বাড়িওয়ালা অতিরিক্ত টাকা এডভান্স নিলেই দ্বিগুন জরিমানা

Spread the love

বাড়িওয়ালা ভাড়াটিয়ার নিকট থেকে এক মাসের ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা এডভান্স বা সালামী বা জামানত নিলে বর্তমানে প্রচলিত আইনে শাস্তির বিধান রয়েছে।

 

এডভান্স বা সালামী বা জামানত নেওয়ার বিধান-

বাড়ির মালিক যদি বাড়িটি নির্মাণ, অথবা পূনঃ নির্মাণের দ্বারা উন্নয়নের উদ্দেশ্যে কোন বাড়ি কমপক্ষে বিশ বৎসর সময়ের জন্য ভাড়া দেন এবং নির্মাণ কাজ শুরু হবার তারিখ হতে দশ বৎসরের মধ্যে বাড়ির মালিক যদি ভাড়ার চুক্তি অক্ষুণ্ণ রাখতে রাজী হন, তাহলে তিনি ভাড়াটিয়া হতে সেলামী, জামানত বা প্রিমিয়াম হিসাবে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করতে পারবেন।

 

উপরোক্ত কারণ ছাড়া বাড়ির মালিক কোনক্রমেই অগ্রিম হিসাবে এক মাসের ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা দাবী করতে পারবেন না।

[বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯১ এর ১০ ধারা]

 

অর্থাৎ এ আইনে সুষ্পষ্টভাবেই ভাড়াটিয়া থেকে সালামী, প্রিমিয়াম, জামানত ও অনুরূপ কোন টাকা গ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে 31 DLR 13 (Ad) এ Shamsuddin Versus Hossain মামলাটিতে বলা হয়েছে, চুক্তি আইনের ২৩ ধারা মোতাবেক বাড়ী ভাড়া অগ্রিম প্রদানের চুক্তি করা যায় না।

 

এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতের কিছু সিদ্ধান্ত নিম্নরূপঃ

 

In view of the unenforceability of the agreement the position is that the appellant is a monthly tenant who is liable to ejectment if he makes default in payment of rent as provided in section 18(5) of the premises Rent Control Ordinance. [Shamsuddin Ahmed Vs. Mohd. Hassan. (1979) 31 DLR (AD) 155].

 

Section 10 merely prohibits the premium, salami, etc. and acceptance of rent exceeding one month’s rent in advance without written consent of the Controller. [(Maherunnessa Khatun Vs. Abdul Latif 38 DLR (AD) 196].

 

The Finding of the trial Court that unless and until the advance money is exhausted the tenant cannot be evicted is not legal as the receipt of advance payment in case of tenancy for less than twenty years is pro-hibited by law for which the tenant is liable to be evicted. [Abdul Awal & ors vs Jebon Nahar (Civil) 3 BLC 517].

 

তবে ক্ষেত্র বিশেষে ঘরভাড়া নিয়ন্ত্রক যদি অনুমতি দেন, তাহলে অগ্রিম হিসাবে এক মাসের অতিরিক্ত টাকা ভাড়াটিয়া হতে গ্রহণ করা যাবে।

 

ঘরভাড়া নিয়ন্ত্রকের অনুমতি ব্যতিরেকে যদি কোন বাড়ীওয়ালা ভাড়াটিয়া থেকে এইরূপ অগ্রিম বা জামানত গ্রহণ করেন তাহলে তা সম্পূর্ণ অবৈধ।

 

এরূপ জামানত গ্রহণ করে কোন চুক্তি করলে সে চুক্তিও অবৈধ ও অকার্যকরী হবে। অর্থাৎ আইনের পরিপন্থী কোন চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়া যাবে না। করলে তা হবে অবৈধ।

 

কোন বাড়ীওয়ালা যদি এইরূপ অবৈধ অর্থ-ভাড়াটিয়া থেকে আদায় করেন, তাহলে ভাড়াটিয়া ৬ মাসের মধ্যে বাড়ীওয়ালার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে ঐ অর্থ ফেরৎ পেতে পারেন।

 

শাস্তির বিধান-

বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রন আইনের ২৩ ধারা মোতাবেক বাড়ীওয়ালা যদি ভাড়াটিয়া থেকে এক মাসের ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা এডভান্স বা সালামী বা জামানত হিসাবে আদায় করে তাহলে এক মাসের ভাড়ার অতিরিক্ত যে পরিমাণ টাকা নিবেন উহার দ্বিগুণ টাকা জরিমানা হবে। দ্বিতীয় বার একই অপরাধ করলে তিনগুণ জরিমানা হতে পারে।       [২৩ ধারা]

 

মামলা করার তামাদি মেয়াদ বা সময়-

বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রন আইনের ২৯ ধারা মোতাবেক “ভাড়া চুক্তি” সম্পাদনের ৬ মাসের মধ্যে মামলা করতে হবে।

 

আমাদের দেশে বাড়ি বা দোকান ভাড়ার ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রায় ক্ষেত্রেই বাড়ীওয়ালারা সালামী বা এডভান্স হিসাবে মোটা অংকের টাকা ভাড়াটিয়া থেকে আদায় করে নেন। এবং চুক্তিপত্রে তা লিখা থাকে। এইরূপ চুক্তিপত্র আইন বিরুদ্ধ বিধায় অবৈধ বলে গণ্য হবে এবং আদালতে তা সাক্ষ্য হিসাবে গৃহীত হবে না। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আজকাল প্রায় ভাড়া চুক্তিনামায় দেখা যায়, বাড়ীওয়ালারা ভাড়াটিয়া থেকে মোটা অংকের অর্থ অগ্রিম বা জামানত বা সালামী হিসাবে গ্রহন করেছেন এবং তা চুক্তিনামায় লিপিবদ্ধ করেছেন। কিন্তু বাড়ি ভাড়ায় অগ্রিম প্রদানের কোন চুক্তি, চুক্তি আইনের ২৩ ধারা মতে বারিত। এছাড়া এক মাসের ভাড়ার অধিক অর্থ অগ্রিম হিসাবে গ্রহণ করা বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রন আইনের ১০ ধারা অনুযায়ী নিষিদ্ধ। বাড়ি, দোকান, অফিস, গুদাম বা অন্য যে কোন গৃহ ভাড়া দেয়ার সময় বা নবায়ন করার সময় কোনরূপ অগ্রিম সালামী বা জামানত গ্রহন করা আইন বিরুদ্ধ।

 

সংশ্লিষ্ট আইন-

চুক্তি আইনের ২৩ ধারা,

বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রন আইনের ১০ ধারা।

 

এই ধরণের কোন সমস্যায় পড়লে কিংবা আইনগত যেকোন জটিলতায় আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

 

যোগাযোগ

 

আইনবিদ লিগ্যাল সলিউশন

ল্যান্ড প্রপার্টি সলিউশন সার্ভিস

সার্বিক পরিচালনায়- এডভোকেট মুহাম্মদ মহীউদ্দীন (শিশির)

ল্যান্ড এন্ড ট্যাক্স কনসালট্যান্ট

১৬, কৈলাশঘোষ লেন, ঢাকা জজ কোর্ট, কোতোয়ালী, ঢাকা।

অথবা

রোড-৫, ব্লক-এ, বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা

ফোন- 01711068609 / 01540105088

ওয়েবসাইট- www.ainbid.com

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *