টাকা আদায়ের মোকদ্দমায় বিবাদীপক্ষের লিখিত জবাব।

টাকা আদায়ের মোকদ্দমা বা মানি মোকদ্দমায় বিবাদীপক্ষের লিখিত জবাব।

 

বিজ্ঞ ৬ষ্ঠ সহকারী জজ আদালত, ঢাকা।

মানি  মোকদ্দমা নং ১২১/২০২৪

 

মোঃ আওলাদ হোসেন

পিতা-মৃত হাজী মোঃ সুলতান

——————–বাদী।

 

-বনাম-

 

মোঃ কামরুজ্জামান

পিতা- ডাঃ ছমির উদ্দিন আহমেদ

———————বিবাদী।

 

বিবাদী পক্ষে লিখিত জবাব

 

বিবাদীর বিনীত নিবেদন এই যে,

 

১। বাদীর অত্র মোকদ্দমাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা বর্ণনায়, উদ্দেশ্যপ্রনোদিত ও বিভ্রান্তিমূলকভাবে দায়েরকৃত তাই উক্ত মোকদ্দমাটি খারিজ হইবে।

 

২। বাদীপক্ষে অত্র মোকদ্দমা দায়ের করার আদৌ কোন কারণ উদ্ভব হয় নাই তাই কারণাভাবে অত্র মোকদ্দমাটি খারিজ হইবে।

 

৩। বাদীর মোকদ্দমাটি অত্র আকারে ও প্রকারে রক্ষনীয় নহে এবং তাহাতে কোন প্রতিকার পাইতে পারে না বিধায় তাহা খারিজ ও নামঞ্জুর হইবে।

 

৪। বাদীর মোকদ্দমাটি তামাদি আইনে বারত বিধায় তামাদি দোষে খারিজ ও নামঞ্জুর হইবে।

 

৫। বাদীর আরজির যে সকল বর্ণনা বা বিষয় অত্র বিবাদী সরাসরি স্বীকার করিবে তাহা ভিন্ন অন্য সকল বিষয় সরাসরি অস্বীকার করিয়াছেন বলিয়া গন্য হইবে।

 

৬। বাদীর আরজির ১নং প্যারার বক্তব্য তাহার দ্বারা কথিত মতে এবং অসত্য বটে। অত্র বাদীর সহিত বিগত ১০/০৬/২০০৮ইং এবং তৎপর ১৭/৭/২০০৮ইং তারিখে অত্র বিবাদীর কোনরূপ চুক্তিপত্র সাক্ষর হয় নাই।

 

৭। বাদীর আরজির ২(ক) নং প্যারার বক্তব্য “বিবাদীর বিশেষ প্রয়োজনে চুক্তিপত্রের মাধ্যমে ২ লক্ষ টাকা বাদী ঋণ হিসেবে দিতে রাজী হয়। এবং চুক্তিপত্রের শর্তে বিগত ১০/৬/২০০৮ইং তারিখে ২ লক্ষ টাকা বাদীর নিকট হইতে একযোগে গ্রহণ করিলাম। কিন্তু এই তারিখের পূর্বেই বিবাদীর টাকার প্রয়োজন হইলে তিনি বাদীকে অনুরোধ করিয়া বিগত ৫/৬/২০০৮ইং তারিখে ১ লক্ষ টাকা গ্রহণ করিয়া চুক্তিপত্রের ১০/৬/২০০৮ইং তারিখ নিজ হস্তে কর্তন করিয়া ৫/৬/২০০৮ইং তারিখ ১ লক্ষ টাকা মোট ২ লক্ষ টাকা গ্রহণ করিয়া নিজ হাতে উহা লিখে নেন।” ইত্যাদি বক্তব্যসমূহ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানানো ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত বটে।

 

৮। বাদীর আরজির ২(খ) ও (গ) নং প্যারার বক্তব্যও একইভাবে মিথ্যা, বানোয়াট ও যোগসাজসী বটে। ইহা সত্য নয় যে, স্বাক্ষীগণের মোকাবিলায় বিবাদী নগদে বাদী হইতে টাকা ধার গ্রহণ করেন এবং বিবাদী নিজ হাতে চুক্তিপত্র কর্তন করিয়া তাহা সংশোধন করেন। ইহাও অসত্য যে, বিবাদী উক্তরূপ টাকা পরবর্তী ১ মাসের মধ্যে পরিশোধের অংগীকার করেন এবং প্রতি মাসের লভ্যাংশ ৫০০০/- টাকা করিয়া পরিশোধ করিবেন।

 

৯। বাদীর আরজির (২) নং প্যারার বক্তব্যও বাদীর দ্বারা সৃজনকৃত, অসত্য ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত বিধায় অত্র বিবাদী এসকল বক্তব্য সম্পূর্ণরূপে ও সরাসরি অস্বীকার করেন বটে। ১০। বাদীর আরজির ৩নং প্যারায় বর্ণিত আইনগত নোটিশ এবং সি.আর- ২৩৮৯/০৯ নং মোকদ্দমার বিষয় রেকর্ডীয় তাই বাদী তাহার বর্ণনা ও সত্যতা প্রমাণ করিবেন।

 

১০। বাদীর আরজির ৩নং প্যারায় বর্ণিত আইনগত নোটিশ এবং সি.আর ২৩৮৯/০৯ নং মোকদ্দমার বিষয় রেকর্ডীয় তাই বাদী তাহার বর্ণনা ও সত্যতা প্রমাণ করিবেন।

 

১১। বাদীর আরজির ৪ ও ৫ নং প্যারায় বক্তব্যসমূহ ও তাহার কথিত মতে বর্ণিত ও সাজানো বটে যাহা বাদী নিজে প্রমাণ করিবেন।

 

১২। বাদীর আরজির অন্যান্য বক্তব্যসমূহ তিনি নিজে প্রমাণ করিবেন বিধায় অত্র বিবাদী সে সকল বক্তব্য অস্বীকার করেন বটে।

 

প্রকৃত ঘটনা

 

ক) অত্র বিবাদী একজন শিক্ষিত, আইনমান্যকারী, স্বচল ব্যক্তি ও বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক বটে। তিনি বানীর ব্যক্তিগত দূরসম্পর্কের পরিচিত হওয়ায় ব্যক্তিগত আক্রোমের বশবর্তী হইয়া অত্র মোকদ্দমা দায়ের করিয়াছেন বটে।

 

খ) বাদী ব্যক্তিগত আক্রোশের বশবর্তী হইয়া হঠাৎ করিয়া অত্র বিবাদীর নিকট টাকা পাওনা আছেন বলিয়া দাবী উত্তোলন করিয়া ঢাকার মূখ্য মহানগর আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির বিধান মোতাবেক সি.আর- ২৩৮৯-০৯ নং মোকদ্দমা দায়ের করেন।

 

গ) অত্র বিবাদী উক্ত সি. আর মোকদ্দমার নোটিশ প্রাপ্ত আশ্চর্য হইয়া পড়েন এবং বিজ্ঞ আদালতে হাজির হইয়া বাদীর দাবীকৃত তর্কিত বিগত ১৭/০৭/২০০৮ইং তারিখের ঋণপত্রের কথা জানিতে পারেন।

 

ঘ) পরবর্তীতে বিবাদী উক্ত সি.আর মোকদ্দমায় আইনজীবি নিয়োগপূর্বক প্রতিদ্বন্ধিতা করিলে বিজ্ঞ আদালত স্বাক্ষী-জেরা এবং দু-তরফা শুনানী অন্তে বিগত ২৩/৬/২০১০ইং তারিখে তাহা অত্র বাদীল বিরুদ্ধে ও বিবাদীর পক্ষে খারিজ ও নামঞ্জুর করেন।

 

ঙ) পরবর্তীতে অত্র বাদী বিগত ২৩/৬/২০১০ইং তারিখের সিআর মোকদ্দমার রায় দ্বারা সংক্ষুদ্ধ হইয়া ঢাকা অতিরিক্ত মহানগর দায়রা ১ম জজ আদালতে ফৌজদারী রিভিশন- ৬০৩/২০১০নং মোকদ্দমা দায়ের করেন। যাহাতে অত্র বিবাদী প্রতিদ্বন্ধিতা করিলে বিগত ৮/৮/২০১১ইং তারিখে দুতরফা শুনানী অন্তে অত্র বাদীর বিরুদ্ধে খারিজ ও নামঞ্জুর করেন।

 

চ) অত্র বাদী প্রথমে সি.আর ও পরবর্তীতে রিভিশন মোকদ্দমায় জয়লাভ করিতে না পারিয়া বিবাদীকে চূড়ান্তভাবে হয়রানী করিবার মানসে অত্র মোকদ্দমা দায়ের করিয়াছেন।

 

ছ) অত্র বিবাদী কখনোই বাদীর নিকট হইতে নগদ টাকা ধার করেন নাই এবং কথিত চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন নাই কিংবা সংশোধন করেন নাই। বাদী কর্তৃক প্রকাশের পূর্বে অত্র বিবাদীর উক্ত চুক্তিপত্রের বিষয়ে কোন জ্ঞান ছিল না।

 

জ) যেহেতু অত্র বাদী মিথ্যা চুক্তিপত্র সৃজন করিয়া তাহাতে বিবাদীর স্বাক্ষর আছে বলিয়া মিথ্যা বর্ণনায় অত্র মোকদ্দমা দায়ের করিয়াছেন তাই অত্র মোকদ্দমাটি সরাসরি খারিজ ও নামঞ্জুর হইবে।

 

ঝ) যেহেতু শুধুমাত্র হয়রানীর মানসে বাদী অত্র মোকদ্দমা দায়ের করিয়াছেন এবং জাল চুক্তিপত্র সৃজন করিয়াছেন তাই অত্র মোকদ্দমা খারিজ ও না-মঞ্জুর হইবে।

 

অতএব ন্যায়বিচারের স্বার্থে অত্র লিখিত জবাব গ্রহণ করত  বাদীর মোকদ্দমাটি খারিজ করিতে বিজ্ঞ আদালতের মর্জি হয়।

 

সত্যপাঠ

 

অত্র লিখিত জবাবের বক্তব্যসমূহ আমার জানামাতে সত্য ও  সঠিক এবং আমি তাহা পড়িয়া নিযুক্তির আইনজীবি সাহেবের  সম্মুখে নিম্নে সহি- স্বাক্ষর করিলাম।

 

 

————————-

সত্যপাঠকারীর স্বাক্ষর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *