুক্তি (Release) দিবেন।

 

ধারা ২৫০: মিথ্যা, তুচ্ছ ও বিরক্তিকর অভিযোগ (False, Frivolous or Vexatious accusations)

মিথ্যা, তুচ্ছ ও বিরক্তিকর অভিযোগের ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট ফরিয়াদি বা সংবাদদাতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিবেন। সঙ্গত কারণ দর্শাতে না পারলে আসামীকে রেহাই বা খালাস দিবেন। অতঃপর আসামীদের প্রত্যেককে অনধিক ১০০০ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য ফরিয়াদি বা সংবাদদাতাকে নির্দেশ দিবেন।

ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় শ্রেণীর হলে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ হবে অনধিক ৫০০ টাকা।

ক্ষতিপূরণের প্রদানে ব্যর্থ হলে শাস্তি দিবেন অনধিক ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড বা ৩০০০ টাকা অর্থদন্ড।

 

অধ্যায় – ২১ – বাতিল  – ধারা ২৪১ – ২৫০

 

অধ্যায়  ২২

সংক্ষিপ্ত বিচার

ধারা ২৬০ – ২৬৫

            

ধারা ২৬০: সংক্ষিপ্ত বিচারের ক্ষমতা (Summary Trial).

সংক্ষিপ্ত বিচার করবেন –

(ক) MM

(খ) ১ম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট

(গ) ১ম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ।

 

নিম্নলিখিত অপরাধের বিচার সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে হবে –

  • ২ বছরের অধিক কারাদন্ড যোগ্য নহে এমন অপরাধ।
  • দন্ডবিধির ২৬৪, ২৬৫, ২৬৬ ধারায় ওজন ও বাটখারা সম্পর্কিত অপরাধ।
  • দন্ডবিধির ৩৭৯, ৩৮০, ৩৮১ চুরির ক্ষেত্রে বিষয়বস্তুর মূল্য অনধিক ১০০০০ টাকা।
  • দন্ডবিধির ৩২৩ ধারায় আঘাতের অপরাধ।
  • দন্ডবিধির ৪০৩ ধারায় অসাধুভাবে সম্পত্তি আত্মসাতের ক্ষেত্রে বিষয়বস্তুর মূল্য অনধিক ১০০০০ টাকা।
  • দন্ডবিধির ৪২৬ ও ৪২৭ ধারায় অনিষ্ট বা ক্ষতি (Mischief)
  • দন্ডবিধির ৪৪৭, ৪৪৮, ৪৫১, ৪৫৩, ৪৫৪, ৪৫৬ ও ৪৫৭ ধারায় অনধিকার প্রবেশ (Tresspass).
  • দন্ডবিধির ৫০৩ ও ৫০৬ ধারায় অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শনের অপরাধ।
  • দন্ডবিধির ৫০৯ ও ৫১০ ধারায় নারীর শ্লিলতাহানী ও প্রকাশ্যে মাতলামী।
  • দন্ডবিধির ৪১১ ও ৪১৪ ধারায় চোরাইমাল অপরাধ।

 

[ যে বিচার ব্যবস্থায় চার্জ গঠিত হয় না, সাক্ষীদের জবানবন্দী লিপিবদ্ধ করা হয় না এবং রায়ও লিপিবদ্ধ হয় না তাকে সংক্ষিপ্ত বিচার বলে ]

 

ধারা ২৬১: কম ক্ষমতাপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটের বেঞ্চের উপর ক্ষমতা অর্পণ।

সরকার ২য়/ ৩য় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের উপর সংক্ষিপ্ত বিচারের ক্ষমতা অর্পণ করতে পারবেন।

 

ধারা ২৬২: সংক্ষিপ্ত বিচারের পদ্ধতি।

সংক্ষিপ্ত বিচারের ক্ষেত্রে বিংশ অধ্যায়ের বিধান (ধারা ২৪১-২৫০) অনুসৃত হবে।

 

ধারা ২৬২(২): সংক্ষিপ্ত বিচারে ২ বছরের বেশি কারাদন্ড দেওয়া যাবে না।

 

ধারা ২৬৩: যে সকল মামলার আপীল নাই সেগুলোর নথি।

আপীল অযোগ্য মামলার সাক্ষীর সাক্ষ্য লিপিবদ্ধ করার বা আনুষ্ঠানিক চার্জ গঠন করার প্রয়োজন নাই। তবে ম্যাজিস্ট্রেট সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফরমে এই ধারায় উল্লেখিত তথ্য সমূহ লিপিবদ্ধ করে রাখবেন।

 

অধ্যায়  ২৩

দায়রা আদালতের বিচার পদ্ধতি

ধারা ২৬৫ক – ২৬৫ঠ

 

ধারা ২৬৫ক: দায়রা আদালতে সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা করবেন পাবলিক প্রসিকিউটর (PP).

ধারা ২৬৫খ: দায়রা আদালতে বক্তব্য শুরু করবেন PP.

ধারা ২৬৫গ: প্রাথমিক শুনানীর পর মামলা ভিত্তিহীন হলে আসামীর অব্যাহতি।

ধারা ২৬৫ঘ: অভিযোগ গঠন (Charge Frame).

ধারা ২৬৫ঙ: আসামী অভিযোগ স্বীকার করেল দণ্ড।

ধারা ২৬৫ছ: বাদীপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ।

ধারা ২৬৫জ: খালাস।

ধারা ২৬৫ঝ: আসামীপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ।

ধারা ২৬৫ঞ: যুক্তিতর্ক

ধারা ২৬৫ট: দণ্ড বা খালাস

 

অধ্যায়  ২৪

অনুসন্ধান ও বিচারের সাধারণ বিধানসমূহ

ধারা ৩৩৭ – ৩৫২

ধারা ৩৩৭: দুষ্কর্মের  সহযোগিকে ক্ষমা প্রদর্শন

দায়রা আদালতে বিচার্য মামলার ক্ষেত্রে দন্ডবিধির ২১১, ২১৬ক, ৩৬৯, ৪০১, ৪৩৫ ও ৪৭৭ক ধারার অপরাধের ক্ষেত্রে মাম্লাটি তদন্ত বা অনুসন্ধানের বা বিচারের পর্যায়ে MM বা ১ম শ্রেণীর যেকোনো ম্যাজিস্ট্রেট আসামীদের কোনো একজনকে অপরাধের যাবতীয় তথ্য স্বীকারের শর্তে ক্ষমার প্রস্তাব দিতে পারেন।

 

ধারা ৩৩৮: ক্ষমা প্রদর্শনের নির্দেশ দিবার ক্ষমতা।

দায়রা আদালত নিজে ক্ষমার প্রস্তাব দিতে পারেন কিংবা ক্ষমার প্রস্তাব দিবার জন্য CMM বা CJM কে নির্দেশ দিতে পারেন।

 

ধারা ৩৩৯: যাহাকে ক্ষমা প্রদর্শন করা হয়েছে তাহার বিচার।

ক্ষমার প্রস্তাব গ্রহণকারী শর্ত পালন করেছে কিনা তাহা প্রত্যয়ন করবেন PP.

 

ধারা ৩৩৯বি: আসামীর অনুপস্থিতিতে বিচার

৮৭, ৮৮ ধারা মোতাবেক সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর আসামী অনুপস্থিত থাকলে বিচারিক আদালত বহুল প্রচারিত ২ টি বাংলা দৈনিক পত্রিকায় আসামীকের হাজির হওয়ার সময় দিয়া বিজ্ঞপ্তি দিবেন। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে আসামী হাজির না হলে আদালত তাহার অনিপস্থিতিতে বিচার করতে পারবেন।

তবে কোনো আসামী আদালতে হাজির হলে কিংবা জামিনে মুক্তি পেয়ে পলাতক হলে উক্ত বিধান প্রযোজ্য না।

 

ধারা ৩৩৯সি: মামলা নিষ্পত্তির সময়।

(১) ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মামলা পাওয়ার তারিখ হতে ১৮০ কর্মদিবসের মধ্যে অবশ্যই মামলাটি নিষ্পত্তি করবেন।

(২) দায়রা আদালত মামলা পাওয়ার তারিখ হতে ৩৬০ কর্মদিবসের মধ্যে অবশ্যই মামলাটি নিষ্পত্তি করবেন।

 

ধারা ৩৪০: আসামীর আত্মপক্ষ সমর্থন  সাক্ষী হবার যোগ্যতা

(১) আসামীর Advocate এর মাধ্যমে আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার থাকবে।

(২) আসামী সাক্ষী হবার প্রস্তাব দিতে পারবে।

 

ধারা ৩৪২: আসামীর জবানবন্দী গ্রহণ

আদালত আসামীকে যেকোনো প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারবেন।

আসামী উত্তর দিতে অস্বীকার করলে কিংবা মিথ্যা  উত্তর দিলে এর জন্য দন্ডিত হবে না।

আসামীকে শপথ করানো যাবেনা।

 

ধারা ৩৪৪: মামলা স্থগিত বা মূলতবী রাখার ক্ষমতা (Time Petition).

সাক্ষী অনুপস্থিত বা অন্য কোনো কারণে আদালত সঙ্গত মনে করলে সময় সময় মামলা মূলতবী রাখতে পারবেন।

আসামী হাজতে থাকলে পরোয়ানা দ্বারা তাহাকে হাজতে রাখার আদেশ দিতে পারবেন। তবে ১৫ দিনের অধিক সময় পরোয়ানা দ্বারা হাজতে রাখার আদেশ দিতে পারবেন না।

 

ধারা ৩৪৫: অপরাধের আপোষ নিস্পত্তি (Compounding Offences).

অপরাধের আপোষ নিস্পত্তির ক্ষেত্রে সম্মতি লাগবে ভিকটিমের আর অনুমতি লাগবে আদালতের।

 

দন্ডবিধির যেসকল ধারার অপরাধসমূহ আপোষযোগ্য/মীমাংসাযোগ্য তার একটি তালিকা এই ধারায় দেওয়া হয়েছে। এখানে দন্ডবিধির ৬৮ টি ধারা উল্লেখ আছে।

 

[অপরাধের আপোষ নিষ্পত্তি হলে আসামী খালাস পাবে]

 

ধারা ৩৫১: আদালতে হাজির ব্যক্তিকে আটক রাখা।

আদালতে হাজির যেকোনো ব্যক্তিকে আদালত আটক রাখতে পারবেন।

 

ধারা ৩৫২: আদালতে উম্মুক্ত থাকবে।

আদালতে সবসময় উম্মুক্ত থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত স্থান সংকুলান হয়। তবে আদালত নিরাপত্তার স্বার্থে জনসাধারণের প্রবেশে বিধি নিষেধ আরোপ করতে পারবেন।

 

অধ্যায়  ২৫

অনুসন্ধান ও বিচারের সময় সাক্ষ্য গ্রহণ ও লিপিবদ্ধ করার পদ্ধতি  

ধারা ৩৫৩ – ৩৬৫

 

ধারা ৩৫৩: আসামীর অথবা আইনজীবীর উপস্থিতিতে সাক্ষ্য গ্রহণ করতে হবে

 

ধারা ৩৬৪: আসামীর জবানবন্দী লিপিবদ্ধ করার পদ্ধতি

(১) হাইকোর্ট বিভাগ ছাড়া অন্য কোনো আদালত আসামীর জবানবন্দী গ্রহণ করলে প্রত্যকেটি প্রশ্ন ও জবাব আদালতের ভাষায় বা ইংরেজি ভাষায় লিপিবদ্ধ করবেন, তাকে দেখাবেন বা পড়ে শুনাবেন বা বুঝিয়ে দিবেন।

(২) আসামীর জবানবন্দী স্বীকার করলে আদালত স্বাক্ষর করবেন এবং তার উপস্থিতিতে হয়েছে মর্মে প্রত্যয়ন করবেন।

(৩) আদালত আসামীর জবানবন্দী নিজ হস্তে লিপিবদ্ধ না করলে নিজ হস্তে লিখিত ও স্বাক্ষরিত একটি স্মারক প্রস্তুত করতে বাধ্য থাকবেন।

(৪) এই ধারার কোনো কিছু ২৬৩ ধারায় আপীল অযোগ্য মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।

 

অধ্যায়  ২৬

রায়   

ধারা ৩৬৬ – ৩৭৩

 

ধারা ৩৬৬: রায় ঘোষণার পদ্ধতি।

আদালতের প্রত্যেকটি বিচারের রায় ঘোষণা করতে হবে –

  • প্রকাশ্য আদালতে।
  • বিচার সমাপ্তহবার দিন বা পরবর্তী কোনো দিন।
  • আসামীর উপস্থিতিতে।

 

ধারা ৩৬৭: রায়ের ভাষা, রায়ের বিষয়বস্তু।

  • প্রিজাইডিং অফিসার নিজ হাতে আদালতের ভাষায় বা ইংরেজি ভাষায় রায় লিপিবদ্ধ করবেন।
  • প্রিজাইডিং অফিসার উক্ত রায় ঘোষণার সময় প্রকাশ্য আদালতে ইহাতে তারিখ দিবেন ও স্বাক্ষর করেবেন।
  • প্রিজাইডিং অফিসারনিজ হাতে রায় লিপিবদ্ধ না করলে প্রত্যেক পৃষ্ঠায় স্বাক্ষর করবেন।

 

ধারা ৩৬৮: মৃত্যু দন্ডাদেশ।

রায়ে আসামীকে মৃত্যু দন্ডাদেশ দেওয়া হলে অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে, “মৃত্যু না হোয়া পর্যন্ত আসামীকে গলায় ফাসি দিয়া ঝুলাইয়া রাখিতে হইবে”।

 

ধারা ৩৬৯: আদালত রায় পরিবর্তন করবেন না।

আদালত রায়ে স্বাক্ষর করার পর করণিক ভুল ব্যতীত রায় সংশোধন বা পুনর্বিবেচনা করবেন না।

 

ধারা ৩৭১: দায়রা আদালতে রায়ের কপির জন্য আসামী আবেদন করলে তা অবিলম্বে বিনামূল্যে দিতে হবে।

[ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে রায়ের কপি মূল্যের বিনিময়ে পাওয়া যায়।

 

ধারা ৩৭৩: দায়রা আদালত সিদ্ধান্ত বা দন্ডাদেশের নকল জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের (District Magistrate) কাছে প্রেরণ করবেন।

দায়রা আদালত সিদ্ধান্ত বা দন্ডাদেশের নকল সংশ্লিষ্ট CMM বা CJM এবং DM এর কাছে প্রেরণ করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *